মিজবাউল হক, চকরিয়া : কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুইদিন ব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় চারু, কারু ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শিল্প পণ্যের প্রদর্শনী এবং ‘‘৭১ আমাদের স্বাধীনতার সূর্য ও ২৪ বিপ্লবের ধ্রুবতারা’’ স্লোগানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ চিত্রপ্রদর্শনী করা হয়। আজ সোমবার(১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে চকরিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্র বিজয়মঞ্চ মাঠে ফিতা কেটে বিজয়মেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান।
বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফান উদ্দিন এবং চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া।
এছাড়া সেনাবাহিনী, পুলিশ, স্কাউটস, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সতর্ক অবস্থানসহ কড়া নজরদারি লক্ষ্য করা গেছে।
১৬-১৭ ডিসেম্বর দু’দিন ব্যাপী আয়োজিত বিজয়মেলার উদ্বোধনকালে ইউএনও আতিকুর রহমান বলেন, মেলায় মোট ৩০টি স্টলের মধ্যে চকরিয়ার হাতের তৈরি পণ্যের জন্য ২৫টি স্টল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল ক্যাম্প এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। মূলত চকরিয়ার জনগণকে স্থানীয় হাতের তৈরি পণ্য সম্পর্কে অবহিত করাই মূল উদ্দেশ্য।
মেলা মঙ্গলবার সকাল থেকে থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চালু থাকবে। মেলার আশপাশের এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তায় বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমদের প্রত্যেককে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান তিনি।
পরে মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন অতিথিবৃন্দ এবং উদ্যোক্তাদের সাথে প্রদর্শিত পণ্য সম্পর্কে কথা বলেন প্রধান অতিথি আতিকুর রহমান।
মেলায় বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প যেমন, পিঠা, কেক, পুডিং, আচার, ওয়ান পিচ, বেডশিট, চাদর, অর্গানিক মেহেদি, নকশি কাঁথা, থ্রি-পিচ, শাল, শাড়ি, টেবিল মেট, কাপড় ও কাঠের তৈরি শো-পিচ, বাচ্চাদের পাঞ্জাবি, চশমা, মাস্ক, ফতুয়া, বই সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরনের নিত্যপণ্য, খেলনা ও খাবারের সরবরাহ রয়েছে। এতে মেলায় আগত শিশু-কিশোরসহ সব বয়েসিদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
মেলায় প্রদর্শনী স্টলে কথা হয় শিল্পাঞ্জন ফ্যাশন হাউজের জেসমিন আক্তারের সাথে। তিনি জানান, এক বছর ধরে তিনি এই উদ্যোগের মাধ্যমে চকরিয়ার ঐতিহ্যবাহী হাতের তৈরী পণ্যের সরবরাহ করছেন। অনলাইন মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে বিক্রয় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। হাতের তৈরি থ্রি পিচ, ওয়ান পিচ, চাদর, টেবিল মেটসহ বেশকিছু সুসজ্জিত পণ্যের পসরা নিয়ে স্টল দিয়েছেন জেসমিন।
মতামত প্রকাশ করেন চাটগা আচার স্টল থেকে উদ্যোক্তা আসমাউল হোসনা। তিনি বলেন, আমার বানানো রসুন ও আলুবুখারার আচার ইতিমধ্যে বেশ সুনাম অর্জন করেছে। কাস্টমারদের ভালো রিভিউ পাচ্ছি, কাজের আগ্রহও বাড়ছে। এছাড়া স্টলে চালতা, জলপাই, আমড়া, আমসত্বসহ বিভিন্ন ধরনের আচার রেখেছি। হোম মেড হওয়ার কারণে এসব খাবারের পুষ্টিগুণ প্রশ্নাতীত। পাশাপাশি খেজুরের পিঠা ও থ্রি পিচ রয়েছে বলে জানান আসমাউল হোসনা।
মেলায় স্টল নিয়ে প্রদর্শনীতে অংশ নেন সাহিত্য আড্ডার স্বত্তাধীকারি, উদ্যোক্ত অধ্যাপক জামাল সাকিব, এ এন্ড জে ফ্যাশনের উদ্যোক্তা খুকি চৌধুরী, উপজেলা মেডিকেল ক্যাম্প সেবা দিচ্ছেন স্বাস্থ্য সহকারী ফরিদুল আলম ও সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমা রায়, রোকেয়া’স কেক এর উদ্যোক্তা রোকেয়া পারভীন, স্টল খুলেছে মনের রঙ বুটিকস, বুনন শৈলী, অপ্সরী, জীম-হা বুটিকস হাউস, স্টল দিয়েছে সিদরাত-প্রিয়া-আশফা, উর্মি-উষমি কালেকশনসহ ২৫টি ক্ষুদ্রশিল্প হস্ত প্রতিষ্ঠান।




