দি ক্রাইম ডেস্ক: শাহবাগ থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানিতে আদালতে হাজির করা সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে চকলেট দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন আইনজীবী। যা নিয়ে চটেছেন কামরুল ইসলাম। মেজাজ হারিয়ে পুলিশ সদস্যদের ধমকেছেন তিনি।
বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম মো. জুয়েল রানার আদালতে এ ঘটনা ঘটে। তবে এসময় এজলাসে ছিলেন না হাকিম জুয়েল রানা। এরপর আদালতের কাছে কামরুল ইসলামকে পানি ও চকলেট খাওয়ানোর অনুমতি চেয়েও মেলেনি।
জুলাই আন্দোলনের সময় বাংলামোটরে আল আমিন ইসলাম ওরফে সোয়েব হত্যাচেষ্টা মামলায় কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য এদিন সকাল ১০টার কিছু আগে কামরুল ইসলামকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।
সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটের দিকে এজলাসে তোলা হয় কামরুলকে। এসময় সাবেক এই মন্ত্রীর হাতে হাতকড়া, মাথায় হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরানো ছিল। কাঠগড়ায় নেওয়ার পর হেলমেট ও জ্যাকেট খুলে ফেলা হয়।
এ সময় কাঠগড়ার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তার আইনজীবী মোর্শেদ হোসেন শাহীন একটি চকলেট বের করে কামরুলকে খেতে দেন। চকলেট হাতে নিয়েই মুখে নেন কামরুল ইসলাম। এটা দেখে ওই আইনজীবীকে পুলিশ সদস্যরা ধমকান।
তখন কামরুল ইসলাম পুলিশ সদস্যদের বলেন, আমি ডায়াবেটিসের রোগী। এজন্য আমাকে একটা চকলেট দিয়েছে। তার জন্য তাকে বাধা দেবেন? বেয়াদব কোথাকার।” এরপর পুলিশ সদস্যরা ওই আইনজীবীকে কাঠগড়ার সামনে থেকে সরিয়ে দেন।
এরই মধ্যে হাকিম জুয়েল রানা এজলাসে ওঠেন। পরে কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর কামরুল ইসলামের আইনজীবী আফতাব মাহমুদ চৌধুরী কামরুল ইসলামকে চকলেট, পানি খাওয়ানোর অনুমতি চান। তবে আদালত থেকে অনুমতি মেলেনি।
পরে আফতাব মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কামরুল ইসলাম ক্যান্সার আক্রান্ত অসুস্থ একজন মানুষ। তার ডায়াবেটিসও রয়েছে। কারাগার থেকে সকালে তাকে আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। পরে আদালতে তোলা হলে তিনি ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েন। চকলেট খাওয়ার অনুমতি না দিলেও মানবিক বিবেচনায় অন্তত তাকে পানি খাওয়ানোর অনুমতি দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আদালত অনুমতি দেননি। বিষয়টা হতাশার।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, জুলাই আন্দোলনের সময় ৪ আগস্ট আন্দোলনকারীরা বাংলামোটর ফুটওভার ব্রিজের মোড়ে অবস্থান করছিল। এ সময় আসামিরা লাঠি দেশি-বিদেশি ধারালো অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আন্দোলনকারীদের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং অনবরত গুলি ছুড়তে থাকে। এসময় গুলিবিদ্ধ হন আল আমিন ইসলাম। এ ঘটনায় আল আমিন গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর কামরুল ইসলামসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর ঢাকার উত্তরা-১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়।




