অনুসন্ধানী প্রতিবেদন———-

* দখল করতে যাচ্ছে এলএ শাখার প্রকল্পের কাজ

* বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে করা হচ্ছে নানা অপকর্ম

* দুদক পালন করছে নিরবতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: লুৎফুজ্জামান (ছদ্মনাম) নামের এক ব্যক্তি ইকবাল হায়দার চৌধুরী সম্পর্কে বলেছেন, ইকবাল চট্টগ্রাম এলএ শাখার দালাল, চাঁদাবাজ, মামলাবাজ, নির্যাতনকারী, প্রতারক, রং বদলাতে পারদর্শী ও দূর্ত প্রকৃতির লোক হন। অনেকে তাকে এই ভাবে চিনে ও জানে। এসব অপরাধ ও বদনাম ঢাকতে তিনি এখন দরবেশ সাঁজার চেষ্টা করছেন। দৌঁড়ে আছেন বিএনপির নেতা হওয়ার।

বিগত ১৭ বছর ছিলেন স্বৈরাচারী আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকারের কূলে,কাজ করেছেন দোসর হয়ে,পরিচয় দিতেন আওয়ামী লীগের সহযোগি হিসেবে। আদায় করেছেন বেসুমার নানা সুযোগ সুবিধা। চট্রগ্রাম এলএ শাখায় আধিপত্য বিস্তার করে ব্যাপক চাঁদাবাজি করেছেন। এখনও করছেন। বশে না আসলে অনেককে দিয়েছেন মিথ্যা ধর্ষণ মামলা। ছেড়ে দিয়েছেন নিঃস্ব করে। আছে জাল দলিল জাল খতিয়ান তৈরীর অভিযোগও। জাল স্ট্যাম্প ও বিক্রিতে জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখতে বলেছেন ভুক্তভোগিরা। ইকবাল গেল স্বৈরাচারী সরকার আমলে ছিলেন বেপরোয়া। করেছেন ধরাকে সরাজ্ঞান। সেল্টার পেয়ে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন ও সুবিধা আদায় করে অবিশ্বাস্য ভাবে বনে গেছেন কাড়ি কাড়ি টাকা আর গাড়ি বাড়ি সহায় সম্পদের মালিক। চড়েন দামী গাড়িতে। যা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগিরা।

সুত্র জানান, ইকবাল বিএনপির নাম ভাঙিয়ে নানা জনকে দিয়ে যাচ্ছেন মিথ্যা মামলা হুমকি ধমকিও। তাকে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে দেখা যায়নি কখনও। নগরীতে দলীয় অফিস দোস্ত বিল্ডিংয়ের সামনে ছাত্রদলের মিছিলে হামলার অভিযোগে হয়েছেন বহিস্কার। ধুর্ত প্রকৃতির এই ইকবাল এক সময় ছাত্র লীগের রাজনীতি করতেন। তার প্রতিবেশী ছাত্রলীগ নেতা ওসমান গনি রাসেলের সাথে দন্ধ’র জেরে হুট করে ঢুকে পড়েন বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে। তখন সখ্য গড়ে তুলতে সক্ষম হন আনোয়ারা- কর্ণফুলীর সাবেক এমপি সরওয়ার জামাল নিজামের সাথে। পরে বুড়ো বয়সে আনোয়ারা উপজেলা ছাত্র দলের একাংশের সাধারণ সম্পাদক হন। এখন সেজেছেন ভাল মানুষের আড়ালে দরবেশ হিসেবে। স্বপ্ন দেখছেন দলের পদ নিয়ে এলাকায় চেয়ারম্যান হওয়ার। যৌথ বাহিনী, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন দুর্নীতির এই বরপুত্রকে আটকানোর মতো কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছেনা। পালন করছেন রহস্যজনক নিরবতা। ফলে নির্যাতিত অনেককে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেছেন,এলএ শাখায় দালাল ও দুর্নীতি পরায়ন ব্যক্তিদের উপর নজর রাখা হচ্ছে।

সুত্র জানায়, ইকবালকে দেখা যাচ্ছে চট্টগ্রাম এলএ শাখায় আসা যাওয়া করতে। একই সাথে রাজনীতির মাঠেও দেখা যাচ্ছে তাকে। সামাজিক অনুষ্ঠানের আড়ালে নানাজনের সাথে বৈঠকও করছে। সম্প্রতি দেখা গেছে, এলএ শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা এমএইচএম আলী আজম এর সাথে একান্ত বৈঠকে। বর্তমানে এই আওয়ামী কর্মকতা জেলা প্রশাসনের অন্য একটি শাখায় বদলি হলেও তাকে এলএ শাখায় প্রায় সময় দেখা যায়। এই ইকবালের সাথে বৈঠক নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা আলোচনা সমালোচনাও। দেখা দিয়েছে তোলপাড়ও। খোদ এলএ শাখায় নানাজনকে নানা মন্তব্য করতে দেখা গেছে। আওয়ামী শাসনের পুরো সময়ে এলএ শাখায় সেল্টার ও সমর্থন যুগিয়েছেন এই আলী আজম। তার বাড়ি আনোয়ারার ষোলকাঠা গ্রামে। ফলে তাকে আর পেছনে থাকাতে হয়নি চালিয়ে গেছেন নানা অপকর্ম আর চাঁদাবাজি। দুর্ধর্ষ প্রকৃতির এই চাঁদাবাজকে কেন গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছেনা তা নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপও চেয়েছেন ভুক্তভোগি অনেকে।

সুত্র জনান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে কতিপয় নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতে সক্ষম হন সুযোগ সন্ধানী এই ইকবাল। শুরু করা হয় নানা অপকর্ম এবং এলএ শাখার দখল নিয়ে চাঁদাবাজি। তিনি এসব করেই দ্রুত বনে যান কোটি কোটি টাকা গাড়ি বাড়ি সহায় সম্পদের মালিক। দখল করেন আদালতে জেলা প্রশাসনের জায়গা,গড়ে তুলেন দ্বিতল ভবন। কাফকোর সাবেক সিবিএ নেতা যুবলীগ ক্যাডার ওসমান গনি রাসেল সাবেক ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এর একান্ত সহকারী আলোচিত দুর্নীতিবাজ রিদোওয়ানুল হক চৌধুরী সায়েম ও স্থানীয় বৈরাগ ইউপির দুই সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ সোলেমান ও নোয়াব আলীর সার্টিফিকেট নিয়ে এলএ শাখায় আধিপত্য বিস্তার করে শুরু করেন চাঁদাবাজি। তার ইশারায় চলতো এলএ শাখার সার্ভেয়ার কর্মকর্তা কর্মচারীরা। অন্যতায় ক্ষতিপুরনের ফাইল নড়াচড়া করতো না। ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন থেকে এই ইকবাল ক্ষেত্র বিশেষে আদায় করতেন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত চাঁদা। আর যাদের বশে আনা সম্ভব হতো না তাদেরকে দেয়া হতো মিচ মামলাসহ নানা মিথ্যা ও ধর্ষণ চেষ্টার মতো মামলা। তার মামলার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ অনেকে এখনও এলএ শাখায় ঘুরাঘুরি করছেন। নিঃস্ব হয়ে কান্না করছেন,অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন অনেকে। আওয়ামী সরকারের পতন হলে ইকবাল দ্রুত রং পাল্টিয়ে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে সুবিধা নিতে চেষ্টা করছে। প্রভাব খাটিয়ে প্রতিপক্ষের নামে দেয়া হচ্ছে মিথ্যা মামলা ও করা হচ্ছে নানাভাবে হয়রানী। জমি বাড়ি পুকুর দখলে নিতে নানাজনকে হুমকি ধমকি দেয়া হচ্ছে। এনিয়ে তার বিরুদ্ধে ২০২০সনের ২৯ডিসেম্বর অনলাইন নিউজ পোর্টাল সি ভয়েস-২৪, ২০২২সালের ১এপ্রিল ইনডিপেন্ডডেন্ট টেলিভিশনের তালাশ টিম অনুষ্ঠানে, দি ক্রাইমের অনলাইন ভার্সনে, দৈনিক সাঙ্গু ও দৈনিক পুর্বদেশসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।

২০২২সালের ২৬অক্টোবর নগরীর কাজীর দেউরী এলাকা থেকে কোতোয়ালী থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন এই ইকবাল।

২০১১সালের ৮জুলাই সংঘটিত ঘটনায় দায়েরকৃত অস্ত্র ও হত্যা চেষ্টার মামলায় জেলহাজতে যেতে হয় তাকে। এই দু’মামলার বাদী হন বৈরাগ ইউপির সাবেক চেয়ারমান নোয়াব আলী ও হাসানুজ্জান চৌধুরী। পুলিশ এ মামলায় ইকবালের পিতা মোজাফর আহমদ চৌধুরী, চাচা সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আবুল মনসুর চৌধুরী,মুন্সি আবুল কালাম আজাদ, বড় ভাই আলমগীর হায়দার, ছোট ভাই তামিম হায়দার, চাচাত ভাই সিহাব আজাদ, জেবল হোসেন, মোঃ আজিজ ও লুৎফর রহমানকে একটি মাইক্রোসহ গ্রেফতার করা হয়। তখন এই ঘটনায় ইকবাল গণপিটুনিরও শিকার হয়।

শুনা যাচ্ছে চেয়ারম্যান ওসমান গনি ও রাসেলের সাথে দফা রফা হওয়ার। পুরানো শক্রতা গুছিয়ে সখ্যতা গড়ে তোলার। আলোচিত এই ইকবাল রাজনৈতিক কোন মামলায় জেল হাজতে যায়নি। বরং উল্টো প্রতিপক্ষ’র বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নোয়াব আলী পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর জামিনে আছেন বলে জানা গেছে।

সুত্র জানায়, সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগে ছাত্রদল থেকে বহিস্কার হন ইকবাল। ইকবাল এখন দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল আহবায়ক কমিটির নেতা পরিচয় দিয়ে আনোয়ারাসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বিলবোর্ড ব্যানার সাটিয়ে সাধারণের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্ঠা করছেন। এই নিয়ে নির্যাতনের শিকার শত শত পরিবারের মধ্যে বিএনপির প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বিএনপি কর্মী শাহাদৎ হোসেন, আমির হামজা ও হারুন নামের এই তিন ব্যক্তি পৃথক অভিযোগে বলেছেন, ইকবাল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আশ্রয় প্রশ্রয়ে থেকে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করে লুটে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। ইকবাল উঠে পড়ে লেগেছে বিএনপি’র পদ ভাগিয়ে নিতে। কোটি টাকা গচ্ছা গেলেও একটি পদ চান ইকবাল। এজন্য বিভিন জায়গায় জোর তদবির লবিং করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

কে এই ইকবালঃ

ইকবাল হায়দার চৌধুরী ওরফে ইকবাল মুন্সির বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ মুহাম্মপুর সিকদার বাড়িতে। পিতার নাম ভেন্ডার মোজাফর আহমদ চৌধুরী। বর্তমানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন নগরীর বাকলিয়া থানার শাহ আমানত হাউজিং সোসাইটিতে। লেখাপড়া এইচএসসি পর্যন্ত। এক সময় আনোয়ারা সদরে বিএনপি নেতা নাজিম মুন্সির সহকারী হয়ে কাজ করতেন। পরে তদবির করে দলিল লেখকের সনদ অর্জন করেন এই ইকবাল। আওয়ামী পরিবারের সন্তান হিসেবে করতেন ছাত্রলীগ। চাচা আবুল মনসুর চৌধুরী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এর পদে থাকায় এই সুবাধে ইকবালও আওয়ামী রাজনীতি করতেন। এক সময় নিঃস্ব থাকলেও বিশেষ করে ২০১৮ সালের দিকে অস্বাভাবিক সম্পদের মালিক বনে যান ইকবাল হায়দার চৌধুরী। দলিল লিখক হয়ে হঠাৎ “আলাদিনের চেরাগ” পাওয়ার মতো ফুলে ফেঁফে উঠেন ইকবাল। বনে যায় কোটিপতি। তিনি এখন এই পেশায় নেই বলে জানা গেছে।

সুত্র আরো জানান, ২০১৫ সালে আনোয়ারায় চায়না অর্থনৈতিক জোন, মহেশখালী-আনোয়ারা গ্যাস পাইপ লেইন প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়ক এর জন্য বিপুল সংখ্যক জমি অধিগ্রহণ করা হলে ভাগ্য বদলাতে শুরু হয় ইকবালদের। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ সোলায়মান(বিমান সোলেমান) যুবলীগ ক্যাডার ওসমান গনি রাসেল তৎকালিন ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এর একান্ত সহকারী রিদোওয়ানুল হক চৌধুরী সায়েমসহ আরও কয়েক আওয়ামী লীগ নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে জেলা প্রশাসনের এলএ শাখা দখল করে নেয় এই ইকবাল। শুরু হয় তার নানা অপকর্ম। কেউ অবাধ্য হলে নেমে আসতো নানা মামলা হামলাও নির্যাতন। বদলি হতেন সার্ভেয়ার সহকারীও। এলএ শাখায় এখনো তার প্রভাব রয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেকে। এই ইকবাল ক্ষতিগ্রস্থ বহু মানুষকে ফাঁদে ফেলে চাঁদাবাজি করে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিঃস্ব করার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তিনি একবার এলএ শাখায় মন্ত্রীর ধাওয়াও খেয়েছেন। এনিয়ে তার বিরুদ্ধে বিস্তর লেখালেখি হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক নতুন ভাবে দালালের যেই নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে তার নাম নেই বলে জানা গেছে। এনিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্নও।

যেভাবে দখল করা হয় জেলা প্রশাসনের জমিঃ

২০১৮সালের দিকে দালালি থেকে অর্জিত টাকায় কাজের সুবিধার্থে আদালত পাড়ায় অফিস করতে ইকবালের নজর পড়ে এলএ শাখার দক্ষিণে সরকারী কিছু খালি জায়গা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ফুঁসলিয়ে সংগঠনের ভবনের নাম দিয়ে একটি দুই তলা ভবন যার নিচতলায় ক্যান্টিন ওপরে অফিস তৈরী করেন ইকবাল। প্রথমদিকে ওই ভবনের ওপর তলায় অফিস কক্ষ নেওয়ার কথা ছিল ইকবালের। এজন্য সংগঠনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক নিচতলা ও ক্যান্টিনটি মনির হেসেন বাদল নামের এক ব্যক্তিকে দিতে ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর চুক্তিবদ্ধ হন। পরবর্তীতে এই ক্যান্টিনে চোখ পড়ে ইকবালের। তখন সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে হাতে নিয়ে মনির হোসেন বাদলের চুক্তি বাতিল করে ক্যান্টিনটি প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনে নেন বলে বিভিন্নজন থেকে জানা গেছে।

পরবর্তীতে এই নিয়ে আদালতে মামলাও দায়ের করা হয়। দালালির সুবাধে এলএ শাখার কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে ভাল সম্পর্ক তৈরী করেন ইকবাল হায়দার চৌধুরী। এভাবে আনোয়ারায় টানেল নির্মাণ চায়না অর্থনৈতিক জোন গ্যাস পাইপ লেইন প্রকল্পসহ চট্টগ্রামের বড় বড় প্রকল্পের অধিগ্রহণের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের টাকা হাতিয়ে নিতে সুযোগ করে দেওয়া হয় তাকে।

এদিকে জেলা প্রশাসনের জমির উপর গড়ে উঠা ভবনটি এখনও ইকবালের দখলে বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞ আইনজীবীরা বলেছেন, আদালত কিংবা জেলা প্রশাসনের কোন সম্পত্তি লিজ নেয়ার ক্ষমতা কারো নেই। দুর্নীতি পরায়ন কিছু কর্মকর্তা- কর্মচারী অন্যায়ভাবে সরকারী জমি লিজ দিয়ে থাকলে অবশ্যয় তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞ আইনজীবীরা। বর্তমানে ভবন ও ক্যান্টিনটি ইকবাল অন্যজনের কাছে ভাড়া দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেছেন,দালাল ও দুর্নীতির বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছেনা। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন সার্ভেয়ারকে শাস্তিমুলক বদলি করা হয়েছে। আরও অভিযোগ পেলে আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন———-

* দখল করতে যাচ্ছে এলএ শাখার প্রকল্পের কাজ

* বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে করা হচ্ছে নানা অপকর্ম

* দুদক পালন করছে নিরবতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: লুৎফুজ্জামান (ছদ্মনাম) নামের এক ব্যক্তি ইকবাল হায়দার চৌধুরী সম্পর্কে বলেছেন, ইকবাল চট্টগ্রাম এলএ শাখার দালাল, চাঁদাবাজ, মামলাবাজ, নির্যাতনকারী, প্রতারক, রং বদলাতে পারদর্শী ও দূর্ত প্রকৃতির লোক হন। অনেকে তাকে এই ভাবে চিনে ও জানে। এসব অপরাধ ও বদনাম ঢাকতে তিনি এখন দরবেশ সাঁজার চেষ্টা করছেন। দৌঁড়ে আছেন বিএনপির নেতা হওয়ার।

বিগত ১৭ বছর ছিলেন স্বৈরাচারী আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকারের কূলে,কাজ করেছেন দোসর হয়ে,পরিচয় দিতেন আওয়ামী লীগের সহযোগি হিসেবে। আদায় করেছেন বেসুমার নানা সুযোগ সুবিধা। চট্রগ্রাম এলএ শাখায় আধিপত্য বিস্তার করে ব্যাপক চাঁদাবাজি করেছেন। এখনও করছেন। বশে না আসলে অনেককে দিয়েছেন মিথ্যা ধর্ষণ মামলা। ছেড়ে দিয়েছেন নিঃস্ব করে। আছে জাল দলিল জাল খতিয়ান তৈরীর অভিযোগও। জাল স্ট্যাম্প ও বিক্রিতে জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখতে বলেছেন ভুক্তভোগিরা। ইকবাল গেল স্বৈরাচারী সরকার আমলে ছিলেন বেপরোয়া। করেছেন ধরাকে সরাজ্ঞান। সেল্টার পেয়ে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন ও সুবিধা আদায় করে অবিশ্বাস্য ভাবে বনে গেছেন কাড়ি কাড়ি টাকা আর গাড়ি বাড়ি সহায় সম্পদের মালিক। চড়েন দামী গাড়িতে। যা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগিরা।

সুত্র জানান, ইকবাল বিএনপির নাম ভাঙিয়ে নানা জনকে দিয়ে যাচ্ছেন মিথ্যা মামলা হুমকি ধমকিও। তাকে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে দেখা যায়নি কখনও। নগরীতে দলীয় অফিস দোস্ত বিল্ডিংয়ের সামনে ছাত্রদলের মিছিলে হামলার অভিযোগে হয়েছেন বহিস্কার। ধুর্ত প্রকৃতির এই ইকবাল এক সময় ছাত্র লীগের রাজনীতি করতেন। তার প্রতিবেশী ছাত্রলীগ নেতা ওসমান গনি রাসেলের সাথে দন্ধ’র জেরে হুট করে ঢুকে পড়েন বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে। তখন সখ্য গড়ে তুলতে সক্ষম হন আনোয়ারা- কর্ণফুলীর সাবেক এমপি সরওয়ার জামাল নিজামের সাথে। পরে বুড়ো বয়সে আনোয়ারা উপজেলা ছাত্র দলের একাংশের সাধারণ সম্পাদক হন। এখন সেজেছেন ভাল মানুষের আড়ালে দরবেশ হিসেবে। স্বপ্ন দেখছেন দলের পদ নিয়ে এলাকায় চেয়ারম্যান হওয়ার। যৌথ বাহিনী, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন দুর্নীতির এই বরপুত্রকে আটকানোর মতো কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছেনা। পালন করছেন রহস্যজনক নিরবতা। ফলে নির্যাতিত অনেককে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেছেন,এলএ শাখায় দালাল ও দুর্নীতি পরায়ন ব্যক্তিদের উপর নজর রাখা হচ্ছে।

সুত্র জানায়, ইকবালকে দেখা যাচ্ছে চট্টগ্রাম এলএ শাখায় আসা যাওয়া করতে। একই সাথে রাজনীতির মাঠেও দেখা যাচ্ছে তাকে। সামাজিক অনুষ্ঠানের আড়ালে নানাজনের সাথে বৈঠকও করছে। সম্প্রতি দেখা গেছে, এলএ শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা এমএইচএম আলী আজম এর সাথে একান্ত বৈঠকে। বর্তমানে এই আওয়ামী কর্মকতা জেলা প্রশাসনের অন্য একটি শাখায় বদলি হলেও তাকে এলএ শাখায় প্রায় সময় দেখা যায়। এই ইকবালের সাথে বৈঠক নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা আলোচনা সমালোচনাও। দেখা দিয়েছে তোলপাড়ও। খোদ এলএ শাখায় নানাজনকে নানা মন্তব্য করতে দেখা গেছে। আওয়ামী শাসনের পুরো সময়ে এলএ শাখায় সেল্টার ও সমর্থন যুগিয়েছেন এই আলী আজম। তার বাড়ি আনোয়ারার ষোলকাঠা গ্রামে। ফলে তাকে আর পেছনে থাকাতে হয়নি চালিয়ে গেছেন নানা অপকর্ম আর চাঁদাবাজি। দুর্ধর্ষ প্রকৃতির এই চাঁদাবাজকে কেন গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছেনা তা নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপও চেয়েছেন ভুক্তভোগি অনেকে।

সুত্র জনান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে কতিপয় নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতে সক্ষম হন সুযোগ সন্ধানী এই ইকবাল। শুরু করা হয় নানা অপকর্ম এবং এলএ শাখার দখল নিয়ে চাঁদাবাজি। তিনি এসব করেই দ্রুত বনে যান কোটি কোটি টাকা গাড়ি বাড়ি সহায় সম্পদের মালিক। দখল করেন আদালতে জেলা প্রশাসনের জায়গা,গড়ে তুলেন দ্বিতল ভবন। কাফকোর সাবেক সিবিএ নেতা যুবলীগ ক্যাডার ওসমান গনি রাসেল সাবেক ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এর একান্ত সহকারী আলোচিত দুর্নীতিবাজ রিদোওয়ানুল হক চৌধুরী সায়েম ও স্থানীয় বৈরাগ ইউপির দুই সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ সোলেমান ও নোয়াব আলীর সার্টিফিকেট নিয়ে এলএ শাখায় আধিপত্য বিস্তার করে শুরু করেন চাঁদাবাজি। তার ইশারায় চলতো এলএ শাখার সার্ভেয়ার কর্মকর্তা কর্মচারীরা। অন্যতায় ক্ষতিপুরনের ফাইল নড়াচড়া করতো না। ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন থেকে এই ইকবাল ক্ষেত্র বিশেষে আদায় করতেন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত চাঁদা। আর যাদের বশে আনা সম্ভব হতো না তাদেরকে দেয়া হতো মিচ মামলাসহ নানা মিথ্যা ও ধর্ষণ চেষ্টার মতো মামলা। তার মামলার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ অনেকে এখনও এলএ শাখায় ঘুরাঘুরি করছেন। নিঃস্ব হয়ে কান্না করছেন,অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন অনেকে। আওয়ামী সরকারের পতন হলে ইকবাল দ্রুত রং পাল্টিয়ে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে সুবিধা নিতে চেষ্টা করছে। প্রভাব খাটিয়ে প্রতিপক্ষের নামে দেয়া হচ্ছে মিথ্যা মামলা ও করা হচ্ছে নানাভাবে হয়রানী। জমি বাড়ি পুকুর দখলে নিতে নানাজনকে হুমকি ধমকি দেয়া হচ্ছে। এনিয়ে তার বিরুদ্ধে ২০২০সনের ২৯ডিসেম্বর অনলাইন নিউজ পোর্টাল সি ভয়েস-২৪, ২০২২সালের ১এপ্রিল ইনডিপেন্ডডেন্ট টেলিভিশনের তালাশ টিম অনুষ্ঠানে, দি ক্রাইমের অনলাইন ভার্সনে, দৈনিক সাঙ্গু ও দৈনিক পুর্বদেশসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।

২০২২সালের ২৬অক্টোবর নগরীর কাজীর দেউরী এলাকা থেকে কোতোয়ালী থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন এই ইকবাল।

২০১১সালের ৮জুলাই সংঘটিত ঘটনায় দায়েরকৃত অস্ত্র ও হত্যা চেষ্টার মামলায় জেলহাজতে যেতে হয় তাকে। এই দু’মামলার বাদী হন বৈরাগ ইউপির সাবেক চেয়ারমান নোয়াব আলী ও হাসানুজ্জান চৌধুরী। পুলিশ এ মামলায় ইকবালের পিতা মোজাফর আহমদ চৌধুরী, চাচা সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আবুল মনসুর চৌধুরী,মুন্সি আবুল কালাম আজাদ, বড় ভাই আলমগীর হায়দার, ছোট ভাই তামিম হায়দার, চাচাত ভাই সিহাব আজাদ, জেবল হোসেন, মোঃ আজিজ ও লুৎফর রহমানকে একটি মাইক্রোসহ গ্রেফতার করা হয়। তখন এই ঘটনায় ইকবাল গণপিটুনিরও শিকার হয়।

শুনা যাচ্ছে চেয়ারম্যান ওসমান গনি ও রাসেলের সাথে দফা রফা হওয়ার। পুরানো শক্রতা গুছিয়ে সখ্যতা গড়ে তোলার। আলোচিত এই ইকবাল রাজনৈতিক কোন মামলায় জেল হাজতে যায়নি। বরং উল্টো প্রতিপক্ষ’র বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নোয়াব আলী পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর জামিনে আছেন বলে জানা গেছে।

সুত্র জানায়, সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগে ছাত্রদল থেকে বহিস্কার হন ইকবাল। ইকবাল এখন দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল আহবায়ক কমিটির নেতা পরিচয় দিয়ে আনোয়ারাসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বিলবোর্ড ব্যানার সাটিয়ে সাধারণের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্ঠা করছেন। এই নিয়ে নির্যাতনের শিকার শত শত পরিবারের মধ্যে বিএনপির প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বিএনপি কর্মী শাহাদৎ হোসেন, আমির হামজা ও হারুন নামের এই তিন ব্যক্তি পৃথক অভিযোগে বলেছেন, ইকবাল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আশ্রয় প্রশ্রয়ে থেকে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করে লুটে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। ইকবাল উঠে পড়ে লেগেছে বিএনপি’র পদ ভাগিয়ে নিতে। কোটি টাকা গচ্ছা গেলেও একটি পদ চান ইকবাল। এজন্য বিভিন জায়গায় জোর তদবির লবিং করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

কে এই ইকবালঃ

ইকবাল হায়দার চৌধুরী ওরফে ইকবাল মুন্সির বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ মুহাম্মপুর সিকদার বাড়িতে। পিতার নাম ভেন্ডার মোজাফর আহমদ চৌধুরী। বর্তমানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন নগরীর বাকলিয়া থানার শাহ আমানত হাউজিং সোসাইটিতে। লেখাপড়া এইচএসসি পর্যন্ত। এক সময় আনোয়ারা সদরে বিএনপি নেতা নাজিম মুন্সির সহকারী হয়ে কাজ করতেন। পরে তদবির করে দলিল লেখকের সনদ অর্জন করেন এই ইকবাল। আওয়ামী পরিবারের সন্তান হিসেবে করতেন ছাত্রলীগ। চাচা আবুল মনসুর চৌধুরী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এর পদে থাকায় এই সুবাধে ইকবালও আওয়ামী রাজনীতি করতেন। এক সময় নিঃস্ব থাকলেও বিশেষ করে ২০১৮ সালের দিকে অস্বাভাবিক সম্পদের মালিক বনে যান ইকবাল হায়দার চৌধুরী। দলিল লিখক হয়ে হঠাৎ “আলাদিনের চেরাগ” পাওয়ার মতো ফুলে ফেঁফে উঠেন ইকবাল। বনে যায় কোটিপতি। তিনি এখন এই পেশায় নেই বলে জানা গেছে।

সুত্র আরো জানান, ২০১৫ সালে আনোয়ারায় চায়না অর্থনৈতিক জোন, মহেশখালী-আনোয়ারা গ্যাস পাইপ লেইন প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়ক এর জন্য বিপুল সংখ্যক জমি অধিগ্রহণ করা হলে ভাগ্য বদলাতে শুরু হয় ইকবালদের। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ সোলায়মান(বিমান সোলেমান) যুবলীগ ক্যাডার ওসমান গনি রাসেল তৎকালিন ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এর একান্ত সহকারী রিদোওয়ানুল হক চৌধুরী সায়েমসহ আরও কয়েক আওয়ামী লীগ নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে জেলা প্রশাসনের এলএ শাখা দখল করে নেয় এই ইকবাল। শুরু হয় তার নানা অপকর্ম। কেউ অবাধ্য হলে নেমে আসতো নানা মামলা হামলাও নির্যাতন। বদলি হতেন সার্ভেয়ার সহকারীও। এলএ শাখায় এখনো তার প্রভাব রয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেকে। এই ইকবাল ক্ষতিগ্রস্থ বহু মানুষকে ফাঁদে ফেলে চাঁদাবাজি করে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিঃস্ব করার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তিনি একবার এলএ শাখায় মন্ত্রীর ধাওয়াও খেয়েছেন। এনিয়ে তার বিরুদ্ধে বিস্তর লেখালেখি হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক নতুন ভাবে দালালের যেই নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে তার নাম নেই বলে জানা গেছে। এনিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্নও।

যেভাবে দখল করা হয় জেলা প্রশাসনের জমিঃ

২০১৮সালের দিকে দালালি থেকে অর্জিত টাকায় কাজের সুবিধার্থে আদালত পাড়ায় অফিস করতে ইকবালের নজর পড়ে এলএ শাখার দক্ষিণে সরকারী কিছু খালি জায়গা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ফুঁসলিয়ে সংগঠনের ভবনের নাম দিয়ে একটি দুই তলা ভবন যার নিচতলায় ক্যান্টিন ওপরে অফিস তৈরী করেন ইকবাল। প্রথমদিকে ওই ভবনের ওপর তলায় অফিস কক্ষ নেওয়ার কথা ছিল ইকবালের। এজন্য সংগঠনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক নিচতলা ও ক্যান্টিনটি মনির হেসেন বাদল নামের এক ব্যক্তিকে দিতে ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর চুক্তিবদ্ধ হন। পরবর্তীতে এই ক্যান্টিনে চোখ পড়ে ইকবালের। তখন সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে হাতে নিয়ে মনির হোসেন বাদলের চুক্তি বাতিল করে ক্যান্টিনটি প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনে নেন বলে বিভিন্নজন থেকে জানা গেছে।

পরবর্তীতে এই নিয়ে আদালতে মামলাও দায়ের করা হয়। দালালির সুবাধে এলএ শাখার কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে ভাল সম্পর্ক তৈরী করেন ইকবাল হায়দার চৌধুরী। এভাবে আনোয়ারায় টানেল নির্মাণ চায়না অর্থনৈতিক জোন গ্যাস পাইপ লেইন প্রকল্পসহ চট্টগ্রামের বড় বড় প্রকল্পের অধিগ্রহণের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের টাকা হাতিয়ে নিতে সুযোগ করে দেওয়া হয় তাকে।

এদিকে জেলা প্রশাসনের জমির উপর গড়ে উঠা ভবনটি এখনও ইকবালের দখলে বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞ আইনজীবীরা বলেছেন, আদালত কিংবা জেলা প্রশাসনের কোন সম্পত্তি লিজ নেয়ার ক্ষমতা কারো নেই। দুর্নীতি পরায়ন কিছু কর্মকর্তা- কর্মচারী অন্যায়ভাবে সরকারী জমি লিজ দিয়ে থাকলে অবশ্যয় তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞ আইনজীবীরা। বর্তমানে ভবন ও ক্যান্টিনটি ইকবাল অন্যজনের কাছে ভাড়া দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেছেন,দালাল ও দুর্নীতির বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছেনা। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন সার্ভেয়ারকে শাস্তিমুলক বদলি করা হয়েছে। আরও অভিযোগ পেলে আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।