নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আবদুল মোতালেবের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন নির্বাচন কমিশন। আজ রোববার(১০ ডিসেম্বর) সকালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবন রাজধানী আগারগাঁও এ আপিল শুনানী শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন মোতালেবের প্রার্থীতা বৈধ বলে ঘোষণা দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আবদুল মোতালেবের আইনজীবী মো. আসিফ। প্রার্থীতা ফেরত পাওয়ায় মোতালেবের সমর্থকরা সংসদীয় এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করে উল্লাস প্রকাশ করেন।
জানা যায়, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৫ আসনের প্রার্থীদের বিগত ০৪ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই। ওই দিন এ সংসদীয় আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে ১ শতাংশ ভোটারে স্বাক্ষর জটিলতায় আবদুল মোতালেবের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। বাতিলের পর দিন ৫ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মোতালেব নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীতা ফিরে পেতে আপিল করেন। আজ রোববার(১০ ডিসেম্বর) আপিল শুনানীর দিন ধার্য্য ছিল। এতে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের নেতৃত্বে প্রায় ২০জন আইনজীবী মোতালেবের পক্ষে শুনানীতে অংশ নেন।
এ ব্যাপারে মোতালেবের পক্ষে শুনানীতে অংশ নেওয়া এডভোকেট মো. আসিফ বলেন, আপিল শুনানীর সময় কমিশনের নিকট এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন স্যারের নেতৃত্বে আইনজীবীরা সকালে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে ১শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরে গড়মিলের কারণটি উপস্থাপনের পর কমিশন গুরুত্বের সহিত বিষয়টি উপলব্ধি করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবের প্রার্থীতা বৈধ বলে রায় দিয়েছেন। তিনি এখন নিজের পছন্দমত প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে আর কোন বাধা নেই বলে কমিশন জানিয়েছেন।
আবদুল মোতালেব বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দিন আমার সমর্থক লোহাগাড়া উপজেলার কলাউজানের বাসিন্দা পরিমল কান্তি উপস্থিত ছিলেন। তিনি অটোরিক্সা চালক ও কৃষক হওয়ায় সম্পূর্ণ গ্রামীন পরিবেশে বড় হয়েছে। যার ফলে রিটার্নিং কর্মকর্তার সাধু-ভাষা তিনি বুঝতে পারেনি। যার কারণে তিনি (রিটার্নিং কর্মকর্তা) মনে করেছেন ১ শতাংশ ভোটারে তার স্বাক্ষর সঠিক নয়। এছাড়া আমার অপর সমর্থক হচ্ছেন সাতকানিয়া উপজেলার চরতি ইউনিয়নের বাসিন্দা জেসমিন আক্তার। তিনি ওই দিন নানা ভয়-ভীতি পাওয়ার কারণে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না। যার ফলে আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আজ সকালে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে পরিমল ও জেসমিন স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে এবং তাদের ভোটার আইডি কার্ডসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কমিশনের নিকট উপস্থাপন করেছেন। তারা আমার পক্ষে পুর্ণ সমর্থন রয়েছে বলে কমিশনের নিকট ভাষ্য দেন। ফলে কমিশন বিষয়টি বিবেচনা করে আমার মনোনয়নপত্রের বৈধ ঘোষণা করেন।
সাতকানিয়ার চরতি ইউনিয়নের বাসিন্দা খোরশেদ আলম বলেন, মোতালেব সাহেবের প্রার্থীতা ফেরত আসায় এলাকার লোকজনের আশার সঞ্চার হয়েছে এবং এলাকায় মিষ্টি বিতরণ হয়েছে।
লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দীন হিরু বলেন, প্রার্থীতা বাতিল হওয়ার পর মোতালেব ভাইয়ের সমর্থকরা হতাশ হয়েছিল। এখন তারা পুরোদমে তার জন্য ভোটের মাঠে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেব তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনে ন্যায় বিচার পেয়েছি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
মোতালেব আরও বলেন, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার জনগণের অংশগ্রহণে স্বচ্ছতা ও প্রতিদ্বন্ধিতামূলক নির্বাচন আশা করছি। আমি মানুষের সেবা করার জন্য নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আল্লাহ আমাকে প্রার্থীতা ফেরত দিয়ে সম্মান দিয়েছেন। জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে আমি সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ার মানুষের সেবা করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চাই। আল্লাহর রহমতে আমি সাধারণ মানুষের ভালবাসায় বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো বলে আশা করছি।




