খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলা হাসপাতালে অনিয়মের বিরুদ্ধে ৮দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবকাঠামো উন্নয়ন, আসন সংখ্যা বৃদ্ধিকরণ, অনিয়ম, দুর্নীতি দূরকরণ, ডেপুটেশনকৃত ডাক্তার, নার্স, মেডিকেল টেকনালজিস্টসহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল কর্মস্থল মাটিরাঙ্গা হাসপাতালে যোগদানের ব্যবস্থা গ্রহণসহ ৮দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দলনের প্রতিনিধি দল।
আজ বুধবার(১৬ অক্টোবর) দুপরের দিকে ছাত্র প্রতিনিধি মো: ফয়জুল্লাহর নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি সিভিল সার্জনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবরে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
৮ দফার মধ্যে রয়েছে-মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫১(একান্ন) শয্যা বিশিষ্টি হাসপাতালে রূপান্তর করা। মাটিরাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডেপুটেশনে থাকা ডাক্তার, নার্স ও স্টাফদের ডেপুটেশন বাতিল করে মূল কর্মস্থল মাটিরাঙ্গা হাসপাতলে যোগদান করা। গাজীপুর কাপাশিয়া জহুরা তাজউদ্দিন নার্সিং ইনস্টিটিউটে ডেপুটেশনে কর্মরত মাহিউদ্দিন জমাদ্দারকে মাটিরাঙ্গা হাসপাতাল হতে অন্যত্র বদলি করা। হাসপাতাললে ডেলিভারি বিভাগকে ব্যবহার করে এম.আর, ডি.এন.সি এবং অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে গর্ভপাতসহ নানা রকম অপকর্ম বন্ধ করা। নার্স পাপিয়া সুলতান শিউলি(ইনডোর ইনচার্জ),নার্স নুনুংপ্রুু চৌধুরী এবং নার্স এলিশ ত্রিপুরাকে অন্যত্র বদলি করা। স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিনের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা। নার্সদের ডিউটির সময় অবশ্যই তাদের নির্দিষ্ট পোশাক পড়ে রোগীর সেবা নিশ্চিত করা। মহিলাদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য গাইনি কন্সালটেন্টের মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
উল্লেখ্য, জনসংখ্যা ও আয়তনের দিক থেকে খাগড়াছড়ির সর্ববৃহৎ উপজেলা মাটিরাঙ্গা। একটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলার এক লাখ দশ হাজার মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য কাগজে কলমে ৩১শয্যার হাসপাতালের থাকলেও অবকাঠামো ও জনবল রয়েছে মাত্র ১০ শয্যার। এরই মাঝে চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য জনবল সংকট দীর্ঘ দিনের।
এছাড়াও অনিয়ম দুর্নীতি যথারীতি পরিণত হয়েছে সাংস্কৃতিতে। প্রায় দশ থেকে পনের বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শক্তির প্রভাব খাটিয়ে গাজীপুর কাপাশিয়া জহুরা তাজউদ্দিন নার্সিং ইনস্টিটিউটে ডেপুটেশনে কর্মরত থেকে শুধুমাত্র হিল এলাউন্সের জন্য মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে বেতন উত্তোলন করেন
মাহিউদ্দিন জমাদ্দার। অথচ জনবল সঙ্কটে রয়েছে মাটিরাঙ্গার হাসপাতাল।
অভিযোগ রয়েছে, ডেলিভারি বিভাগকে নিজস্ব চেম্বারে পরিণত করেছেন কয়েকজন নার্স। বিশেষ করে নুনুংপ্রুু চৌধুরীর বিরুদ্ধে। চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে না পারলে সেবা না দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইতিপূর্বে একাধিক পত্রিকায় তার দুর্নীতির কথা তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশিত হলেও অদৃশ্য রহস্যের কারণে তার কোন বিচার হয়নি। এতে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। অবৈধভাবে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এম.আর, ডি.এন.এর মাধ্যমে গর্ভপাতসহ নানারকম অপকর্মের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। সরকারি উপকরণ থাকা সত্ত্বেও চেকআপ ফি এবং এ.এন.সি কার্ড করতে রোগীদের দিতে হয় উৎকোচ। না হয় চিকিৎসা সেবা জোটেনা সাধারণ রোগীদের। ডেলিভারীর রোগীার মোটা অঙ্কের টাকা দিতে না পারলে মিলেনা চিকিৎসা সেবা। নানা অজুহাতে রোগী প্রেরণ করা হয় খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে।
এ দিকে ডেপুটেশনে থাকা শিশু বিশেষজ্ঞ ওমর ফারুক, এম.বি.বি.এস, বি.সি.এস(জেলা সদর হাসপাতাল), ডা. ইমতিয়াজ চৌধুরী, এম.বি.বি.এস, বি.সি.এস সিভিল সার্জন অফিস,খাগড়াছড়ি, ডা. জি.এম. রাকিব উদ্দিন, এম.বি.বি.এস, বি.সি.এস (জেলা সদর হাসপাতাল, খাগড়াছড়ি, ডা. ফাহাদ বিন জামাল, এম.বি.বি.এস, বি.সি.এস (রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স), ডা. মিউচিং চৌধুরী এমিলি, ডেন্টাল সার্জন, বি.ডি.এস, বি.সি.এস(জেলা সদর হাসপাতাল, খাগড়াছড়ি, ডা. দীপা ত্রিপুরা শুকলা, এম.বি.বি.এস, বি.সি.এস (জেলা সদর হাসপাতাল, খাগড়াছড়ি।
সিনিয়র স্টাফ নার্স-পাইনেসা মারমা(জেলা সদর হাসপাতাল, খাগড়াছড়ি, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী দিপায়ন ত্রিপুরা।(সিভিল সার্জন অফিস, খাগড়াছড়ি), আলেয়া বেগম(পানছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খাগড়াছড়ি)কে ডেপুটেশন বাতিল করে মূল কর্মস্থল মাটিরাঙ্গা হাসপাতলে যোগদান করার দাবি জানানো হয়।




