সুকান্ত বিকাশ ধর, সাতকানিয়া: দেশে অনেক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও সরকারি সম্পদ দখলের অভিযোগ যখন হরহামেশা, সে মুহূর্তে নিজের ক্রয়কৃত জমি মসজিদ ও জনগনের প্রয়োজনে দান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ- সাতকানিয়া আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম চৌধুরী। সম্প্রতি তিনি উত্তর চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে তিনটি মসজিদ ও জনগনের প্রয়োজনে প্রায় ১২০ কড়া জমি দানপত্র করে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
জানা যায়, সম্প্রতি সন্দ্বীপের রহতমপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দলইপাড়া জামে মসজিদে ২২কড়া, সন্দ্বীপ পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপাড়া জামে মসজিদে সাড়ে ১৬ কড়া, শেখ মারুফ গোমস্তার পাঞ্জেগানা মসজিদে ১৬ কড়া এবং রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দক্ষিণ-পশ্চিম কর্ণারে ৬৫ কড়া জমি দান করেন এম.পি নজরুল।
এ ব্যাপারে শেখ মারুফ গোমস্তার পাঞ্জেগানা মসজিদের সেক্রেটারি মো.জসিম উদ্দিন এম.পি নজরুলের জমি দানের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এম.পি নজরুল সাহেব একজন উদার ও ধর্মের প্রতি অনুরাগী লোক। তিনি সন্দ্বীপে ঠিকাদারি কাজ করার সময় জমিগুলো ক্রয় করেছিলেন। অনেকেই তাঁর জমি কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অর্থের মোহ ত্যাগ করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও জনগণের প্রয়োজনে জমি দান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। একইভাবে দলইপাড়া মসজিদের সভাপতি মশিউর রহমান বেলাল ও নতুনপাড়া মসজিদের সভাপতি হাজী মোদাচ্ছের আহম্মদ এম.পি নজরুলের জমি দানের বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেন।
এম.পি নজরুলের ব্যক্তিগত সহকারি সুব্রত বড়ুয়া বলেন, ১৯৮৬ সালের দিকে স্যার সন্দ্বীপ এলাকায় ঠিকাদারি কাজ করেছেন। সেসময় ওই এলাকাগুলোতে সড়কের উন্নয়নমূলক কাজ করতে গিয়ে প্রয়োজনীয় মাটির জন্য জমি ক্রয় করে সেখানকার মাটি ব্যবহার করা হত। কাজ শেষ হয়ে গেলে স্যার সন্দ্বীপ এলাকা থেকে চলে আসেন। কিন্তু জমিগুলো বিক্রি করেননি। বিগত কয়েক বছর আগে স্যারের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ইচ্ছে অনুযায়ী জমিগুলো মসজিদ ও জনগনের প্রয়োজনে দান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সম্প্রতি ওই জমিগুলো রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়েছে।
সাতকানিয়ার পুরানগড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আ.ফ.ম মাহাবুবুল হক সিকদার বলেন, এম.পি নজরুল সাহেব জন্মগতভাবে জমিদার পরিবারের সন্তান। এছাড়া তিনি একজন উদার প্রকৃতির লোক। এম.পি নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকে তিনি একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার। সন্দ্বীপ এলাকায় ঠিকাদারি কাজ করার সময় ক্রয়কৃত জমিগুলো দান করে মহানুভবতা ও ধর্মপ্রাণ ব্যক্তির পরিচয় দিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, চন্দনাইশের ধোপাছড়ি ইউনিয়ন এলাকায় এম.পি সাহেবের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক অনেক জায়গা গরীব ও মেহনতি মানুষ বিনামূল্যে ভোগ করে আসছে যুগ যুগ ধরে। এম.পি নজরুলের মত জনবান্ধব ও মানবদরদী জনপ্রতিনিধি দেশে কয়েকজন খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
চন্দনাইশ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এ এস এম মুছা তছলিম বলেন, সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকা এম.পি নজরুলের পারিবারিক সংস্কৃতি। এছাড়া দলের কর্মীদের জন্যও নিবেদিত তিনি। তাঁর মত সৎ, উদার ও ভালো এম.পি দেশে খুব কমই আছে। তাই মসজিদে জমি দানের বিষয়টি তাঁর জন্য নতুন বিষয় নয়।
সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমি এবং আমার পরিবার শুধু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, অসহায়, গরীব ও দুস্থদের সহায়তার কাজ করছে অনেক আগে থেকে। এরই অংশ হিসেবে জমিগুলো দান করা হয়েছে। তিনি বলেন, মানুষের জন্য কাজ করতে পারা অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। মানুষের কাছে থাকার মানসে এমন কাজ প্রায় সময় করে থাকি।




