নিজস্ব প্রতিবেদক: একদল ঝানু প্রতারকের খপ্পরে পড়েছেন এক যুবক। নাম মফিজ উদ্দীন। থাকেন বায়েজিদ থানার আতুরার ডিপু এলাকার এক আবাসিক এলাকায়। তার কাছ থেকে নানা কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন নগদ টাকা ও আইএফআইসি ব্যাংকের তিনটি খালি চেকও। তারা মোটা অংকের চাঁদাবাজি করার জন্য প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগে জানিয়েছেন প্রতারনার শিকার মফিজ উদ্দীন।
তিনি সবার সহযোগিতা চেয়েছেন। এসব দুর্বৃত্তদের সাথে আগে থেকে জড়িত আছেন আদালতের এক আইনজীবীও। তিনি তাদের কু-পরামর্শ দিয়ে ১৪ লক্ষ টাকার একটি মিথ্যা চেকের মামলাও টুকে দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে। ঘঠনার শিকার এই যুবক আর কোন উপান্তর না দেখে টাকা এবং দেয়া চেক উদ্ধার করার জন্য চট্টগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-১ এ এই মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে অপরাধ তদন্ত সংস্থা (সিআইডি) কাছে প্রেরণ ও দ্রুত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্ছ সহকারী।
মামলায় ১০জনকে আসামী করা হয়। গত মঙ্গলবার তিনি চট্টগ্রাম আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। তিনি বহু কষ্টে স্ত্রী পুত্রদের নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করেন বলে জানা গেছে।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, মফিজ উদ্দীন,আনোয়ার খাতুন, মোঃ শফি তালুকদার,নবী হোসেন ও সালাউদ্দীন গং পরস্পর আত্মীয় হন। চায়না অথনৈতিক জোন কর্তৃক কিছু জমি অধিগ্রহণ করা হলে মফিজ উদ্দীনকে প্রস্তাব দেয়া হয় টাকা উত্তোলনের জন্য একটি আমমোক্তারনামা সৃজনের। এতে মফিজ উদ্দীন সরল মনে তাদের প্রস্তাবে সায় দেন। ২০২৪সালের ৭ ফেব্রুয়ারী মাসে আনোয়ারা সদর সাব-রেজিষ্ট্রি আফিসে হাজির হয়ে তারা একটি আমমোক্তারনামা দলিল নং-৭৫৬/২৪ইং সৃজন করেন। সংঘবদ্ধ চক্রের এই সদস্যরা তিনদিন পর ১০/২/২৪ইং তারিখে একটি আন-রেজিষ্ট্রেট চুক্তিনামা সম্পাদন করেন তার সাথে। চুক্তিনামা অনুযায়ী তার কাছ থেকে তারা নগদ ৩ লক্ষ টাকা আইএফআইসি ব্যাংক আতুরার ডিপু শাখার তিনটি খালি চেক গ্রহণ করেন। শর্তে বলা হয়, এলএ শাখা হ’তে টাকা তুলে দেয়ার জন্য চেকগুলো ফেরতযোগ্য।
সংশ্লিষ্ট সুত্রটি আরো জানান, মফিজ উদ্দীন তাকে দেয়া আমমোক্তার নামা দলিল মুলে চট্টগ্রাম এলএ শাখায় টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। যাচাই বাছাইকালে দেখা যায়, নবী হোসেন ১৪৮৭,১৪৪৯,১৪৫৪,১৪৭২,১৪৩০,১৪৬০ দাগের জমির ক্ষতিপুরণের টাকা আগেই উত্তোলন করেন। আর সালাউদ্দীনগং এর পিতা নেজাম উদ্দীন উক্ত জমি বিক্রি করে স্বত্ত্বচ্যুত হন। সহায় সম্বলহারা এই যুবক এ ঘটনায় হতবম্ব হয়ে পড়েন। তিনি তাৎক্ষনিক টাকা ও চেক ফেরতের দাবী জানান। কিন্তু কার কথা কে শুনে, প্রতারক চক্রের সদস্য জালিয়াতকারী নবী হোসেন তাকে দেয়া চেক নম্বারের ৯৯৬১৬৯৮ অনুবলে খালি চেকে ১৪ লক্ষ টাকা বসিয়ে এবং টাকা দাবী করে সিআর-৭১৬/২৫ইং,২৯/৯/২৫ইং তারিখে চট্টগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। নেগুসিয়েবল ইন্সট্রমেন্ট এক্ট ১৮৮১এর ১৩৮ ধারায় এ মামলা দায়ের করা হয়।
মফিজ উদ্দীনগং এর সাথে আগে থেকেই উক্ত চক্রের সদস্যদের সাথে মামলা মোকাদ্দমা নিয়ে শক্রতা ছিল। মাঝে তারা সব শক্রতা ভুলে এক হয়ে যান। মফিজ বুঝতে পারেনি এই সমঝোতা ছিল তার সাথে লোক দেখানো। ভবিষ্যত কাল হয়ে দাঁড়াবে তাও বুঝতে পারেনি তিনি। ঠিকই নবী সালাউদ্দীন শফি চক্র তাকে ফাঁদে ফেলে মিথ্যা চেকের মামলা দিয়ে পূবের শক্রতা হাসিল করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বলে অভিযোগে জানিয়েছেন ভুত্তভোগি মফিজ উদ্দীন। তাকে জেলে পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের দ্রুত গ্রেফতার দাবী করেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান,প্রতারক ও ভুমিদস্যু মামলাবাজ চক্রের এসব সদস্য সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসর ও সদস্য হয়। তাদের বিরুদ্ধে খুন প্রতারনা হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। বাড়ি আনোয়ারা হলেও তারা বেশিরভাগ সময় আদালত ও চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়।




