দি ক্রাইম ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরের প্রবেশমুখ বাকলিয়া থানার নতুন ব্রিজ এলাকায় চেকপোস্টে তল্লাশির সময় ইয়াবাসহ আটক ইমতিয়াজ হোসেন নামে এক পুলিশ সদস্যকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জব্দ হওয়া ১ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা পরে গায়েব করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে নগরের বাকলিয়া থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে ঢাকা পোস্টে ২২ ডিসেম্বর ‘ইয়াবা পাচারে বিচারকের গানম্যান, ধরেও ছেড়ে দিল পুলিশ’ শিরোনামে একটি নিউজ প্রকাশিত হয়।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম. আলাউদ্দিন মাহমুদের নজরে আসে প্রতিবেদনটি। এরপর ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত নিউজটি সরাসরি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ১২ জানুয়ারি এ অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনারকে (ডিসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলাটি রেকর্ড এবং বিচারকের স্বপ্রণোদিত আদেশের বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম আদালতের নাজির আবুল কালাম আজাদ।
আদেশে বলা হয়েছে, “চট্টগ্রাম নগরের প্রবেশমুখ নতুন ব্রিজ এলাকায় বাকলিয়া থানার চেকপোস্টে তল্লাশির সময় ১ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ ইমতিয়াজ হোসেন নামে এক পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়। ইমতিয়াজ কক্সবাজার জেলা আদালতের এক বিচারকের গানম্যান হিসেবে কর্মরত। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ পরিচয় প্রদর্শন করার পর বাকলিয়া থানার কর্মকর্তারা তাকে ছেড়ে দেন এবং উদ্ধারকৃত ইয়াবা জব্দ না করে গায়েব করে ফেলেন।”
আদেশে আরও বলা হয়েছে, “প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এরূপ সন্দেহমূলক অনুমান হয় যে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর ৪৬ ধারার বিধানমতে মাদকদ্রব্য অপরাধসমূহ আমলযোগ্য অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও উক্ত আইনের অধীন সংঘটিত আমলযোগ্য অপরাধের অভিযোগকে কোনো ব্যক্তিকে মাদকসহ আটক করার পরও বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের না করে পিআরবি এর ২৪৪ ধারা লঙ্ঘন এবং পুলিশ আইনের ২৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।”
এছাড়াও প্রকাশিত সংবাদ পাঠ করে আমার মনে আরো সন্দেহমুলক অনুমান জন্মায় যে, প্রকাশিত সংবাদ মোতাবেক বর্ণিত ঘটনার তারিখ ও সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ চেকপোস্টে দায়িত্বপালনকারী পুলিশ সদস্যগন তল্লাশির সময় ইমতিয়াজ হোসেন নামে এক পুলিশ সদস্যকে ১ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করলেও, উক্ত আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের না করে তাকে ছেড়ে দেওয়া এবং উদ্ধারকৃত বিপুল পরিমান ইয়াবা জব্দ তালিকা মুলে জব্দ না করে লোপাট করায়, তারা শুধু তাদের উপর অর্পিত সরকারি দায়িত্বে অবহেলা ও ক্ষমতার অপব্যবহারই করেননি, বরং ফৌজদারি অপরাধ করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়। কেননা, প্রতিবেদনে উল্লিখিত বর্ণনা মোতাবেক তাদের উক্তরূপ কার্যে দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ২০১, ২১২, ২১৭ ও ২১৮ ধারার অপরাধ সংঘটন হয়ে থাকতে পারে, যা তদন্ত হওয়া আবশ্যক মর্মে আমি মনে করি।”
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম. আলাউদ্দিন মাহমুদ নির্দেশ দিয়েছেন, ডিসি (দক্ষিণ), সিএমপি, চট্টগ্রামকে আগামী ১২ জানুয়ারি এর মধ্যে বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করবেন।
এই আদেশের অনুলিপি মহানগর দায়রা জজ, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের মহাপুলিশ (আইজিপি) এবং সিএমপি পুলিশ কমিশনার বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।




