মনির আহমেদ চৌধুরী,নগর প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রোড ক্র্যাশে অন্তত ৬৬২ জন নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার(২৪ ডিসেম্বর) সিএমপি ও চসিক  যৌথভাবে প্রকাশিত চট্টগ্রাম সিটি রোড সেফটি রিপোর্ট ২০২৫-এ এমন তথ্য উঠে এসেছে। এটি  পুলিশি তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত তৃতীয় সড়ক নিরাপত্তা প্রতিবেদন।

নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন) মো. হুমায়ুন কবির।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ওয়াহিদুল হক চৌধুরী এবং চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান সোহেল।

প্রতিবেদনটিতে ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে নগরের বর্তমান ও অতীত সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। এতে দুর্ঘটনার ধরণ, প্রবণতা এবং উচ্চঝুঁকিপূর্ণ স্থানের মানচিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে রোড ক্র্যাশে মৃত্যুর হার ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রাণহানির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ার পর ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এটি প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে যা নগরীর সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে স্পষ্ট করে তোলে।

নগরীর সড়কে ২০১৭-২০২৪ সময়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে ছিলেন পথচারীরা। এই সময়ে পথচারী নিহত হয়েছেন ৩৬৩ জন, যা মোট নিহতের অর্ধেকেরও বেশি। আরও উদ্বেগজনক হলো এই সময়ে পথচারী মৃত্যুর সংখ্যা ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। পথচারীদের পর সবচেয়ে ঝুঁকিতে ছিলেন দুই ও তিন চাকার যানবাহনের যাত্রী ও চালকরা; নিহত হয়েছেন ১৯৫ জন।

রোড ক্র্যাশ প্রতিরোধে প্রতিবেদনটিতে ২০টি উচ্চঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বড়পোল মোড়, অলংকার মোড়, সিইপিজেড গেট, সিটি গেট, নিউমার্কেট বাসস্টপ, কালামিয়া বাজার বাসস্টপ এবং সাগরিকা গোলচত্বর। এসব স্থানগুলোতে দ্রুত বিজ্ঞান ভিত্তিক যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে ত্রুটি চিহ্নিত করে পুন র্নির্মাণ করা প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তথ্যভিত্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে শহরের সড়কে প্রাণহানি প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিশেষ করে পথচারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফুটপাত প্রশস্তকরণ, উঁচু জেব্রা ক্রসিং নির্মাণ, নিরবচ্ছিন্ন ফুটপাত নিশ্চিতকরণ, স্পিড হাম্প স্থাপন এবং পথচারী দ্বীপ নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনা কমাতে মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা ২০২৪ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন)  মো. হুমায়ূন কবির বলেন, সড়ক নিরাপত্তা কেবল আইন প্রয়োগের বিষয় নয়; এটি নগর পরিকল্পনা ও সড়ক নকশার সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিএমপি রোড সেফটি সেল গঠন এবং রোড ক্র্যাশের তথ্য সংগ্রহে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রণয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে, যা সড়ক নিরাপত্তায় গতি আনছে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ওয়াহিদুল হক চৌধুরী বলেন, সিএমপি ইতোমধ্যে রোড সেফটি সেল গঠন করেছে এবং রোড ক্র্যাশের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোসিডিউর (এসওপি) প্রণয়ন করেছে, যাতে এই কার্যক্রম একটি প্রাতিষ্ঠানিক ও পদ্ধতিগত রূপ পায়। ভবিষ্যতে এই সেলই প্রতিবেদন প্রস্তুতের দায়িত্ব পালন করবে। এসব প্রতিবেদন নীতিনির্ধারক, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নগর পরিকল্পনাবিদসহ বিভিন্ন অংশীজনের জন্য একটি দিকনির্দেশক হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান সোহেল বলেন, প্রতিবেদনের সুপারিশকে ভিত্তি করে সিএমপির সঙ্গে যৌথভাবে চট্টগ্রাম শহরের সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়নে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে চসিক। এছাড়া বর্তমানে “চট্টগ্রাম উইমেন্স কলেজ” এলাকায় সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ চলমান রয়েছে। পাশাপাশি বিআইজিআরএসের অংশীদার ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (ডব্লিউআরআই) প্রদত্ত নকশার ভিত্তিতে পাহাড়তলী গার্লস স্কুল ও কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পের ব্যয় নিরূপণের কাজ চলছে।

ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (বিআইজিআরএস) কর্মসূচির আওতায় চট্টগ্রাম সিটি রোড সেফটি রিপোর্ট ২০২৫ প্রস্তুত ও প্রকাশে সহায়তা করেছে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সংস্থা ভাইটাল স্ট্যাটেজিস। বিশ্বব্যাপী ২৭টি শহর ও ২টি রাজ্যে চলমান বিআইজিআরএস কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শহরের মধ্যে একটি চট্টগ্রাম।

প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিআইজিআরএস চট্টগ্রামের ইনিশিয়েটিভ কোঅর্ডিনেটর লাবিব তাজওয়ান উৎসব।

প্রতিবেদনের মূল তথ্য উপস্থাপন করেন কাজী সাইফুন নেওয়াজ, সার্ভেইলেন্স কোঅর্ডিনেটর, বিআইজিআরএস চট্টগ্রাম।

সিএমপি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিআইজিআরএস এনফোর্সমেন্ট কোঅর্ডিনেটর কাজী হেলাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, একাডেমিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মনির আহমেদ চৌধুরী,নগর প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রোড ক্র্যাশে অন্তত ৬৬২ জন নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার(২৪ ডিসেম্বর) সিএমপি ও চসিক  যৌথভাবে প্রকাশিত চট্টগ্রাম সিটি রোড সেফটি রিপোর্ট ২০২৫-এ এমন তথ্য উঠে এসেছে। এটি  পুলিশি তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত তৃতীয় সড়ক নিরাপত্তা প্রতিবেদন।

নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন) মো. হুমায়ুন কবির।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ওয়াহিদুল হক চৌধুরী এবং চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান সোহেল।

প্রতিবেদনটিতে ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে নগরের বর্তমান ও অতীত সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। এতে দুর্ঘটনার ধরণ, প্রবণতা এবং উচ্চঝুঁকিপূর্ণ স্থানের মানচিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে রোড ক্র্যাশে মৃত্যুর হার ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রাণহানির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ার পর ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এটি প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে যা নগরীর সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে স্পষ্ট করে তোলে।

নগরীর সড়কে ২০১৭-২০২৪ সময়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে ছিলেন পথচারীরা। এই সময়ে পথচারী নিহত হয়েছেন ৩৬৩ জন, যা মোট নিহতের অর্ধেকেরও বেশি। আরও উদ্বেগজনক হলো এই সময়ে পথচারী মৃত্যুর সংখ্যা ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। পথচারীদের পর সবচেয়ে ঝুঁকিতে ছিলেন দুই ও তিন চাকার যানবাহনের যাত্রী ও চালকরা; নিহত হয়েছেন ১৯৫ জন।

রোড ক্র্যাশ প্রতিরোধে প্রতিবেদনটিতে ২০টি উচ্চঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বড়পোল মোড়, অলংকার মোড়, সিইপিজেড গেট, সিটি গেট, নিউমার্কেট বাসস্টপ, কালামিয়া বাজার বাসস্টপ এবং সাগরিকা গোলচত্বর। এসব স্থানগুলোতে দ্রুত বিজ্ঞান ভিত্তিক যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে ত্রুটি চিহ্নিত করে পুন র্নির্মাণ করা প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তথ্যভিত্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে শহরের সড়কে প্রাণহানি প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিশেষ করে পথচারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফুটপাত প্রশস্তকরণ, উঁচু জেব্রা ক্রসিং নির্মাণ, নিরবচ্ছিন্ন ফুটপাত নিশ্চিতকরণ, স্পিড হাম্প স্থাপন এবং পথচারী দ্বীপ নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনা কমাতে মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা ২০২৪ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন)  মো. হুমায়ূন কবির বলেন, সড়ক নিরাপত্তা কেবল আইন প্রয়োগের বিষয় নয়; এটি নগর পরিকল্পনা ও সড়ক নকশার সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিএমপি রোড সেফটি সেল গঠন এবং রোড ক্র্যাশের তথ্য সংগ্রহে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রণয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে, যা সড়ক নিরাপত্তায় গতি আনছে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ওয়াহিদুল হক চৌধুরী বলেন, সিএমপি ইতোমধ্যে রোড সেফটি সেল গঠন করেছে এবং রোড ক্র্যাশের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোসিডিউর (এসওপি) প্রণয়ন করেছে, যাতে এই কার্যক্রম একটি প্রাতিষ্ঠানিক ও পদ্ধতিগত রূপ পায়। ভবিষ্যতে এই সেলই প্রতিবেদন প্রস্তুতের দায়িত্ব পালন করবে। এসব প্রতিবেদন নীতিনির্ধারক, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নগর পরিকল্পনাবিদসহ বিভিন্ন অংশীজনের জন্য একটি দিকনির্দেশক হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান সোহেল বলেন, প্রতিবেদনের সুপারিশকে ভিত্তি করে সিএমপির সঙ্গে যৌথভাবে চট্টগ্রাম শহরের সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়নে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে চসিক। এছাড়া বর্তমানে “চট্টগ্রাম উইমেন্স কলেজ” এলাকায় সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ চলমান রয়েছে। পাশাপাশি বিআইজিআরএসের অংশীদার ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (ডব্লিউআরআই) প্রদত্ত নকশার ভিত্তিতে পাহাড়তলী গার্লস স্কুল ও কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পের ব্যয় নিরূপণের কাজ চলছে।

ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (বিআইজিআরএস) কর্মসূচির আওতায় চট্টগ্রাম সিটি রোড সেফটি রিপোর্ট ২০২৫ প্রস্তুত ও প্রকাশে সহায়তা করেছে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সংস্থা ভাইটাল স্ট্যাটেজিস। বিশ্বব্যাপী ২৭টি শহর ও ২টি রাজ্যে চলমান বিআইজিআরএস কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শহরের মধ্যে একটি চট্টগ্রাম।

প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিআইজিআরএস চট্টগ্রামের ইনিশিয়েটিভ কোঅর্ডিনেটর লাবিব তাজওয়ান উৎসব।

প্রতিবেদনের মূল তথ্য উপস্থাপন করেন কাজী সাইফুন নেওয়াজ, সার্ভেইলেন্স কোঅর্ডিনেটর, বিআইজিআরএস চট্টগ্রাম।

সিএমপি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিআইজিআরএস এনফোর্সমেন্ট কোঅর্ডিনেটর কাজী হেলাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, একাডেমিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।