নিজস্ব প্রতিবেদক: খাজা মাঈনুদ্দিন চিশতী (রহ.) এ বাণী “শাহ হাস্ত হোসাইন, বাদশাহ হাস্ত হোসাইন, দীন হাস্ত হোসাইন, দ্বীনে পানাহ্ হাস্ত হোসাইন, সার দাদ্, না-দাদ দাস্ত, দর্ দাস্তে ইয়াজিদ হাক্কাকে বেনায়ে লা-ইলাহ ইল্লাল্লাহ হাস্ত হোসাইন” দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিতি বক্তব্য পাঠ করা হয়।

আজ মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে হোটেল গোল্ডেন প্লাজার ৪র্থ তলায় বোনজোর রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আলহাজ্ব সুফি মিজানুর রহমান (সমাজসেবা একুশে পদকপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান পিএইচপি ফ্যামিলি ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা কমিটি; আলহাজ্ব মোহাম্মদ মহসিন সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া; আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া; আলহাজ্ব পিয়ার মোহাম্মদ কমিশন, চেয়ারম্যান গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ; আলহাজ্ব মো. আলী হোসেন সোহাগ, প্রধান সমন্বয়কারী মাহফিল পরিচালনা পরিষদ; আলহাজ্ব খোরশেদুর রহমান সহ-সভাপতি মাহফিল পরিচালনা পরিষদ; আলহাজ্ব সিরাজুল মোস্তফা, আলহাজ্ব শফিউল আজম, আলহাজ্ব মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ, দিল শাদ আহমেদ, আলহাজ্ব মো. সাইফ উদ্দিন, আলহাজ্ব সগির চৌধুরী, প্রফেসর হেলাল উদ্দিন, শিহাব উদ্দিন আলম, জাফর আহমদ সওদাগর, মাহবুবুল আলম, মনজুর সিকদার প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আগামী ১ মুহাররম ১৪৪৪ হিজরী মোতাবেক ৩১জুলাই ২০২২ ইংরেজী চট্টগ্রামের জাতীয় মসজিদ প্লাজায় ৩৭তম আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ।

খতীবে বাঙ্গাল মাওলানা মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন আলকাদেরীর একান্ত প্রচেষ্টার ১৯৮৬ সালে জমিয়াতুল ফালাহ কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই হিজরী নববর্ষ, মাহে মুহর্রম ও আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্মরণে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে ১০ দিনব্যাপী পবিত্র শাহাদাতে কারবালা মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

এবছরও যথারীতি ৩৭তম আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল আয়োজনের প্রাক্কালে এ মাহফিলের প্রয়োজনীয়তা, গুরুত্ব ও তাৎপর্যসহ নানাদিক বিষয়ে দেশবাসীকে অবহিত করার লক্ষ্যে আমরা আপনাদের সাথে মিলিত হয়েছি।

আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আপনারা যারা এ সংবাদ সম্মেলনে সমবেত হয়েছেন, সকলের প্রতি জানাচ্ছি মোবারকবাদ ও কৃতজ্ঞতা ।

আশী করি, ইসলামের শাস্তির বাণী প্রচারে আপনারাও আমাদের সাথে থাকবেন  এবং আমাদের বক্তব্য ও আহ্বান যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে  প্রচার ও পরিবেশনে আপনারা আন্তরিক ভূমিকা পালন করবেন।

আরবি হিজরী নববর্ষের প্রথম মাস মুহাররম মানব সৃষ্টির সৃচনালগ্ন থেকেই নানা বিস্ময়কর ঘটনা ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের স্মারক হয়ে আছে। সৃষ্টিজগৎ ও মানবজীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বহু ঘটনা ইতিহাসের সাক্ষী এ মুহররম মাস।

বিশেষত ৬১ হিজরির ১০ মুহররম কারবালা ময়দানে নবী বংশের দুশমন পাপিষ্ট ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে অত্যন্ত নৃশংসভাবে শহীদ হন প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর পরিবারের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র শহীদে আজম ইমাম হোসাইন (আ.)সহ আহলে বায়তের নিষ্পাপ সদস্যগণ ।

ইয়াযিদি বর্বরতা থেকে সেদিন নারী-শিশু কেউ বাদ যায়নি। তাই পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম মর্মান্ত ঘটনা হিসেবে বিবেচ্য এ কারবালার ঘটনা । এর স্মরণ মাত্রই মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটে। নবীপ্রেমী ও আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম)এর প্রতি যারা অকুষ্ঠ ভালোবাসা হৃদয়ে ধারণ ও লালন করেন, তাঁদের জন্য তাই মুহররম মাস বেশ তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্ববহ।

শহীদে আজম ইমাম হোসাইন (আ.)এব নেতৃতে আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাই আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর সদস্যগণ সেদিন দুরাচার ইয়াজিদি শক্তির কাছে মাথা নত না করে, ইসলামের ন্যায়, সত্য ও ইনসাফের ঝান্ডাকে উড্ডীন করেছেন। কারবালার ময়দানে নরী পরিবারের তুলনাহীন আত্মত্যাগ ও কুরবানির মধ্য দিয়ে ইসলামের ভিত্তি মজবুত হয়েছে দ্বীন ইসলামের পূনরুজ্জীবন ঘটে কারবালার হৃদয়ভেদী ঘটনার মধ্য দিয়ে।

মূলত আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাই প্রদর্শন আত্মত্যাগের ঘটনা মুসলমানদের মাঝে জাগরুক রাখার জন্য এবং দ্বীন ও সত্যের প্রতি সবাইকে উদ্দীপ্ত ও উজ্জীবিত রাখতে শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের আয়োজন বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং এতে অংশগ্রহণ ঈমানি দায়িত বলেই আমরা মনে করি ।

আহলে বায়তের স্মরণ কোরআন-হাদিস সম্মত উত্তম ইবাদত : আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেন, ‘কুল্, লা আসয়ালুকুল আলাইহি আজরান, ইল্লাল মাওয়াদ্দাতা ফিল্ কুর্বা’ সূরা শুরা-২৩] অর্থাৎ, হে প্রিয় নবী! আপনি বলে দিন, আমি তোমাদের কাছে কোন বিনিময় চাই না, কিন্তু আমার নিকট আত্মীয়দের প্রতি ভালবাসা চাই ।”

প্রিয় নবী(সাল্লাল্লাহ্ আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর বিভিন্ন বাণী ও নির্দেশনায় আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম)এর মর্যাদা উল্লেখের পাশাপাশি সর্বোত্তম পন্থায় তাদের স্মরণ করার তাগিদ রয়েছে। তাই মুহররম মাসে আশুরা ও আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম) স্মরণে আলোচনা ও শাহাদাতে কারবালা মাহাফিলের আয়োজন কোরআন-সুন্নাহ সম্মত উত্তম ইবাদত । এধরনের মাহফিলের মাধ্যমে অশেষ পুণ্য ও ফজিলত অর্জিত হয়, বিধায় এসব মাহফিলে শরিক-শামিল হওয়া কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনারই প্রকৃত অনুসরণ ।

প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম)এর প্রতি ভালোবাসাই ঈমান”৷ এ ধরনের আরো বহু বর্ণনা কুরআন-হাদিসে রয়েছে,যাতে প্রমাণিত হয় আহলে বায়তে রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্মরণের মাধ্যমে ঈমান আকিদা মজবুত হয়. দুনিয়া-আখিরাতে অশেষ ফায়দা ও পরকালে নাজাত নসিব হয়। তাই, আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্মরণে দেশজুড়ে শানদারভাবে শাহাদাতে কারবালা মাহফিল জানাচ্ছি।

আমরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মতাদর্শে আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর প্রতি ভালবাসা ও অত্যাধিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন করি।

উল্লেখ্য, মাহফিলে যারা অংশগ্রহণ করবেন এবারের শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে দেশ ও বিদেশের উলামা-মাশায়েখ, শিক্ষাবিদ, গবেষক, ইসলামী হিসেবে অংশগ্রহণের সদয় সম্মতি দিয়েছেন।

এবারের মাহফিলে উপস্থিত থাকার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন, বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রা.) আওলাদ আশ-শাইখ আস্-সৈয়দ আল্লামা আফিফুদ্দীন আল্ জিলানী আল বোগদাদী (মু.যি.আ.), কাসওয়াসা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন কায়েদে মিল্লাত হযরত শাহসূফী সৈয়দ মাহমুদ আশরাফ আশরাফী আল জিলানী (মু.যি.আ.) ভারত, ফখরুল মাশায়িখ হযরতুল আল্লায়া সৈয়দ মুহাম্মদ আশরাফ আশরাফি আল জিলানী (ম.জি.আ.) কাসওয়াসা দরবার শরীফ, ভারত; তাজুল উলামা হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ নূরানী মিয়া হাশেমী (মু.যি.আ.)ভারত। আল্লামা মুহামম্মদ ইহসান ইকবাল কাদেরী(মু.জি.আ.)শ্রীলঙ্কা ও খতীবে লা-সানী মাওলানা আকবর ইহসানী প্রমুখ ।

প্রতিদিনের মাহফিলে পবিত্র কুরআন মাজীদ থেকে তেলোয়াত করবেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ক্বারী শাইখ আহমদ নায়না (মিশর)

আপনারা জানেন, সারা বিশ্বে আজ অশান্তি, হানাহানি, মানবতার আর্তনাদ চলছে। বিশেষত মুসলিম বিশ্বের দুরাবস্থা আরও করুণ ও অবর্ণনীয়। লক্ষ লক্ষ মানব সন্তান আজ সাম্রাজ্যবাদীদের ষড়যন্ত্রের শিকার । তারা বাস্তভিটা হারা হয়ে বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম পবিত্র ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ মাথা চড়া দিয়ে উঠছে সর্বত্র। আমাদের এ প্রিয় মাতৃভূমিও আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে যাচ্ছে বৈশ্বিক এ নিমর্ম ষড়যন্ত্রের জালে । বাড়ছে মানুষে মানুষে বিভেদ-দূরতৃ, সহিংসতা ও অশান্তি।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা, তার সাহাবা কেরাম, আউলিয়ায়ে কেরামসহ পুণ্যাত্মা মনীষীরা যুগে যুগে মানুষের জয়গান প্রচার করেছেন। তেমনিভাবে শহীদে আজম ইমাম হোসাইন (আ.) ও আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর দর্শন ছিল মহানবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শাস্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং কল্যাণ ও ইনসাফের পতাকাকে সমুন্নত রাখা ।

শাস্তির বাণী ও মানবতার বাণী সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে আপনারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন। আল্লাহ পাক সকলের দ্বীনি খদমত কবুল করুন,সকলকে ভালো কাজে অগ্রসর হবার তৌফিক দান করুন।

এ ১০ দিনব্যাপী শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে সর্বস্তরের মানুষকে সার্বিকভাবে অংশগ্রহণের দাওয়াত রইল।

নিজস্ব প্রতিবেদক: খাজা মাঈনুদ্দিন চিশতী (রহ.) এ বাণী “শাহ হাস্ত হোসাইন, বাদশাহ হাস্ত হোসাইন, দীন হাস্ত হোসাইন, দ্বীনে পানাহ্ হাস্ত হোসাইন, সার দাদ্, না-দাদ দাস্ত, দর্ দাস্তে ইয়াজিদ হাক্কাকে বেনায়ে লা-ইলাহ ইল্লাল্লাহ হাস্ত হোসাইন” দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিতি বক্তব্য পাঠ করা হয়।

আজ মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে হোটেল গোল্ডেন প্লাজার ৪র্থ তলায় বোনজোর রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আলহাজ্ব সুফি মিজানুর রহমান (সমাজসেবা একুশে পদকপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান পিএইচপি ফ্যামিলি ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা কমিটি; আলহাজ্ব মোহাম্মদ মহসিন সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া; আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া; আলহাজ্ব পিয়ার মোহাম্মদ কমিশন, চেয়ারম্যান গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ; আলহাজ্ব মো. আলী হোসেন সোহাগ, প্রধান সমন্বয়কারী মাহফিল পরিচালনা পরিষদ; আলহাজ্ব খোরশেদুর রহমান সহ-সভাপতি মাহফিল পরিচালনা পরিষদ; আলহাজ্ব সিরাজুল মোস্তফা, আলহাজ্ব শফিউল আজম, আলহাজ্ব মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ, দিল শাদ আহমেদ, আলহাজ্ব মো. সাইফ উদ্দিন, আলহাজ্ব সগির চৌধুরী, প্রফেসর হেলাল উদ্দিন, শিহাব উদ্দিন আলম, জাফর আহমদ সওদাগর, মাহবুবুল আলম, মনজুর সিকদার প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আগামী ১ মুহাররম ১৪৪৪ হিজরী মোতাবেক ৩১জুলাই ২০২২ ইংরেজী চট্টগ্রামের জাতীয় মসজিদ প্লাজায় ৩৭তম আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ।

খতীবে বাঙ্গাল মাওলানা মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন আলকাদেরীর একান্ত প্রচেষ্টার ১৯৮৬ সালে জমিয়াতুল ফালাহ কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই হিজরী নববর্ষ, মাহে মুহর্রম ও আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্মরণে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে ১০ দিনব্যাপী পবিত্র শাহাদাতে কারবালা মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

এবছরও যথারীতি ৩৭তম আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল আয়োজনের প্রাক্কালে এ মাহফিলের প্রয়োজনীয়তা, গুরুত্ব ও তাৎপর্যসহ নানাদিক বিষয়ে দেশবাসীকে অবহিত করার লক্ষ্যে আমরা আপনাদের সাথে মিলিত হয়েছি।

আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আপনারা যারা এ সংবাদ সম্মেলনে সমবেত হয়েছেন, সকলের প্রতি জানাচ্ছি মোবারকবাদ ও কৃতজ্ঞতা ।

আশী করি, ইসলামের শাস্তির বাণী প্রচারে আপনারাও আমাদের সাথে থাকবেন  এবং আমাদের বক্তব্য ও আহ্বান যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে  প্রচার ও পরিবেশনে আপনারা আন্তরিক ভূমিকা পালন করবেন।

আরবি হিজরী নববর্ষের প্রথম মাস মুহাররম মানব সৃষ্টির সৃচনালগ্ন থেকেই নানা বিস্ময়কর ঘটনা ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের স্মারক হয়ে আছে। সৃষ্টিজগৎ ও মানবজীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বহু ঘটনা ইতিহাসের সাক্ষী এ মুহররম মাস।

বিশেষত ৬১ হিজরির ১০ মুহররম কারবালা ময়দানে নবী বংশের দুশমন পাপিষ্ট ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে অত্যন্ত নৃশংসভাবে শহীদ হন প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর পরিবারের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র শহীদে আজম ইমাম হোসাইন (আ.)সহ আহলে বায়তের নিষ্পাপ সদস্যগণ ।

ইয়াযিদি বর্বরতা থেকে সেদিন নারী-শিশু কেউ বাদ যায়নি। তাই পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম মর্মান্ত ঘটনা হিসেবে বিবেচ্য এ কারবালার ঘটনা । এর স্মরণ মাত্রই মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটে। নবীপ্রেমী ও আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম)এর প্রতি যারা অকুষ্ঠ ভালোবাসা হৃদয়ে ধারণ ও লালন করেন, তাঁদের জন্য তাই মুহররম মাস বেশ তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্ববহ।

শহীদে আজম ইমাম হোসাইন (আ.)এব নেতৃতে আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাই আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর সদস্যগণ সেদিন দুরাচার ইয়াজিদি শক্তির কাছে মাথা নত না করে, ইসলামের ন্যায়, সত্য ও ইনসাফের ঝান্ডাকে উড্ডীন করেছেন। কারবালার ময়দানে নরী পরিবারের তুলনাহীন আত্মত্যাগ ও কুরবানির মধ্য দিয়ে ইসলামের ভিত্তি মজবুত হয়েছে দ্বীন ইসলামের পূনরুজ্জীবন ঘটে কারবালার হৃদয়ভেদী ঘটনার মধ্য দিয়ে।

মূলত আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাই প্রদর্শন আত্মত্যাগের ঘটনা মুসলমানদের মাঝে জাগরুক রাখার জন্য এবং দ্বীন ও সত্যের প্রতি সবাইকে উদ্দীপ্ত ও উজ্জীবিত রাখতে শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের আয়োজন বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং এতে অংশগ্রহণ ঈমানি দায়িত বলেই আমরা মনে করি ।

আহলে বায়তের স্মরণ কোরআন-হাদিস সম্মত উত্তম ইবাদত : আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেন, ‘কুল্, লা আসয়ালুকুল আলাইহি আজরান, ইল্লাল মাওয়াদ্দাতা ফিল্ কুর্বা’ সূরা শুরা-২৩] অর্থাৎ, হে প্রিয় নবী! আপনি বলে দিন, আমি তোমাদের কাছে কোন বিনিময় চাই না, কিন্তু আমার নিকট আত্মীয়দের প্রতি ভালবাসা চাই ।”

প্রিয় নবী(সাল্লাল্লাহ্ আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর বিভিন্ন বাণী ও নির্দেশনায় আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম)এর মর্যাদা উল্লেখের পাশাপাশি সর্বোত্তম পন্থায় তাদের স্মরণ করার তাগিদ রয়েছে। তাই মুহররম মাসে আশুরা ও আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম) স্মরণে আলোচনা ও শাহাদাতে কারবালা মাহাফিলের আয়োজন কোরআন-সুন্নাহ সম্মত উত্তম ইবাদত । এধরনের মাহফিলের মাধ্যমে অশেষ পুণ্য ও ফজিলত অর্জিত হয়, বিধায় এসব মাহফিলে শরিক-শামিল হওয়া কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনারই প্রকৃত অনুসরণ ।

প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম)এর প্রতি ভালোবাসাই ঈমান”৷ এ ধরনের আরো বহু বর্ণনা কুরআন-হাদিসে রয়েছে,যাতে প্রমাণিত হয় আহলে বায়তে রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্মরণের মাধ্যমে ঈমান আকিদা মজবুত হয়. দুনিয়া-আখিরাতে অশেষ ফায়দা ও পরকালে নাজাত নসিব হয়। তাই, আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্মরণে দেশজুড়ে শানদারভাবে শাহাদাতে কারবালা মাহফিল জানাচ্ছি।

আমরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মতাদর্শে আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর প্রতি ভালবাসা ও অত্যাধিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন করি।

উল্লেখ্য, মাহফিলে যারা অংশগ্রহণ করবেন এবারের শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে দেশ ও বিদেশের উলামা-মাশায়েখ, শিক্ষাবিদ, গবেষক, ইসলামী হিসেবে অংশগ্রহণের সদয় সম্মতি দিয়েছেন।

এবারের মাহফিলে উপস্থিত থাকার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন, বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রা.) আওলাদ আশ-শাইখ আস্-সৈয়দ আল্লামা আফিফুদ্দীন আল্ জিলানী আল বোগদাদী (মু.যি.আ.), কাসওয়াসা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন কায়েদে মিল্লাত হযরত শাহসূফী সৈয়দ মাহমুদ আশরাফ আশরাফী আল জিলানী (মু.যি.আ.) ভারত, ফখরুল মাশায়িখ হযরতুল আল্লায়া সৈয়দ মুহাম্মদ আশরাফ আশরাফি আল জিলানী (ম.জি.আ.) কাসওয়াসা দরবার শরীফ, ভারত; তাজুল উলামা হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ নূরানী মিয়া হাশেমী (মু.যি.আ.)ভারত। আল্লামা মুহামম্মদ ইহসান ইকবাল কাদেরী(মু.জি.আ.)শ্রীলঙ্কা ও খতীবে লা-সানী মাওলানা আকবর ইহসানী প্রমুখ ।

প্রতিদিনের মাহফিলে পবিত্র কুরআন মাজীদ থেকে তেলোয়াত করবেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ক্বারী শাইখ আহমদ নায়না (মিশর)

আপনারা জানেন, সারা বিশ্বে আজ অশান্তি, হানাহানি, মানবতার আর্তনাদ চলছে। বিশেষত মুসলিম বিশ্বের দুরাবস্থা আরও করুণ ও অবর্ণনীয়। লক্ষ লক্ষ মানব সন্তান আজ সাম্রাজ্যবাদীদের ষড়যন্ত্রের শিকার । তারা বাস্তভিটা হারা হয়ে বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম পবিত্র ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ মাথা চড়া দিয়ে উঠছে সর্বত্র। আমাদের এ প্রিয় মাতৃভূমিও আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে যাচ্ছে বৈশ্বিক এ নিমর্ম ষড়যন্ত্রের জালে । বাড়ছে মানুষে মানুষে বিভেদ-দূরতৃ, সহিংসতা ও অশান্তি।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা, তার সাহাবা কেরাম, আউলিয়ায়ে কেরামসহ পুণ্যাত্মা মনীষীরা যুগে যুগে মানুষের জয়গান প্রচার করেছেন। তেমনিভাবে শহীদে আজম ইমাম হোসাইন (আ.) ও আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর দর্শন ছিল মহানবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শাস্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং কল্যাণ ও ইনসাফের পতাকাকে সমুন্নত রাখা ।

শাস্তির বাণী ও মানবতার বাণী সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে আপনারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন। আল্লাহ পাক সকলের দ্বীনি খদমত কবুল করুন,সকলকে ভালো কাজে অগ্রসর হবার তৌফিক দান করুন।

এ ১০ দিনব্যাপী শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে সর্বস্তরের মানুষকে সার্বিকভাবে অংশগ্রহণের দাওয়াত রইল।