*সার পরিবহনে ব্যাঘাত ঘটার আশংকা
*দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী
*মানবেতর জীবন যাপন করছে পরিবার
আহমদ কবির: মুজিবুর রহমান নামের এক শ্রমিক ঠিকাদারকে ঢালাউ মামলার আসামী বানিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পাঁচলাইশ থানায় ২টি ও আনোয়ারা থানায় ১টিসহ মোট তিনটি মামলা দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু থানা পুলিশ এবিষয়ে কোন সদত্তর দিতে পারেনি, বলছেন তদন্ত চলছে। মুজিবুর রহমান চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার (সিইউএফএল) কারখানার ব্যাগ গুদামে সার লোড আনলোডিংয়ে শ্রমিক ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন। চলতি বছরের অক্টোবর মাসের ৮তারিখে মুজিবকে গ্রেফতার করা হয়। এর পেছনে সার পরিবহন জগতের মাফিয়া ডন আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল আজিজ ও তার লোকজন কলকাঠি নাড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলেও মুজিবকে সীমাহীন নির্যাতন করা হয়। দেয়া হয় বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলা। পাঠানো হয় জেলহাজতে। সরকার পরিবর্তন হলে আবারও তাকে ঢালাউ তিনটি মামলায় আসামী করা হয়। এরপর তাকে রাতের অন্ধকারে ঘুমান্ত অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়। পাঠানো হয় আদালতে। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ওইদিন থেকে তিনি জেলহাজতে আছেন বলে জানা গেছে। তবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অর্থ যোগানদাতা ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল আজিজ ও তার সহযোগিদের এখনো গ্রেফতার করা হচ্ছেনা। রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, ধৃত মুজিবুর রহমানের বাড়ি কর্ণফুলী উপজেলার উত্তর বন্দর গ্রামে। মুজিব এক সময় সিইউএফএল ও কাফকো ব্যাগ গুদামের সার লোডিং আনলোডিং এর শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পরে কারখানায় শ্রমিক সরবরাহ ও ঠিকাদার হিসেবে কাজ শুরু করেন। এতে একটি পক্ষের সহ্য হচ্ছিলনা। শুরু করা হয় নানা ষড়যন্ত্র। বিগত সরকার আমলে পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে ব্যাপক নির্যাতন মারধর করা হয়। মাসের পর মাস খাটানো হয় জেল। গরীব ঘরের এই সন্তানের থাকার মতো একমাত্র ভিটি ছাড়া আর কিছুই নেই। মামলায় তাকে ফতুর করে দেয়া হয়।
অভিযোগ উঠেছে, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামীদের সাথে আপোষে না আসায় শ্রমিক ঠিকাদারীর ভাগ না দেয়ায় তাকে বছরের পর বছর নির্যাতন করা হচ্ছে। খাটতে হচ্ছে জেলজুলুম। কিন্তু তার পক্ষে প্রতিবাদ করার মতো কেউ নেই। স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনের সুযোগ নিয়ে মোটা অংকের অর্থ খরচ করে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় ১৭/১০/২৪ তারিখ ২টি ও ৬/১০/২৪ ইং তারিখে আনোয়ারা থানায় ১টিসহ মোট তিনটি ঢালাউ মামলার আসামী করা হয়। গ্রেফতার করা হয় একই মাসের ৮ তারিখে। এসব মামলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হামলার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। যা হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয়রা। কারখানার লোকজনও বলছেন, মুজিব কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নহেন। বর্তমানে অন্যায়ভাবে বিনাদোষে তাকে জেল খানায় আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ আনা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার অন্যতম আসামী আবদুল আজিজ সহযোগি সিন্ডিকেট ক্ষমতাসীন দলের সহায়তা নিয়ে দুই সার কারখানার সার পরিবহন, লোড আনলোডিংসহ কারখানার সব ঠিকাদারী দখল করে নেয়া হয়। এসময় ব্যাপক চাঁদাবাজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ আছে আবদুল আজিজদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে বিআরটিসিকেও চাঁদা দিতে বাধ্য করা হয়।
সুত্র আরো জানায়, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) অপর সরকারী প্রতিষ্ঠান বিআরটিসিকে ১লাখ টান সার পরিবহনের দায়িত্ব দেয়া হয়। এসব সার কর্ণফুলী ইউরিয়া ফার্টিলাইজার (কাফকো) থেকে বিআরটিসির ট্রাকে করে সরকারের বিভিন্ন বাফার গুদামে নেয়া হবে। সার পরিবহন করতে গিয়ে বড় ধরনের বাঁধার সম্মুখীন হয় সরকারী প্রতিষ্ঠান বিআরটিসিকে। পরে এক প্রকার বাধ্য হয়ে মাফিয়া ডন আজিজের সাথে সমঝোতায় আসতে হয় উক্ত প্রতিষ্ঠানকে। এতে করে আবদুল আজিজ এর ঠিকাদারী ফার্ম হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা। ফলে মাঝখানে সরকারকে লোকসান গুনতে হয় শত কোটি টাকা। যা তদন্ত করে দেখা হলে ফিলে চমকানোর মতো চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন একটি সুত্র।




