চকরিয়া অফিস: দুই বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে রেলপথ চালু করার মাধ্যমে এই অঞ্চলের ২২ লাখ মানুষের শত বছরের স্বপ্ন পূরণ করা হলেও এখনো রেলওয়ের কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন কক্সবাজারের মানুষ।
অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রাম দোহাজারী কক্সবাজার রেলপথের গুরুত্বপূর্ণ ও বাণিজ্যিক জনপদ চকরিয়া উপজেলার মানুষ রেলযাত্রায় সূফল বঞ্চিত হচ্ছেন বেশি। রেলপথের মাঝখানে চকরিয়া উপজেলার অবস্থান হওয়ায় স্টেশনগুলোতে খুব বেশি সময় যাত্রা বিরতি করে না কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম ঢাকাগামী কিংবা ঢাকা চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী যাত্রী পরিবহনে নিয়োজিত ট্রেনগুলো। অথচ রেলপথের চকরিয়া উপজেলার স্টেশন ঘিরে ট্রেন যাত্রায় সংযোগ ঘটেছে আশপাশের আরও ৬ উপজেলার মানুষের। চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল রেলস্টেশনটি মহেশখালী উপজেলা ও মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের সংযোগ সড়কের সাথে যুক্ত হওয়ায় এটিকে ভৌগোলিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
অন্যদিকে রেলপথের চকরিয়া হারবাং রেলস্টেশনটি চকরিয়া উপজেলার উত্তর জনপদের মানুষের পাশাপাশি দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া, পাশের পেকুয়া ও বাঁশখালী (আংশিক) উপজেলার মানুষের যাতায়াত সুবিধার জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। একইভাবে চকরিয়ার মালুমঘাট রেলস্টেশনটি চকরিয়া উপজেলার দক্ষিনাঞ্চল এবং পুর্ব পাশের বান্দরবানের লামা, আলীকদম উপজেলার জনসাধারণ এবং পর্যটকদের যাতায়াতের সংযোগস্থল হিসেবে গড়ে উঠেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে চকরিয়া উপজেলায় স্থাপিত তিনটি রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন আশপাশের ৬ উপজেলার মানুষ রেলযাত্রায় সাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে সামিল হচ্ছেন। রেলপথটি চালুর মাধ্যমে এ অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভুতপুর্ব অগ্রগতি হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে রেলযাত্রার মাধ্যমে চকরিয়া উপজেলার পাশাপাশি পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলায় উৎপাদিত চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, লবণ ও শাক সবজি দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখার সুযোগ পেয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, রেলপথ চালু হবার পর থেকে চকরিয়া উপজেলার তিনটি রেলস্টেশনে রেলওেয়ের সূচি অনুযায়ী চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী লোকাল ট্রেনগুলো যাত্রা বিরতি করে আসছে।কিন্তু ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজারগামী কিংবা কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনগুলো এখানে যাত্রা বিরতি করে না। এমন প্রেক্ষাপটে চকরিয়া স্টেশনের যাত্রীরা রাজধানী ঢাকায় জরুরি কাজে যেতে চাইলেও রেল কতৃপক্ষের অবহেলার কারণে যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এই ক্ষেত্রে সরাসরি ঢাকাগামী যাত্রীদেরকে চকরিয়া থেকে উল্টোপথে কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে আন্তঃনগর ট্রেনে উঠতে হচ্ছে।
যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগের বিষয়টি তুলে ধরে চকরিয়া উপজেলা স্টেশনে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রা বিরতির দাবিতে রোববার ২৬ অক্টোবর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদন পাঠিয়েছেন চকরিয়া উপজেলার কর্মরত সংবাদকর্মী সাঈদী আকবর ফয়সাল ও জাতীয় নাগরিক পার্টি চকরিয়া উপজেলা শাখার যুগ্ম সমন্বয়কারী খাইরুল হাসান।
আবেদনে তাঁরা বলেন, রেলপথে আন্তঃনগর ট্রেনে করে সরাসরি ঢাকা যেতে চকরিয়া উপজেলা ছাড়াও পাশের মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া উপজেলা, পার্শ্ববর্তী বান্দরবানের লামা ও আলীকদম উপজেলার যাত্রী সাধারণকে চকরিয়া থেকে উল্টো পথে কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে উঠতে হচ্ছে। যা যাত্রী সাধারণের জন্য কষ্টসাধ্য ও সময়ের অপচয় হচ্ছে।
এমতবস্থায় একসঙ্গে ৬ উপজেলার যাত্রী সাধারণের সহজ যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিতকল্পে চকরিয়া স্টেশনে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রা দুই তিন মিনিট বিরতি নিশ্চিত করণে ব্যবস্থা গ্রহনে আমরা রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্টদের জরুরি হস্তক্ষেপ চাই।




