মিরসরাই প্রতিনিধি : মিরসরাইয়ে নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীদের অন্যতম পেশা শীতল পাটি বোনা। বর্ষার মৌসুম এলে বাইরে গৃহস্থালী কাজের চাপ কম থাকায় ঘরে ঘরে নারীরা ব্যস্ত সময় পার করে রঙ্গ বে রঙ্গের শীতল পাটি বোনার কাজে। এর কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার করা হয় পাটিবেত। ৬ফুট পাশ সাত ফুট দৈঘ্যের একটি শীতল পাটি বুনতে সময় লাগে ৫-৭ দিন। আর ভালো মানের একটি শীতল পাটি বিক্রী হয় ৯’শ-২হাজার টাকায়। উপজেলার মিঠাছরা বাজার এই শীতল পাটির জন্য প্রশিদ্ধ। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকার ক্রেতারা আগেরদিন রাতেই এসে বাজারে পৌঁছেন। ভোরে ফজর নামাজের পরপর জমে উঠে বিকিকিনি। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বিদেশে রপ্তানী হয় এইস বাজারের শীতল পাটি। প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকার শীতল পাটি বেচাকেনা কেনা হয় এই বাজারে।

শীতল পাটির প্রধান উপকরণ হলো সবুজ রঙের পাটিবেত গাছ। স্থানীয় ভাষায় এটিকে পাটিপাতা বলে। বাড়ির আশে পাশের পতিত জমি কিংবা নিমাঞ্চলে পাটিবেত চাষ হয়। ৮০টি পাটিবেত ১৫০-১৭০ টাকায় বিক্রি হয় স্থানীয় বাজারে । এই পাটিবেত কিনে গ্রামের মহিলারা বেত বের করে লাল, নীল, সবুজ বিভিন্ন রঙে রাঙ্গিয়ে শিদ্ধ করে রোদে শুকিয়ে শীতল পাটি তৈরী করেন। পাটির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ফুল, পাখি, প্রকৃতি সহ নানা ডিজাইনে পাটি বুনা হয়। স্থানীয় বাজারে ৭ ফুট দৈর্ঘ্য আর ৬ ফুট প্রস্থের ১টি শীতল পাটি ৯’শ থেকে ২ হাজার টাকা, ৫ ফুট দৈর্ঘ্য আর ৩ ফুট প্রস্থের ১টি শীতল পাটি ৪৫০-৫০০ টাকা, সিঙ্গেল শীতল পাটি ৩৫০ টাকা, বুক্কা পাটি ১৩০-২৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। প্রতিটি শীতল পাটি তৈরী করতে ৫-৭ দিন লাগে। আর শীতল পাটিতে যদি ফুল, পাখি সহ বিভিন্ন চিহ্ন দিয়ে ডিজাইন করা হয় তাহলে ১০-১২ দিন সময় লাগে তৈরী করতে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে কম বেশী শীতলপাটি বুনতে দেখা যায়। শীতল পাটি বুনে সংসারে স্বামীর পাশাপাশি স্ত্রীও সরসারের চাকা সচল রাখতে অবদান রাখেন । বর্ষা কালে শীতল পাটি বেশি তৈরি হলেও গ্রীষ্মকাল এলেবেড়ে যায় শীতল পাটির কদর । গরমে স্বস্থিদায়ক হওয়ায় কারণ গ্রামের কুঁড়ে ঘর থেকে শহরের দালান কোঠা পর্যন্ত শীতল পাটির চাহিদা রয়েছে ।

বামনসুন্দর গ্রামের কহিনুর বেগম বলেন, পাটিপাতা সংগ্রহ করে প্রথমে পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। এরপর আবরণ ছাড়িয়ে তোলা হয় দুই রকমের বেত। তারপর গরম পানিতে সিদ্ধ করে রঙ দিয়ে রাঙানো হয়। রোদে শুকানোর পর শুরু হয় পাটি বোনা। শীতল পাটিতে গাছ-গাছালি, পাখি, মসজিদ, হরিণ, বাঘ, ফুল, হাতি, ঘোড়ার আকৃতি দিয়েও বোনা হয়। বিয়ে বাড়িতে মেয়ে পক্ষ এখনো ২টি করে শীতল পাটি, ১টি জায় (পাটির পাতার তৈরি) নামাজ দিতে হয়। এছাড়া অনেকে শখ করেও শীতল পাটিতে ঘুমায়। তবে পরিশ্রমের তুলনায় শীতল পাটির দাম তেমন বাড়েনি বলে দাবী করেন এ শীতল পাটির শিল্পী।

রবিবার (৮ মে ) উপজেলার মিঠাছরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ভোরের আকাশে সূর্য উঁকি দেওয়ার আগেই শুরু হয়ে গেছে শীতল পাটি বেচা কেনা। দূর দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন নানারকম নকশা আর কারুকার্য্য শোভিত শীতল পাটি সংগ্রহে। সপ্তাহের প্রতি রবিবার ও বৃহস্পতিবার এমনই চিত্র দেখা যায় চট্টগ্রামে শীতল পাটির সবচেয়ে বড় বাজার মিঠাছরা বাজারে। এ বাজারে শত শত নারী-পুরুষ আসেন পাটি বিক্রি করতে। অপূর্ব নির্মাণ শৈলী আর রঙ-বেরঙের পাটি নিয়ে হাজির হন তারা। যে পাটির নির্মাণ ও নকশা শৈলী যত সুন্দর সে পাটির দামও তত বেশি। ইজারাদারের তথ্য মতে, সপ্তাহে এ বাজারে শীতল পাটির লেনদেন হয় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মতো। সকাল ৮টার আগে শীতল পাটি বেচা কেনা শেষ হয়ে যায়।

মিঠাছরা বাজারে শীতল পাটি বিক্রী করতে আসা উপজেলার কাটাছরা ইউনিয়নের বাসিন্দা হোসনে আরা জানান, কারু কাজ করা একটি শীতল পাটি বুনতে কমপক্ষে ১৫ দিন সময় লাগে। পাটি বেত, রং কিনতে খরচ পড়ে প্রায় ৫৫০ টাকার মতো। তিনি ২,২০০ টাকায় দুইটি শীতল পাটি বিক্রি করেছেন।
উপজেলার মিঠাছরা বাজারে শীতল পাটি কিনতে আসা শীতল পাটি ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, মিঠাছড়া বাজারের শীতল পাটির মান খুবই ভালো। এই বাজারের শীতল পাটি দেশের চাহিদা পুরনের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে । দেশে আসছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা।

মিরসরাই সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাসছুল আলম দিদার বলেন, মিরসরাইয়ের শীতল পাটির চাহিদা সারা দেশে রয়েছে। এখানকার পাটির গুনগত মান ভালো। দেশে বিদেশে এই বাজারের শীতল পাটির সুনাম রয়েছে। শীতল পাটি বেচাকেনার জন্য মিঠছরা বাজারে একটি নতুন শেড নির্মাণ করবেন বলে জানান তিনি।

মিরসরাই প্রতিনিধি : মিরসরাইয়ে নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীদের অন্যতম পেশা শীতল পাটি বোনা। বর্ষার মৌসুম এলে বাইরে গৃহস্থালী কাজের চাপ কম থাকায় ঘরে ঘরে নারীরা ব্যস্ত সময় পার করে রঙ্গ বে রঙ্গের শীতল পাটি বোনার কাজে। এর কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার করা হয় পাটিবেত। ৬ফুট পাশ সাত ফুট দৈঘ্যের একটি শীতল পাটি বুনতে সময় লাগে ৫-৭ দিন। আর ভালো মানের একটি শীতল পাটি বিক্রী হয় ৯’শ-২হাজার টাকায়। উপজেলার মিঠাছরা বাজার এই শীতল পাটির জন্য প্রশিদ্ধ। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকার ক্রেতারা আগেরদিন রাতেই এসে বাজারে পৌঁছেন। ভোরে ফজর নামাজের পরপর জমে উঠে বিকিকিনি। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বিদেশে রপ্তানী হয় এইস বাজারের শীতল পাটি। প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকার শীতল পাটি বেচাকেনা কেনা হয় এই বাজারে।

শীতল পাটির প্রধান উপকরণ হলো সবুজ রঙের পাটিবেত গাছ। স্থানীয় ভাষায় এটিকে পাটিপাতা বলে। বাড়ির আশে পাশের পতিত জমি কিংবা নিমাঞ্চলে পাটিবেত চাষ হয়। ৮০টি পাটিবেত ১৫০-১৭০ টাকায় বিক্রি হয় স্থানীয় বাজারে । এই পাটিবেত কিনে গ্রামের মহিলারা বেত বের করে লাল, নীল, সবুজ বিভিন্ন রঙে রাঙ্গিয়ে শিদ্ধ করে রোদে শুকিয়ে শীতল পাটি তৈরী করেন। পাটির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ফুল, পাখি, প্রকৃতি সহ নানা ডিজাইনে পাটি বুনা হয়। স্থানীয় বাজারে ৭ ফুট দৈর্ঘ্য আর ৬ ফুট প্রস্থের ১টি শীতল পাটি ৯’শ থেকে ২ হাজার টাকা, ৫ ফুট দৈর্ঘ্য আর ৩ ফুট প্রস্থের ১টি শীতল পাটি ৪৫০-৫০০ টাকা, সিঙ্গেল শীতল পাটি ৩৫০ টাকা, বুক্কা পাটি ১৩০-২৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। প্রতিটি শীতল পাটি তৈরী করতে ৫-৭ দিন লাগে। আর শীতল পাটিতে যদি ফুল, পাখি সহ বিভিন্ন চিহ্ন দিয়ে ডিজাইন করা হয় তাহলে ১০-১২ দিন সময় লাগে তৈরী করতে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে কম বেশী শীতলপাটি বুনতে দেখা যায়। শীতল পাটি বুনে সংসারে স্বামীর পাশাপাশি স্ত্রীও সরসারের চাকা সচল রাখতে অবদান রাখেন । বর্ষা কালে শীতল পাটি বেশি তৈরি হলেও গ্রীষ্মকাল এলেবেড়ে যায় শীতল পাটির কদর । গরমে স্বস্থিদায়ক হওয়ায় কারণ গ্রামের কুঁড়ে ঘর থেকে শহরের দালান কোঠা পর্যন্ত শীতল পাটির চাহিদা রয়েছে ।

বামনসুন্দর গ্রামের কহিনুর বেগম বলেন, পাটিপাতা সংগ্রহ করে প্রথমে পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। এরপর আবরণ ছাড়িয়ে তোলা হয় দুই রকমের বেত। তারপর গরম পানিতে সিদ্ধ করে রঙ দিয়ে রাঙানো হয়। রোদে শুকানোর পর শুরু হয় পাটি বোনা। শীতল পাটিতে গাছ-গাছালি, পাখি, মসজিদ, হরিণ, বাঘ, ফুল, হাতি, ঘোড়ার আকৃতি দিয়েও বোনা হয়। বিয়ে বাড়িতে মেয়ে পক্ষ এখনো ২টি করে শীতল পাটি, ১টি জায় (পাটির পাতার তৈরি) নামাজ দিতে হয়। এছাড়া অনেকে শখ করেও শীতল পাটিতে ঘুমায়। তবে পরিশ্রমের তুলনায় শীতল পাটির দাম তেমন বাড়েনি বলে দাবী করেন এ শীতল পাটির শিল্পী।

রবিবার (৮ মে ) উপজেলার মিঠাছরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ভোরের আকাশে সূর্য উঁকি দেওয়ার আগেই শুরু হয়ে গেছে শীতল পাটি বেচা কেনা। দূর দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন নানারকম নকশা আর কারুকার্য্য শোভিত শীতল পাটি সংগ্রহে। সপ্তাহের প্রতি রবিবার ও বৃহস্পতিবার এমনই চিত্র দেখা যায় চট্টগ্রামে শীতল পাটির সবচেয়ে বড় বাজার মিঠাছরা বাজারে। এ বাজারে শত শত নারী-পুরুষ আসেন পাটি বিক্রি করতে। অপূর্ব নির্মাণ শৈলী আর রঙ-বেরঙের পাটি নিয়ে হাজির হন তারা। যে পাটির নির্মাণ ও নকশা শৈলী যত সুন্দর সে পাটির দামও তত বেশি। ইজারাদারের তথ্য মতে, সপ্তাহে এ বাজারে শীতল পাটির লেনদেন হয় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মতো। সকাল ৮টার আগে শীতল পাটি বেচা কেনা শেষ হয়ে যায়।

মিঠাছরা বাজারে শীতল পাটি বিক্রী করতে আসা উপজেলার কাটাছরা ইউনিয়নের বাসিন্দা হোসনে আরা জানান, কারু কাজ করা একটি শীতল পাটি বুনতে কমপক্ষে ১৫ দিন সময় লাগে। পাটি বেত, রং কিনতে খরচ পড়ে প্রায় ৫৫০ টাকার মতো। তিনি ২,২০০ টাকায় দুইটি শীতল পাটি বিক্রি করেছেন।
উপজেলার মিঠাছরা বাজারে শীতল পাটি কিনতে আসা শীতল পাটি ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, মিঠাছড়া বাজারের শীতল পাটির মান খুবই ভালো। এই বাজারের শীতল পাটি দেশের চাহিদা পুরনের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে । দেশে আসছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা।

মিরসরাই সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাসছুল আলম দিদার বলেন, মিরসরাইয়ের শীতল পাটির চাহিদা সারা দেশে রয়েছে। এখানকার পাটির গুনগত মান ভালো। দেশে বিদেশে এই বাজারের শীতল পাটির সুনাম রয়েছে। শীতল পাটি বেচাকেনার জন্য মিঠছরা বাজারে একটি নতুন শেড নির্মাণ করবেন বলে জানান তিনি।