বশির আহমেদ, বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি: মেরামতের অভাবে যে কোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বান্দরবান পৌর এলাকার একমাত্র পানি সরবরাহ ব্যবস্থা। পানি শোধনাগারের যন্ত্রপাতি ত্রুটি ও দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবহৃত ফিল্টারের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় এবং পানি সরবরাহের সাধারণ পিবিসি পাইপগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার কারণে এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধীদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী।
জানা গেছে, বান্দরবান পৌর এলাকায় ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের ফলে সুপেয় পানি সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। অপরিকল্পিত আবাসন, গাছপালা কাটা ও ঝিরি থেকে পাথর উত্তোলনের ফলে অধিকাংশ ঝিরি-ঝরনা শুকিয়ে গেছে। এমনকি শুকনো মৌসুমে জেলার বৃহত্তম পানির উৎস সাঙ্গু নদীও এখন মৃত প্রায়। এ অবস্থায় পৌরবাসীর প্রধান পানির উৎস জনস্বাস্থ্য বিভাগের পানি সরবরাহ কেন্দ্র। যেখান থেকে দৈনিক ৬০ লাখ লিটার পানি সরবরাহ হয়। যদি সেটি বন্ধ হয়ে যায় তবে চরম পানির সঙ্কটে পড়বে পৌর এলাকার প্রায় ৩ হাজার পরিবার।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯ সাল থেকে বান্দরবান নিউগুলশান এলাকার একমাত্র পানি শোধনাগার থেকে পৌরসভা এলাকার প্রায় ৩ হাজার গ্রাহককে পানি সরবরাহ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে ২০২৩ সালের বন্যায় পানি শোধনাগারটির ফিল্টারসহ বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে এই শোধনাগার থেকে দৈনিক ৬০ লাখ লিটার সুপেয় পানি পাওয়ার কথা থাকলেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট না ঘটলে সর্বোচ্চ ৪০ লাখ লিটার পানি পাওয়া যাচ্ছে। এতে এই এলাকার পানির চাহিদা মিটাতে কিছুটা ব্যাঘাত হচ্ছে।
বান্দরবান পৌর সভার এলাকার বাসিন্দারা জানান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সরবরাহকৃত পানির প্রেসার এতই কম যে সেই পাইপের পাশে ট্যাংক বসিয়েও পানি পাচ্ছেন না তারা। এতে প্রতিনিয়তই পানির কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।
বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধীদপ্তরের প্রকৌশলী অনুপম দে বলেন, ২০২৩ সালের বন্যায় বান্দরবান পানি শোধনাগারটির ফিল্টারসহ বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি সরবরাহে ব্যবহৃত পাইপ গুলো ৩৫ বছরের পুরোনো হওয়ায় প্রেসারও দেওয়া যাচ্ছে না। বেশ কিছু গ্রাহক পানি পাচ্ছেন না। ফলে যে কোনো সময় বান্দরবানে পৌর পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিতে হতে পারে।




