আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধে ‘একই পরিখায় রক্ত, জীবন ও মৃত্যু ভাগ করে নেওয়ার’ মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে পাঠানো নববর্ষের এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি এই কথা বলেন। খবর আল-জাজিরার।
এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর কিমকে পাঠানো নববর্ষের শুভেচ্ছা বার্তায় পুতিন রাশিয়ার পশ্চিম কুরস্ক অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের ‘বীরত্বপূর্ণ’ ভূমিকার প্রশংসা করেন। পুতিন বলেন, এটি দুই দেশের মধ্যে ‘অজেয় বন্ধুত্বেরই এক সুস্পষ্ট প্রমাণ’।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ কিমের এই বার্তাটি প্রকাশ করে। সেখানে কিম ২০২৫ সালকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য একটি ‘সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ বছর’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের সম্পর্ককে একটি ‘অমূল্য অভিন্ন সম্পদ’ হিসেবে বর্ণনা করেন ‘যা কেবল বর্তমান সময়ে নয়, বরং পরবর্তী প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বজায় থাকবে’।
কিম বলেন, “দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক এবং তাদের ঐক্যকে কেউ ছিন্ন করতে পারবে না।”
দক্ষিণ কোরিয়া এবং পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে সহায়তা করতে উত্তর কোরিয়া হাজার হাজার সেনা পাঠিয়েছে। গত এপ্রিল মাসে উত্তর কোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করে যে, তারা রাশিয়ার সামরিক অভিযানে সহায়তার জন্য সেনা পাঠিয়েছে এবং তাদের বেশ কিছু সৈন্য যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে।
পুতিনকে নববর্ষের বার্তা পাঠানোর আগের দিনই কিম তার কর্মকর্তাদের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন বৃদ্ধি এবং যুদ্ধাস্ত্র তৈরির জন্য আরো কারখানা স্থাপনের নির্দেশ দেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার হার বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার হুমকি মোকাবিলায় নিজেদের স্বল্প, মধ্যম এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের নির্ভুলতা যাচাই করতেই এই পদক্ষেপ। এছাড়া, এই ঘনঘন পরীক্ষা রাশিয়ার কাছে অস্ত্র রপ্তানির সঙ্গেও সম্পর্কিত হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি পিয়ংইয়ং মস্কোকে আর্টিলারি শেল, ক্ষেপণাস্ত্র এবং দূরপাল্লার রকেট সিস্টেম সরবরাহ করেছে বলে ধারণা করা হয়। এর বিনিময়ে রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে আর্থিক সহায়তা, সামরিক প্রযুক্তি এবং খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ করছে।




