গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি: কারখানার বিদ্যুত চাহিদা মেটাতে পরিবেশ বান্ধব প্রাকৃতিক শক্তি উৎপাদনের মাধ্যমে রুফটপ সোলার পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন করলো ওয়ালটন। গাজীপুরের বড় কালামপুরে অবস্থিত ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিতে ২.১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুত প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। গত রবিবার (০৩ এপ্রিল) সকালে এই সৌর বিদ্যুত প্লান্টটি উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
পুরো কারখানাটি দুই প্রতিমন্ত্রীকে ঘুরিয়ে দেখান ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যস্থাপনা পরিচালক গোলাম মুর্শেদ।
তিনি জানান, দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল, ল্যাপটপ সহ দেশের বাহিরে ৪০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ওয়ালটনের প্রযুক্তি পণ্য। আর আজকে উদ্বোধন হওয়া ২.১৬ মেগাওয়াট রূফটপ সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টটি পর্যায়ক্রমে ১৮ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে।
বিদ্যুত প্লান্ট উদ্বোধন করে নসরুল হামিদ বিপু বলেন , ক্লিন এনার্জির ব্যবহার বাড়াতে ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা চালাতে হবে। নিতে হবে কো-জেনারেশন বা ট্রাই-জেনারেশন উদ্যোগ। সে লক্ষ্যে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদ্বুদ্ধ ও সহযোগিতা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তারই ধারাবাহিকতায় এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। সে সময় ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ডিএমডি লিয়াকত আলী ভুঁইয়াসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রীগণ গ্রিন এনার্জি ম্যানেজমেন্ট নিয়ে ওয়ালটনের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ, গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রম এবং বিশ্বমানের পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া ঘুরে দেখেন। তারা ওয়ালটনের তৈরি নতুন মডেলের প্রিন্টার এবং মাদারবোর্ড প্রোডাকশন প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিটও উদ্বোধন করেন।
কারখানা পরিদর্শন শেষে নসরুল হামিদ বলেন, এনার্জি সেভিংয়ে ওয়ালটন খুবই অ্যাডভান্সড। এজন্য তারা বিরাট পরিকল্পনা নিয়েছে। পানির উত্তম ব্যবহার করছে। ওয়ালটন মোস্ট সাসটেইনেবলের দিকে যাচ্ছে। এটা বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় বিষয়। বিদ্যুতের ব্যবহার যত বাড়বে, এনার্জির যোগান যত নিশ্চিত হবে, মানবসূচক উন্নয়ন তত বাড়বে। শিল্পখাতের উন্নয়ন হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এত অল্প সময়ের মধ্যে সুপারফ্যাক্টরি করা সহজ কাজ নয়। ওয়ালটন সেটা সম্ভব করেছে। আমাদের একটি ওয়ার্ল্ডক্লাস ফ্যাক্টরি আছে দেখে খুবই ভালো লাগলো। নিজের দেশে হোম অ্যাপ্লায়েন্সের সবকিছু তৈরি হচ্ছে। ওয়ালটনে কর্মরত সবাই প্যাশনেবল। এখানে ৩০ হাজার কর্মী এক পরিবারের মতো কাজ করে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, আগামি বছর থেকে বাংলাদেশ উৎপাদিত এবং আমদানিকৃত পণ্যের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের সক্ষমতা নির্ধারণে স্টার লেভেলিং করা হবে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সরকারের দেয়া নীতিগত সহায়তা কাজে লাগিয়ে ওয়ালটন অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। ওয়ালটনের এগিয়ে যাওয়ার গল্পটা আমাদের আরো বেশি সাহসী করে, অনুপ্রাণিত করে। ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেখছেন, ওয়ালটনের মতো দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সেটা সম্ভব হবে। আমাদের প্রত্যাশা ওয়ালটন শীর্ষ গেøাবাল ব্র্যান্ডে পরিণত হয়ে সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে।
স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্তিতে ওয়ালটন পরিবারের পক্ষে বিদ্যুৎ বিভাগকে অভিনন্দন জানান গোলাম মুর্শেদ।
তিনি বলেন, শতভাগ বিদ্যুতায়নের কারণে এই ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপ হয়েছে। গত এক যুগে যেসব শিল্পবান্ধব নীতি প্রণীত হয়েছে, সেটা চলমান থাকলে অদূর ভবিষ্যতে ওয়ালটনের মতো আরো অন্তত দশটি বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি তৈরি হবে বলে আমি আশাবাদী। এর আগে ওয়ালটন হেডকোয়ার্টারে পৌঁছে প্রতিমন্ত্রীগণ ‘বেটার বাংলাদেশ টুমরো’ উদ্যোগের আওতায় সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট কার্যক্রম অর্জনে ওয়ালটনের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র উপভোগ করেন। এরপর তারা সুসজ্জিত প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টার ঘুরে দেখেন। পরে তারা ওয়ালটনের রেফ্রিজটারেটর, কম্প্রেসর, মাদারবোর্ড উৎপাদন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন।




