ঢাকা ব্যুরো: আজ ৬ নভেম্বর ২০২২ তারিখ রবিবার ঢাকার শেরে বাংলা নগরস্থ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সভাকক্ষে ‘কমিউনিটি পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে পর্যালোচনা’ শীর্ষক একটি পরামর্শমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি প্রধান অতিথি এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় মূখ্য আলোচক হিসেবে অনলাইনে যুক্তরাষ্ট্র হতে যুক্ত ছিলেন সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ও জাতিসংঘের মহাসচিবের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সায়মা ওয়াজেদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য সেবার ব্যাপ্তি বাড়ানো এবং একে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই করতে জনবল গড়ে তোলার পাশাপাশি পর্যাপ্ত বাজেট দেয়া জরুরি। বর্তমান সরকার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে ১৮ ভাগ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ কোননা কোনোভাবে মানসিক রোগে ভুগছে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই হার ১২ ভাগ। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কন্যা মিস সায়মা ওয়াজেদ বেশ কিছু উদ্যোগ ও প্রস্তাব দিয়েছেন। এগুলো দেশের মানুষের জন্য কল্যাণের হবে। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে আমরা মিস সায়মা ওয়াজেদের প্রস্তাবগুলোর প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও মানসিক চিকিৎসার প্রয়োগ করা হবে। পাবনা মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটকে চিকিৎসার পাশাপাশি অত্যাধুনিক মানের ট্রেনিং সেন্টার করা হবে। করোনায় বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এশিয়ায়, এমনকি বিশ্বেও রোল মডেল হতে পারবে।
অনুষ্ঠানে মূল আলোচনায় অংশ নিয়ে সায়মা ওয়াজেদ বলেন, বাংলাদেশে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের স্বল্পতা প্রকট। তথাপি মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আইন, নীতিমালা ও কৌশলপত্র প্রণয়নসহ বাংলাদেশের বেশ কিছু প্রণিধানযোগ্য কাজ রয়েছে। এখন প্রয়োজন তৃণমূল পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া। মানসিক স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি জনগণের ভেতরে মানসিক সুস্থতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করাও জরুরি। তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কৌশলপত্রের আলোকে ভবিষ্যতে করণীয় ও কর্মকৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বলেন, স্বল্পমেয়াদী ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে প্রণীত ৫ম সেক্টর প্রোগ্রামের আওতায় পৃথক একটি অপারেশনাল প্ল্যানের মাধ্যমে উন্নয়ন বাজেটে একে অন্তর্ভূক্তকরণ ও পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরে পৃথক শাখা সৃষ্টি করা যেতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম তৃণমূল পর্যায়ে থেকে শুরু করে টারশিয়ারী পর্যায়ে পর্যন্ত একটি সুসঙ্ঘত মানসিক স্বাস্থ্য সেবা পদ্ধতি প্রতিষ্ঠর জন্য তিনি তাঁর অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সকল সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি অন্যান্য সকল সেক্টর, নাগরিক ও সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমকর্মী ও শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগীতা একান্তভাবে প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের আয়োজক এনসিডিসি প্রোগ্রামের লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ রোবেদ আমিন, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, এনডিসি সুরক্ষা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গোলাম রব্বানী, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তা বৃন্দ। অনুষ্ঠানে ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ, সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার বর্তমান পরিস্থিতির উপর প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন।




