বান্দরবান প্রতিনিধি: গণমাধ্যমকর্মীদের অংশগ্রহণে “সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের গুরুত্ব এবং গুজব প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা” শীর্ষক মতবিনিময় সভা আজ বুধবার(১০ ডিসেম্বর)সকালে বান্দরবান সদর উপজেলা সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিসের সহযোগিতায়, পিআইডি চট্টগ্রাম এ মত বিনিময় সভার আয়োজন করেন। এতে বান্দরবানের সংবাদকর্মীগণ অংশগ্রহণ করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন পিআইডি চট্টগ্রামের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মো. সাঈদ হাসান।
প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মান্না দে, মেডিকেল অফিসার অভিজিৎ ঘোষ, জেলা তথ্য অফিসার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, বান্দরবান দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অংচ মং মারমা প্রমুখ।
তথ্য অফিসার জি. এম সাইফুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম পিআইডির সিনিয়র তথ্য অফিসার বাপ্পী চক্রবর্তী।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বর্তমান সময়ে গুজব ও মিথ্যা নিউজ বা ফেইক নিউজ সমাজে অনেক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুজবের কারণে সমাজের অনেকে বিভ্রান্ত হন, না জেনে শুনে কোন বিষয় বিশ্বাস করে থাকেন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করেন। এতে করে সমাজের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, মানুষ আতংকে ভুগতে থাকে। তাই গুজবের বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের আরো সচেতন থাকতে হবে। সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় বিশেষ করে তথ্য অধিদফতর গুজব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে কাজ করছে ।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন- বান্দরবান পার্বত্য জেলার প্রথম আলোর প্রতিনিধি বুদ্ধজ্যাতি চাকমা, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির প্রতিনিধি মংখিং মারমা, এটিএন বাংলার প্রতিনিধি মিনারুল হক, নয়া দিগন্তের জেলা প্রতিনিধি আবুল বাশার নয়ন প্রমূখ।
সাংবাদিকগণ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন এ,আই অ্যাপস ব্যবহার করে ভুয়া ছবি, ভিডিও, অডিও ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। এ ধরনের গুজব সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে, ব্যক্তিগত সম্মানহানি ঘটাচ্ছে এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে উঠছে। এ পরিস্থিতিতে সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং জনগণকে সঠিক তথ্য প্রদান নিশ্চিত করতে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, দেশের উন্নয়নে গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে । আগামী নির্বাচনে সচ্চতা, জবাবদিহিতা ও একটি সুন্দর গ্রহণযোগ্য পরিবেশ উপহার দিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনকে ঘিরে জনগণের আস্থা বৃদ্ধি, সঠিক তথ্য প্রচার, ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রতিরোধ এবং ভোটারদের সচেতন করতে সাংবাদিকদের সক্রিয় উপস্থিতি ও দায়িত্বশীল ভূমিকা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। আমরা বিশ্বাস করি, সাংবাদিকরা তাদের ন্যায়নিষ্ঠতা, পেশাগত সততা ও দায়িত্ববোধ দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে সাহায্য করবেন। তাদের নিরপেক্ষ প্রতিবেদনে জনগণ সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবে ।
উপপ্রধান তথ্য অফিসার বলেন, গুজব শনাক্তকরণে গণমাধ্যমগুলোর নিজস্ব ফ্যাক্টচেকার থাকা দরকার। বিকল্প উৎস হতে তথ্য যাচাই, গুজবের বিপরীতে প্রকৃত তথ্য প্রচার করে গণমাধ্যম গুজবকে প্রতিহত করতে পারে। গুজব প্রতিরোধে আরও একটি কার্যকর উপায় হলো মিডিয়া লিটারেসি বা গণমাধ্যম সাক্ষরতা। যার ফলে একজন পাঠক বা দর্শক গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণ, সমালোচনা ও মূল্যায়ন করতে সক্ষম হবে এবং সহজেই প্রকৃত সংবাদ ও গুজবকে আলাদা করতে পারবে।




