দি ক্রাইম ডেস্ক: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চাহিদা অনুযায়ী কাগজ সরবরাহ করতে পারেনি কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেড (কেপিএম)। কাপ্তাই হ্রদের পানি সংকটের কারণে গত কয়েক দিন ধরে গত ৪ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে চন্দ্রঘোনায় অবস্থিত কারখানাটির উৎপাদন। আশংকা দেখা দিয়েছে নির্ধারিত সময়ে কাগজ সরবরাহ নিয়ে।
কর্ণফুলি পেপার মিলস লিমিটেড (কেপিএম) হতে চলতি অর্থ বছরে ৯১৫ মেট্রিকটন কাগজের চাহিদাপত্র দিয়েছিলেন বাংলাদেশ ষ্টেশনারী অফিস (বিএসও)। বিএসও হতে নির্বাচন কমিশন এই কাগজ কিনে নিয়ে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজে ব্যবহার করে থাকে। যার বর্তমান বাজার মূল্য ১১ কোটি ৮ লাখ ৯৩ হাজার ৭ শত ৮১ টাকা।
৯১৫ মেট্রিক টন চাহিদার বিপরীতে এখন পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়েছে ৫৩১ মেট্রিক টন। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এসব কাগজ সরবরাহ করার কথা। তবে শিগগিরই পুনরায় কাগজ উৎপাদনে যাওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেড (কেপিএম) সূত্র জানিয়েছে, এ কারখানায় তিনটি মেশিন রয়েছে। অনেক পুরনো এসব মেশিনের মধ্যে দুটি কোনোভাবে সচল আছে। প্রতিদিন একটি মেশিন চালানো হয়। একটি মেশিনে দিনে ২৫ থেকে ২৭ মেট্রিক টন কাগজ উৎপাদিত হয়। গত চার দিন ধরে সচল মেশিনটিতেও কাপ্তাই হ্রদে পানি সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
কর্ণফুলী পেপার মিলস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ জানান,বাংলাদেশ ষ্টেশনারী অফিস (বিএসও)’র মাধ্যমে ‘নির্বাচন কমিশনের চাহিদার ৯১৫ মেট্রিক টন কাগজের মধ্যে ইতোমধ্যে আমরা ৫৩১ মেট্রিক টন কাগজ সরবরাহ করেছি। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সব কাগজ সরবরাহের কথা রয়েছে। অবশিষ্ট ৩৮৪ মেট্রিক টন কাগজ আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে বুঝিয়ে দিতে পারবো বলে আশা করছি।
কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেডের অতিরিক্ত প্রধান ব্যবস্থাপক(কারিগরি) ও এমটিএস বিভাগীয় প্রধান আবুল কাশেম জানান, ‘কিছু ত্রুটির কারণে গত চারদিন ধরে কারখানায় কাগজ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এ কারখানায় কাগজ উৎপাদনে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। যা কাপ্তাই হ্রদ থেকে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে শুষ্ক মৌসুম শুরু হওয়ায় হ্রদের পানির স্তর অনেক কমে গেছে। যেসব পাইপ বসানো আছে সেগুলো দিয়ে পানি আনা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে পাইপলাইন আরও গভীরে নেওয়ার কাজ চলছে। আশা করছি, আগামী শনিবারের মধ্যে এ সমস্যা সমাধান করে পুরোদমে পূর্বের ন্যায় কাগজ উৎপাদনে যাওয়া যাবে।
তিনি আরও জানান, কারখানায় কাগজ উৎপাদন শুরু হলে নির্বাচন কমিশনের চাহিদার বাকি কাগজ উৎপাদন করতে ২০ থেকে ২২ দিন সময় লাগবে। যা নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্বাচন কমিশনকে কাগজ বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায় কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত কেপিএম একটি রাষ্ট্রায়ত্ত কাগজ ও মণ্ড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কাগজ কলগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা ১৯৫০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো এবং এটি দেশের প্রথম শিল্প সংস্থাগুলোর মধ্যে একটি যা কারখানা আইনের আওতায় নিবন্ধিত হয়েছিল। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি)-এর অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে।




