মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া: কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার নুরুল আবছার বদু ও কুতুবদিয়া উপজেলার ইসহাক মেম্বারের মালিকানাধীন ট্রলার ব্যবহার করে সাগরে ডাকাতি সংগঠিত হচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর মোহনা ও মহেশখালী উপকূলের মোহনায় অভিযান চালিয়ে র্যাব-১৫ এর একটি দল ৬জন জলদস্যুকে আটক করছে।
এসব জলদস্যুদের অধিকাংশের বাড়ি কুতুবদিয়া। আটককৃত জলদস্যুদের কাছ এসব তথ্য পেয়েছে র্যাব-১৫। পরে আজ শুক্রবার (২৬ জানুয়ারী) দুপুরে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ৬নম্বর জেটিঘাটে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানায় র্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৫ এর কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মহেশখালী উপকূলবর্তী সাগরে র্যাব সদস্যরা একটি ট্রলার থামানোর নির্দেশ দিলে জলদস্যুরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলিছূড়ে। এসময় ধাওয়া করে ৬ জন জলদস্যুকে আটক করা হয়েছে।
আটককৃতরা হল-কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশিখালী ইউনিয়েনের মাহমুদ উল্লাহর ছেলে মো. বাদশা (২৭), কৈয়ারবিল ইউনিয়নের মুরালিয়া সিকদার পাড়ার রহিম উল্লাহর ছেলে মো. মারুফুল ইসলাম (২২), দক্ষিণ ধুরং ইউনিয়নের জুলেখা বিবির পাড়ার মোহাম্মদ ইসমাইলের ছেলে রায়হান উদ্দিন (২২), পেঁচারপাড়ার কবির আহমদের ছেলে এরশাদুল ইসলাম (২০), সাহারুম সিকদার পাড়ার মো. ইউনুছের ছেলে মো. রাফী (১৯) ও চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার নারিকেলতলা এলাকার মো. আবু বক্করের ছেলে মো. আলামিন (২৫)।
র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন উপকূলে জলদস্যুরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে খবর পায় র্যাব।
প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ১০-১২ জনের জলদস্যুর একটি দল ট্রলারে করে গত ২১ জানুয়ারি ডাকাতির জন্য বঙ্গোপসাগরে যায়। পরদিন তারা মাছ ধরার একটি ট্রলারে ডাকাতি করে। এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী এক জেলের তথ্যে কাজ শুরু করে র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২৫ জানুয়ারী (বৃহস্পতিবার) গভীর রাতে মহেশখালী উপকূলবর্তী সাগরে সন্দেহভাজন একটি ট্রলার দেখতে পেয়ে থামার নির্দেশ দেন র্যাব সদস্যরা। এ সময় জলদস্যুরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি করতে শুরু করলে আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা গুলি করে র্যাবও। এক পর্যায়ে ডাকাতি হওয়া ট্রলারটি জব্দ করা হয়।
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরো বলেন, “ওই ট্রলার থেকে ৬জন জলদস্যুকে আটক করা গেলেও ৪-৫ জন জলদস্যু সাগরে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় ট্রলারে তল্লাশি করে এবং আটকদের কাছ থেকে দেশীয় তিনটি বন্দুক, ১৩টি গুলি ও তিনটি দা উদ্ধার করা হয়।”
আটকদের বরাতে কর্নেল সাজ্জাদ আরো বলেন, পেকুয়া উপজেলার নুরুল আবছার বদু, জালাল আহমদ ও কুতুবদিয়া উপজেলার মো: ইসহাক মেম্বার নিজেদের মালিকানাধীন ট্রলারে করে এক সপ্তাহ আগে তাদের সাগরে ডাকাতির উদ্দেশ্যে পাঠান। পরে আইনশৃংখলা বাহিনীকে বিভ্রান্ত করতে জলদস্যুরা পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী এলাকার ‘কালু কোম্পানির’ মালিকাধীন একটি ট্রলার জেলেদের মারধর করে নিজেদের কব্জায় নেয়। পরে তারা নিজেদের ট্রলারটি সাগরে নিরাপদ স্থানে রেখে কালু কোম্পানির ট্রলার নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি শুরু করে বলে র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান।
তিনি বলেন, আটক জলদস্যুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় নতুন করে মহেশখালী থানায় মামলা জলদুস্যদের বিরুদ্ধে র্যাব-১৫ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।




