দি ক্রাইম ডেস্ক: দেশের পাঁচ জেলায় ব্যবসায়ী, ব্যাংক কর্মকর্তা ও গৃহবধূসহ পাঁচ জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চারটি হত্যাকাণ্ড ঘটে গতকাল শনিবার। আর একটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার রাতে। আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর—
ঝিনাইদহে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহ শহরের পবহাটিতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল শনিবার দুপুরে মুরাদ হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত মুরাদ হোসেন পবহাটি মণ্ডলপাড়ার মৃত আফজাল হোসেনের ছেলে। স্থানীয়রা জানায়, গত শনিবার মুরাদ হোসেনের পিতা আফজাল হোসেন মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর কুলখানি না করায় তার চাচাতো ভাই আলম মণ্ডল তাকে ব্যঙ্গ ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে । এ নিয়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মুরাদ হোসেন ও আলম মণ্ডলের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে গতকাল শনিবার দুপুরে আলম মণ্ডলের ছেলে সৌরভ কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে মুরাদের ওপর হামলা করে। তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে মুরাদের মৃত্যু হয়।
নরসিংদীতে কিশোর অটোরিকশা চালককে গলা কেটে হত্যা
নরসিংদী প্রতিনিধি: গতকাল শনিবার দুপুরে নরসিংদীর রায়পুরায় এক অটোরিকশা চালককে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার আমীরগঞ্জ ইউনিয়নের গাবতলী-আমীরগঞ্জ সড়কের বদরপুর ব্রিজের কাছে এ ঘটনা ঘটে। নিহত অটোরিকশা চালকের নাম শাহাদাত হোসেন (১৪)। সে রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের আদিয়াবাদ দক্ষিণ পূর্বপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম মিয়ার ছেলে । জানা গেছে, চলতি ধানকাটার মৌসুম বড় ভাই ধান কাটায় ব্যস্ত থাকায় কিশোর শাহাদাত হোসেন তার বড় ভাইয়ের অটোরিকশা নিয়ে রোজগারের উদ্দেশ্যে সকালে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু পরে রাস্তার পাশে তার গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, অটোরিকশা ছিনতাই করতে না পেরে গলা কেটে চালককে হত্যা করা হয়েছে।
দৌলতপুরে প্রতিপক্ষের হাতে মাদক ব্যবসায়ী খুন
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) সংবাদদাতা: কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মাদক সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে জনি ইসলাম নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তার প্রতিপক্ষ। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুণ্ডি মাঠপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জনি প্রাগপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে। নিহত জনি সীমান্ত এলাকার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও মাদকের ছয়-সাতটি মামলা রয়েছে । পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়,গতকাল শনিবার দুপুরে জামালপুর এলাকায় লালু ও সোহানের দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জনির ওপর হামলা চালায়। এ সময় হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে তার পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে বিকালে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার থানায় নিয়ে যায় ।
নন্দীগ্রামে স্ত্রীকে কড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, স্বামী আটক
নন্দীগ্রাম (বগুড়া) সংবাদদাতা: বগুড়ার নন্দীগ্রামে গতকাল শনিবার দুপুরে মোর্শেদা বেগম নামে এক গৃহবধূকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ তার স্বামী তায়েজ উদ্দিনকে (৫৫) আটক করেছে। উপজেলার থালতা মাঝগ্রাম ইউনিয়নের বাঁশো লয়দাপাড়া গ্রামে ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরের দিকে তায়েজ উদ্দিন ও তার স্ত্রী মোরশেদার মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তায়েজ উদ্দিন তার স্ত্রীর মাথায় কুড়াল দিয়ে আঘাত করেন। এ সময় তার মেয়ে এগিয়ে এলে তার ওপরও আক্রমণ করেন। তখন তার মেয়ে ভয়ে অন্য ঘরে প্রবেশ করে দরজা আটকে দিয়ে জীবন রক্ষা করে। তবে তায়েজ উদ্দিনের হাতে থাকা কুড়ালের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়ে স্ত্রী মোর্শেদা বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান । পরে অভিযুক্ত স্বামী তায়েজ উদ্দিন ভয়ে মাটির ঘরের দোতলায় কুড়াল নিয়ে লুকিয়ে থাকে ।
মির্জাপুরে ব্যাংক কর্মকর্তাকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ২
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা: চোর অপবাদ দিয়ে পরকীয়া প্রেমিক আইএফআইসি ব্যাংক কর্মকর্তা হাসমত উল্লাহ ওরফে হাসুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার পিতার নাম আব্দুল মতিন । বাড়ি জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার সাজিমারা গ্রামে । এই হত্যায় অভিযুক্ত রাশেদুল ইসলাম ও ইয়ামিন নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার এক নম্বর মহেড়া ইউনিয়নের গ্রামনাহালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, রাশেদুল ইসলাম প্রবাসে থাকাকালীন তার স্ত্রী নিশি আক্তার টাঙ্গাইল সদরের আইএফআইসি ব্যাংক কর্মকর্তা হাসমত উল্লাহ ওরফে হাসুর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরেন। নিশির স্বামী দেশে ফিরে আসার পরও তার স্ত্রী গোপনে পরকীয়া প্রেমিক হাসুর সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী নিশি তার প্রেমিক হাসুকে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। এ সময় নিশির স্বামী রাশেদুল ইসলাম, তার চাচাতো ভাই ইয়ামিন ও তাদের সহযোগীরা চোর অপবাদ দিয়ে হাসুকে লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে ঐ দিন রাতেই কুমুদিনী হাসপাতালে হাসুর মৃত্যু হয়।




