অনুসন্ধানী প্রতিবেদন———-

এস এম আকাশ: চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বাণিজ্য বান্ধব থানা এলাকার মধ্যে কর্ণফুলী অন্যতম। দেশের বাণিজ্য খাতে সর্বশ্রেষ্ঠ জোগান দাতা সোনালী নদী ও সম্মৃদ্ধির স্বর্ণদ্বার হিসেবে বিবেচিত বহতা নদী কর্ণফুলীর তীর ঘেষে এই উপজেলার নাম করণ হয় কর্ণফুলী।

বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমল থেকেই এ জনপদে দখল বেদখলের মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও গায়ের জোরে বহু অন্যায় অপরাধ সংঘটিত করেছে রাজনীতিবিদ ও পুলিশের অবাধ অবৈধ অপকর্মের আনজাম দিতে। বিগত ৫ আগষ্ট পরবর্তী স্থানীয় জনমনে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছিল যে হয়তো এসব এখন বন্ধ হবে। কিন্তু “ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও বারা বাধেঁ” বিষয় টা এমনই। প্রাসঙ্গিক ও সৃষ্ট বহু ঘটনার অন্তরালে সংশ্লিষ্ট থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ শরিফ এর সরাসরি যোগসাজশ রয়েছে মর্মে সরাসরি অভিযোগ উঠে আসে।

উপজেলার রড উঠান কৈয়গ্রাম সেতু রোডের পাশে কর্নফুলী এন্টারপ্রাইজ এর বালি সেন্টারে ১০/ ১২ জন চাঁদাবাজ কৈয়গ্রাম সেতু রোডে বালুর সেইল সেন্টারে চাঁদাবাজী করতে এসে হাতেনাতে সেনাবাহিনীর কাছে ৪ জন আটক হন। বাকিরা পালিয়ে যায়। আটককৃতরা হলেন- আরাফাত হোসেন (২২) পিতা: নুর মোহাম্মদ,তাছিম,মোবারক ও হাফিজুর রহমান লিটন। চাঁদাবাজদেরকে সেনাবাহিনীর জিগ্যাসাবাদ শেষে সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্ণফুলী থানায় হস্তান্তর করে। কিন্তু থানা থেকে মোটা অংকের বিনিময়ে উক্ত আসামিদের বিনা মামলা ছাড়া ছেড়ে দেয় কর্ণফুলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ শরিফ।

সিএমপি হেডকোয়ার্টার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বিতর্কিত ওসি মুহাম্মদ শরিফকে বদলির আদেশ দেয় কমিশনার কিন্তু অদৃশ্য কারণে ও রহস্যজনক সমোঝোতায় সংশ্লিষ্ট থানায় তিনি এখনও দায়িত্বরত আছেন।

আরো পড়ুন: https://thecrimebd.net/?p=94393

সেনাবাহিনী কর্তৃক আটক চাঁদাবাজদের ছেড়ে দিলেন ওসি !

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান,ওসি শরিফ একটি সুবিধাজনক বিনিময়ের মাধ্যমে এখনও ঠিকে আছে যা কমিশনার স্যার জানেন না। তবে তার আদেশকৃত বদলির বিষয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা আসায় যে কোন সময় তাকে প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি মুহাম্মদ শরীফ কে ওভার ফোনে প্রশ্ন করলে তিনি বারবার মিটিং এ আছে বলে ব্যস্ততা দেখান এবং পরে আর উক্ত ফোন কল রিপ্লাই করেন না।

এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সার্কেল এসি জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তাছাড়া আমি দীর্ঘ দিন অসুস্থ ছিলাম তাই বিষয়টা আমলে আনিনি তবে আমি নিজেই খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

অপর দিকে কর্ণফুলি এন্টারপ্রাইজের কৈয়গ্রাম বালির সেলস সেন্টার থেকে চাঁদা না দেওয়ায় উক্ত সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে চাঁদাবাজরা যার নেপথ্য নায়ক ওসি মুহাম্মদ শরিফ বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

মেসাস কর্ণফুলি এন্টারপ্রাইজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও স্থানীয় বিএনপি নেতা মুবিনুল রশিদ চৌধুরী বলেন, আমাদের কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে সততার সাথে ও বৈধ ভাবে বালির মহাল ইজারাদার প্রতিষ্ঠান হতে বালি সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে বালি বিক্রি করে আসছে। কর্ণফুলী থানাধীন রড উঠান কৈয়গ্রাম সেতু রোডের পাশে জায়গা ভাড়া নিয়ে বৈধভাবে সেইল সেন্টারে বালুর ব্যবসা করে আসছি। এতে এলাকায় কিছু চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীরা আমাদের সেইল সেন্টারের উপর হামলা চালিয়ে সেন্টারের বিদ্যুৎ সংযোগ ও সিসি ক্যামেরার লাইন বিছিন্ন করে দেয় এবং সেন্টারে তালা মেরে দেয়। এই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আমি কর্ণফুলী এন্টারপ্রাইজের এমডি হিসেবে স্থানীয় আর্মি ক্যাম্প ও কর্ণফুলী থানায় অভিযোগ দাখিল করি যার তদন্ত চলমান রয়েছে।

অপর দিকে সৃষ্ট ঘটনার সংবাদ সংগ্রহে সরজমিন উক্ত থানাধীন এলাকায় খবর নিতে গেলে কর্ণফুলী থানার এই ওসি মুহাম্মদ শরিফের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ধরে স্থানীয় ভুক্তভোগী শ্রমিক দল ও যুবদলের নেতারা। একই সাথে হাজারো অভিযোগ নিয়ে দৌড়ে আসে অসংখ্য নারী পুরুষ ও স্থানীয় জনসাধারণ।

তাদের অভিযোগ, জুলদা এলাকায় বাংলা ক্যাট নামক একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দখলদারিত্ব ও সপ্তাহিক এবং মাসিক বড় অংকের মাসোহারা গ্রহণ করছে এই ওসি মুহাম্মদ শরিফ। যেখানে স্বাভাবিক ভাবে স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন ধরে উক্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নানান সুযোগ সুবিধা সহ চাকরি ও নষ্ট হয়ে যাওয়া মালামাল কেন্দ্র থেকে বা কেন্দ্রের ঠিকাদার থেকে কিনে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু স্থানীয় কয়েকজন চিহ্নিত ধোঁকাবাজদের সাথে আঁতাত করে এবং মোটা অংকের ভাগবাটোয়ারা নির্ধারণ করে অসহায় এইসব স্থানীয় বাসিন্দাদের রিজিকে হস্তক্ষেপ করে ক্ষান্ত হয়নি উল্টো কথিত কিছু পেশাদার ধান্দাবাজ এবং বিএনপি’র মতো বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেতা ও কর্মী পরিচয় দিয়ে ৫ আগষ্ট পরবর্তী কর্ণফুলী থানা এলাকায় ওসমান ও মামুন গ্রুপ নামে সংগঠিত একটি পেশাদার চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী চক্র বিভিন্ন অপরাধের রাজত্ব কায়েমের পাশাপাশি ওসি মুহাম্মদ শরিফ এর বলয়ে বাংলা ক্যাট এর ঐ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে অদ্যাবধি। তাদের ইশারায় শতভাগ পরিচালিত হচ্ছে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। যেখান থেকে সপ্তাহে ও ধারাবাহিক হারে মাসিক চুক্তি ভিত্তিক অবৈধ ও জাল দরপত্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ দামি মালামাল অন্যত্র সরিয়ে ফেলার মিশন ও উক্ত মালামাল বিক্রি করে যাচ্ছে গত ১০ মাস ধরে। আর তাদের এই অপরাধের নেপথ্যে সরাসরি নেতৃত্ব দিচ্ছে ওসি শরিফ। প্রথমে আড়ালে থাকলেও পরে স্থানীয় বহুল পরিচিত বিএনপি নেতা ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সংশ্লিষ্ট উপজেলার আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি নেতার গোপন যোগসাজশে ও প্রশ্রয়ে এই বিতর্কিত ওসি মুহাম্মদ শরিফ নানান অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।

ক্ষমতা ও টাকার নেশায় এমনই বেপরোয়া হয়ে ওঠে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সাথে মিলে কথিত যুবদল নেতা ওসমান ও মামুন এর বেতনভুক্ত সেনাপতি হিসেবে এবং তাদের নির্দেশে স্থানীয় সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন জুলুম শুরু করে। ওসমান ও মামুনের রোড ম্যাপ অনুযায়ী উপজেলার সকল প্রতিবাদী জনতা এবং একই দলের নিবেদিত ও পরীক্ষিত যুবদল, শ্রমিক দল,স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের উপরে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানির শিকারে ফেলেছেন পাশাপাশি করেছে আপোষ শর্তে মুক্তি দেয়ার নামে বাণিজ্য।

সম্প্রতি বাংলা ক্যাট নিয়ে স্থানীয় প্রায় ৫০০ পরিবারের ২ হাজার নারী পুরুষ ও বর্তমান সু সময়ে অবহেলিত যুব,শ্রমিক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা নিজেদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ও সকল প্রকার অন্যায় অপরাধের প্রতিবাদে বাংলা ক্যাট এর আশপাশ এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করলে চলমান মানববন্ধনে অতর্কিত ভাবে হাজারো অসহায় নারী পুরুষের আক্রমণ করে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা। অসহায় এইসব মানুষের দুর্ভাগ্যের কারণ হলো যে পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিবে এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মানববন্ধনে সহযোগিতা করবে কিন্তু তা না করে কর্ণফুলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি মুহাম্মদ শরিফ এর নেতৃত্বে পুলিশ সদস্য সহ স্থানীয় কিশোর গ্যাং মিলে প্রতিবাদরত শত শত নারী পুরুষ শিশু কিশোর এমনকি বৃদ্ধ মানুষের উপর হামলা চালায়। এতে অসংখ্য নারী পুরুষ শিশু আহত হয়েছে যার নথিপত্র ভিডিও ফুটেজ অনুসন্ধান টিমের নিকট সংরক্ষিত রয়েছে। তার চেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা হলো বিনা অপরাধে এলাকার সাধারণ মানুষকে ও যুবক কিশোরদের বিভিন্ন পন্থায় মামলা দিয়ে এখনও হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বিএনপি অনুসারী নেতা কর্মীদের। বিন্দু পরিমাণ অপরাধ নেই এমনকি এতটুকু প্রমান নেই এমন যুবককে মামলা জালে আটকে দিয়েছে ওসি শরিফ। শুধু মাত্র তার ও ওসমান মামুনের পথ পরিস্কার রাখার জন্য ও কেউই কোন প্রকার প্রতিবাদ করতে না পারার জন্য এহেন ঘৃণা স্বৈরাচারী অপকর্মে লিপ্ত এই সিন্ডিকেট।

অনুসন্ধানে আরও উঠে আসে বাংলা ক্যাট এর ম্যানেজমেন্টের পক্ষে দপ্তর পরিচালনাকারী প্রধান এডমিন কর্মকর্তা সাবেক সামরিক কর্মকর্তা জুলফিকার এর সঙ্গে কথিত যুবদল নেতা ওসমান ও মামুনের কৌশলী কর্মযজ্ঞের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এহেন অপকর্মের আনজাম দিয়ে আসছে ওসি মুহাম্মদ শরিফ। তাদের এই আপোষ মিমাংসা ও আলাপচারিতার বিভিন্ন তথ্য কল রেকর্ড ও ভয়েস অনুসন্ধান টিমের নিকট সংরক্ষিত রয়েছে।

অপর দিকে বাংলা ক্যাটের মালিক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তারা বিষয়টি নিয়োজিত অবৈধ ঠিকাদারের উপর হাল ছেড়ে দেয়।বাংলা ক্যাট এর অভ্যন্তরে নিয়োজিত কয়েকজন কর্মকর্তার কাছ থেকে জানা যায়, বিগত স্বৈরাচার সরকারের এমপি মন্ত্রী ও পলাতক ব্যবসায়ীর মহা মূল্যবান বেশ কিছু হরেক রকমের মালামাল অবৈধ ভাবে ডিপো ভুক্ত করা হয়েছে যার মূল্য হাজার কোটি টাকার মতো। এই ওসি শরিফ ও কথিত যুবদল নেতা এবং পর্দার আড়ালে থাকা সিনিয়র বিএনপি নেতা উক্ত হাজার কোটি টাকার মালামাল বিনা কাগজপত্রে পুলিশের সহযোগিতায় পাচারের অপচেষ্টায় রাতদিন পরিশ্রম করছে। উক্ত সকল প্রকার মূল্যবান মালামালের প্রাথমিক সিজার লিস্ট ও অবশিষ্ট বিবিধ মালামালের তালিকা বিভিন্ন দিক থেকে সংরক্ষণ করেছে অনুসন্ধানী টিম।

তদন্ত প্রতিবেদনের সারর্মম নিয়ে সিএসপি’র বন্দর জোনের ডিসি আবু বক্কর সিদ্দিকী কে অবগত করলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, সমস্ত বিষয় টা বুঝে নিলাম। তাছাড়া আমি জয়েন্ট করেছি বেশি দিন হয়নি তবে পুরো অভিযোগের বর্ণনা শুনে যা অনুমান করলাম তা হলো এমন জঘণ্য ও ঘৃন্য কাজে যদি রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মতো একজন পুলিশ অফিসার জড়িয়ে যায় বা জড়িয়ে থাকে তবে এটা মারাত্মক দুঃখজনক। আমি মাননীয় কমিশনার স্যার এর সাথে কথা বলে যথা উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন———-

এস এম আকাশ: চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বাণিজ্য বান্ধব থানা এলাকার মধ্যে কর্ণফুলী অন্যতম। দেশের বাণিজ্য খাতে সর্বশ্রেষ্ঠ জোগান দাতা সোনালী নদী ও সম্মৃদ্ধির স্বর্ণদ্বার হিসেবে বিবেচিত বহতা নদী কর্ণফুলীর তীর ঘেষে এই উপজেলার নাম করণ হয় কর্ণফুলী।

বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমল থেকেই এ জনপদে দখল বেদখলের মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও গায়ের জোরে বহু অন্যায় অপরাধ সংঘটিত করেছে রাজনীতিবিদ ও পুলিশের অবাধ অবৈধ অপকর্মের আনজাম দিতে। বিগত ৫ আগষ্ট পরবর্তী স্থানীয় জনমনে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছিল যে হয়তো এসব এখন বন্ধ হবে। কিন্তু “ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও বারা বাধেঁ” বিষয় টা এমনই। প্রাসঙ্গিক ও সৃষ্ট বহু ঘটনার অন্তরালে সংশ্লিষ্ট থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ শরিফ এর সরাসরি যোগসাজশ রয়েছে মর্মে সরাসরি অভিযোগ উঠে আসে।

উপজেলার রড উঠান কৈয়গ্রাম সেতু রোডের পাশে কর্নফুলী এন্টারপ্রাইজ এর বালি সেন্টারে ১০/ ১২ জন চাঁদাবাজ কৈয়গ্রাম সেতু রোডে বালুর সেইল সেন্টারে চাঁদাবাজী করতে এসে হাতেনাতে সেনাবাহিনীর কাছে ৪ জন আটক হন। বাকিরা পালিয়ে যায়। আটককৃতরা হলেন- আরাফাত হোসেন (২২) পিতা: নুর মোহাম্মদ,তাছিম,মোবারক ও হাফিজুর রহমান লিটন। চাঁদাবাজদেরকে সেনাবাহিনীর জিগ্যাসাবাদ শেষে সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্ণফুলী থানায় হস্তান্তর করে। কিন্তু থানা থেকে মোটা অংকের বিনিময়ে উক্ত আসামিদের বিনা মামলা ছাড়া ছেড়ে দেয় কর্ণফুলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ শরিফ।

সিএমপি হেডকোয়ার্টার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বিতর্কিত ওসি মুহাম্মদ শরিফকে বদলির আদেশ দেয় কমিশনার কিন্তু অদৃশ্য কারণে ও রহস্যজনক সমোঝোতায় সংশ্লিষ্ট থানায় তিনি এখনও দায়িত্বরত আছেন।

আরো পড়ুন: https://thecrimebd.net/?p=94393

সেনাবাহিনী কর্তৃক আটক চাঁদাবাজদের ছেড়ে দিলেন ওসি !

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান,ওসি শরিফ একটি সুবিধাজনক বিনিময়ের মাধ্যমে এখনও ঠিকে আছে যা কমিশনার স্যার জানেন না। তবে তার আদেশকৃত বদলির বিষয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা আসায় যে কোন সময় তাকে প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি মুহাম্মদ শরীফ কে ওভার ফোনে প্রশ্ন করলে তিনি বারবার মিটিং এ আছে বলে ব্যস্ততা দেখান এবং পরে আর উক্ত ফোন কল রিপ্লাই করেন না।

এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সার্কেল এসি জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তাছাড়া আমি দীর্ঘ দিন অসুস্থ ছিলাম তাই বিষয়টা আমলে আনিনি তবে আমি নিজেই খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

অপর দিকে কর্ণফুলি এন্টারপ্রাইজের কৈয়গ্রাম বালির সেলস সেন্টার থেকে চাঁদা না দেওয়ায় উক্ত সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে চাঁদাবাজরা যার নেপথ্য নায়ক ওসি মুহাম্মদ শরিফ বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

মেসাস কর্ণফুলি এন্টারপ্রাইজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও স্থানীয় বিএনপি নেতা মুবিনুল রশিদ চৌধুরী বলেন, আমাদের কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে সততার সাথে ও বৈধ ভাবে বালির মহাল ইজারাদার প্রতিষ্ঠান হতে বালি সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে বালি বিক্রি করে আসছে। কর্ণফুলী থানাধীন রড উঠান কৈয়গ্রাম সেতু রোডের পাশে জায়গা ভাড়া নিয়ে বৈধভাবে সেইল সেন্টারে বালুর ব্যবসা করে আসছি। এতে এলাকায় কিছু চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীরা আমাদের সেইল সেন্টারের উপর হামলা চালিয়ে সেন্টারের বিদ্যুৎ সংযোগ ও সিসি ক্যামেরার লাইন বিছিন্ন করে দেয় এবং সেন্টারে তালা মেরে দেয়। এই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আমি কর্ণফুলী এন্টারপ্রাইজের এমডি হিসেবে স্থানীয় আর্মি ক্যাম্প ও কর্ণফুলী থানায় অভিযোগ দাখিল করি যার তদন্ত চলমান রয়েছে।

অপর দিকে সৃষ্ট ঘটনার সংবাদ সংগ্রহে সরজমিন উক্ত থানাধীন এলাকায় খবর নিতে গেলে কর্ণফুলী থানার এই ওসি মুহাম্মদ শরিফের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ধরে স্থানীয় ভুক্তভোগী শ্রমিক দল ও যুবদলের নেতারা। একই সাথে হাজারো অভিযোগ নিয়ে দৌড়ে আসে অসংখ্য নারী পুরুষ ও স্থানীয় জনসাধারণ।

তাদের অভিযোগ, জুলদা এলাকায় বাংলা ক্যাট নামক একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দখলদারিত্ব ও সপ্তাহিক এবং মাসিক বড় অংকের মাসোহারা গ্রহণ করছে এই ওসি মুহাম্মদ শরিফ। যেখানে স্বাভাবিক ভাবে স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন ধরে উক্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নানান সুযোগ সুবিধা সহ চাকরি ও নষ্ট হয়ে যাওয়া মালামাল কেন্দ্র থেকে বা কেন্দ্রের ঠিকাদার থেকে কিনে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু স্থানীয় কয়েকজন চিহ্নিত ধোঁকাবাজদের সাথে আঁতাত করে এবং মোটা অংকের ভাগবাটোয়ারা নির্ধারণ করে অসহায় এইসব স্থানীয় বাসিন্দাদের রিজিকে হস্তক্ষেপ করে ক্ষান্ত হয়নি উল্টো কথিত কিছু পেশাদার ধান্দাবাজ এবং বিএনপি’র মতো বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেতা ও কর্মী পরিচয় দিয়ে ৫ আগষ্ট পরবর্তী কর্ণফুলী থানা এলাকায় ওসমান ও মামুন গ্রুপ নামে সংগঠিত একটি পেশাদার চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী চক্র বিভিন্ন অপরাধের রাজত্ব কায়েমের পাশাপাশি ওসি মুহাম্মদ শরিফ এর বলয়ে বাংলা ক্যাট এর ঐ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে অদ্যাবধি। তাদের ইশারায় শতভাগ পরিচালিত হচ্ছে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। যেখান থেকে সপ্তাহে ও ধারাবাহিক হারে মাসিক চুক্তি ভিত্তিক অবৈধ ও জাল দরপত্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ দামি মালামাল অন্যত্র সরিয়ে ফেলার মিশন ও উক্ত মালামাল বিক্রি করে যাচ্ছে গত ১০ মাস ধরে। আর তাদের এই অপরাধের নেপথ্যে সরাসরি নেতৃত্ব দিচ্ছে ওসি শরিফ। প্রথমে আড়ালে থাকলেও পরে স্থানীয় বহুল পরিচিত বিএনপি নেতা ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সংশ্লিষ্ট উপজেলার আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি নেতার গোপন যোগসাজশে ও প্রশ্রয়ে এই বিতর্কিত ওসি মুহাম্মদ শরিফ নানান অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।

ক্ষমতা ও টাকার নেশায় এমনই বেপরোয়া হয়ে ওঠে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সাথে মিলে কথিত যুবদল নেতা ওসমান ও মামুন এর বেতনভুক্ত সেনাপতি হিসেবে এবং তাদের নির্দেশে স্থানীয় সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন জুলুম শুরু করে। ওসমান ও মামুনের রোড ম্যাপ অনুযায়ী উপজেলার সকল প্রতিবাদী জনতা এবং একই দলের নিবেদিত ও পরীক্ষিত যুবদল, শ্রমিক দল,স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের উপরে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানির শিকারে ফেলেছেন পাশাপাশি করেছে আপোষ শর্তে মুক্তি দেয়ার নামে বাণিজ্য।

সম্প্রতি বাংলা ক্যাট নিয়ে স্থানীয় প্রায় ৫০০ পরিবারের ২ হাজার নারী পুরুষ ও বর্তমান সু সময়ে অবহেলিত যুব,শ্রমিক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা নিজেদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ও সকল প্রকার অন্যায় অপরাধের প্রতিবাদে বাংলা ক্যাট এর আশপাশ এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করলে চলমান মানববন্ধনে অতর্কিত ভাবে হাজারো অসহায় নারী পুরুষের আক্রমণ করে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা। অসহায় এইসব মানুষের দুর্ভাগ্যের কারণ হলো যে পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিবে এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মানববন্ধনে সহযোগিতা করবে কিন্তু তা না করে কর্ণফুলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি মুহাম্মদ শরিফ এর নেতৃত্বে পুলিশ সদস্য সহ স্থানীয় কিশোর গ্যাং মিলে প্রতিবাদরত শত শত নারী পুরুষ শিশু কিশোর এমনকি বৃদ্ধ মানুষের উপর হামলা চালায়। এতে অসংখ্য নারী পুরুষ শিশু আহত হয়েছে যার নথিপত্র ভিডিও ফুটেজ অনুসন্ধান টিমের নিকট সংরক্ষিত রয়েছে। তার চেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা হলো বিনা অপরাধে এলাকার সাধারণ মানুষকে ও যুবক কিশোরদের বিভিন্ন পন্থায় মামলা দিয়ে এখনও হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বিএনপি অনুসারী নেতা কর্মীদের। বিন্দু পরিমাণ অপরাধ নেই এমনকি এতটুকু প্রমান নেই এমন যুবককে মামলা জালে আটকে দিয়েছে ওসি শরিফ। শুধু মাত্র তার ও ওসমান মামুনের পথ পরিস্কার রাখার জন্য ও কেউই কোন প্রকার প্রতিবাদ করতে না পারার জন্য এহেন ঘৃণা স্বৈরাচারী অপকর্মে লিপ্ত এই সিন্ডিকেট।

অনুসন্ধানে আরও উঠে আসে বাংলা ক্যাট এর ম্যানেজমেন্টের পক্ষে দপ্তর পরিচালনাকারী প্রধান এডমিন কর্মকর্তা সাবেক সামরিক কর্মকর্তা জুলফিকার এর সঙ্গে কথিত যুবদল নেতা ওসমান ও মামুনের কৌশলী কর্মযজ্ঞের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এহেন অপকর্মের আনজাম দিয়ে আসছে ওসি মুহাম্মদ শরিফ। তাদের এই আপোষ মিমাংসা ও আলাপচারিতার বিভিন্ন তথ্য কল রেকর্ড ও ভয়েস অনুসন্ধান টিমের নিকট সংরক্ষিত রয়েছে।

অপর দিকে বাংলা ক্যাটের মালিক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তারা বিষয়টি নিয়োজিত অবৈধ ঠিকাদারের উপর হাল ছেড়ে দেয়।বাংলা ক্যাট এর অভ্যন্তরে নিয়োজিত কয়েকজন কর্মকর্তার কাছ থেকে জানা যায়, বিগত স্বৈরাচার সরকারের এমপি মন্ত্রী ও পলাতক ব্যবসায়ীর মহা মূল্যবান বেশ কিছু হরেক রকমের মালামাল অবৈধ ভাবে ডিপো ভুক্ত করা হয়েছে যার মূল্য হাজার কোটি টাকার মতো। এই ওসি শরিফ ও কথিত যুবদল নেতা এবং পর্দার আড়ালে থাকা সিনিয়র বিএনপি নেতা উক্ত হাজার কোটি টাকার মালামাল বিনা কাগজপত্রে পুলিশের সহযোগিতায় পাচারের অপচেষ্টায় রাতদিন পরিশ্রম করছে। উক্ত সকল প্রকার মূল্যবান মালামালের প্রাথমিক সিজার লিস্ট ও অবশিষ্ট বিবিধ মালামালের তালিকা বিভিন্ন দিক থেকে সংরক্ষণ করেছে অনুসন্ধানী টিম।

তদন্ত প্রতিবেদনের সারর্মম নিয়ে সিএসপি’র বন্দর জোনের ডিসি আবু বক্কর সিদ্দিকী কে অবগত করলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, সমস্ত বিষয় টা বুঝে নিলাম। তাছাড়া আমি জয়েন্ট করেছি বেশি দিন হয়নি তবে পুরো অভিযোগের বর্ণনা শুনে যা অনুমান করলাম তা হলো এমন জঘণ্য ও ঘৃন্য কাজে যদি রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মতো একজন পুলিশ অফিসার জড়িয়ে যায় বা জড়িয়ে থাকে তবে এটা মারাত্মক দুঃখজনক। আমি মাননীয় কমিশনার স্যার এর সাথে কথা বলে যথা উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।