নগর প্রতিবেদক: একেক জন হাজী বাংলাদেশের এম্বাসেডরের দায়িত্ব পালন করবে বলে মত প্রকাশ করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। আজ শনিবার (২৭ মে) বেলা ৩ টায় জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের নীচ তলায় মেয়র হজ্ব কাফেলার হাজী সাহেবানদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমার পিতা সাবেক মেয়র এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত মেয়র হজ্ব কাফেলা প্রতিবারের মতো এবারও হাজী সাহেবানদের নিয়ে পবিত্র হজ্বের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে। ভিন্ন পরিবেশে, ভিন্ন আবহাওয়ায় আমাদের হাজীদেরকে হজ্বের যাবতীয় করণীয় পালন করতে হবে। হজ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি রক্ষার কাজে নিয়োজিত থাকবেন হাজীগন। তাই সদা সর্বদা সে দেশের আইন কানুনের উপর শ্রদ্ধাশীল থাকার জন্য হাজীদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, এ মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২ লক্ষ হাজী ওমরাহ আদায় করেছেন। সরকারের ঐকান্তিক সহযোগিতা ছাড়া যা কখনোই সম্ভব হতো না। ইতিপূর্বে বিএনপি সরকারের আমলে বাংলাদেশের কোটা ছিল ৩০-৪০ হাজার। বর্তমানে সৌদি সরকার ১,২৭,০০০ কোটা প্রদান করেছেন যা বাংলাদেশের জন্য এক বিরাট অর্জন। পাশাপাশি হজ্ব নিয়ে যারা প্রতারণা করবে তাদের জন্যও কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে সরকার। মসজিদ এবং মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করছেন।
তিনি আরো বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে কোরআন-হাদিসের বই বিলির মধ্য দিয়ে ইসলামের প্রচার ও প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের প্রতিও সরকার সহানুভূতিশীল। উপমন্ত্রী দেশের শান্তি, নিরাপত্তা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সূচিত উন্নয়ন অগ্রযাত্রার জন্য হাজী সাহেবানদের নিকট দোয়া চান।
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক খোরশেদ আলম সুজনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় হজ্বের করনীয়ের উপর গুরুত্বপূর্ন বয়ান করেন গরীবউল্ল্যাহ শাহ মসজিদের খতিব বিশিষ্ট ইসলামী গবেষক ও চিন্তাবিদ মাওলানা আনিসুজ্জামান এবং মাওলানা আবুল কাসেম আল কাদেরী।

সভায় আলেমে দ্বীনগন বলেন, মোহমায়া ত্যাগ করে পরম করুনাময়ের নৈকট্য লাভের আশায় যারা নিজেকে পুরোপুরি সমর্পন করতে পেরেছে তারাই হজ্বের পূর্ণতা নিয়ে ঘরে ফিরতে পেরেছে।
প্রশিক্ষন কর্মশালায় হজ্বের করনীয়ের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে খোরশেদ আলম সুজন বলেন, হজ্ব ইবাদতের ক্যাম্প লাইফ। হাজীগন কঠোর শৃংখলা, ধৈর্য্য, নিয়মানুবর্তিতা এবং শারীরিক ও মানসিক একাগ্রতার মাধ্যমে হজ্বের ইবাদত সম্পন্ন করে থাকেন। হাজীগন হজ্বব্রত পালনের মাধ্যমে যেমন আল্লাহপাক নির্ধারিত একটি ফরজ ইবাদত সম্পন্ন করেন অন্যদিকে হজ্বের সফরে আচার আচরনের মধ্য দিয়ে নিজ দেশের সামাজিক উৎকর্ষতাকেও তুলে ধরতে পারেন।

তিনি বলেন, কোন অবস্থাতেই ইবাদতের মগ্ন পরিবেশ যাতে ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে খুবই সর্তক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে দেশ থেকে ভিন্নতর আবহাওয়া ও সামাজিক পরিবেশে গিয়ে হজ্বের কাজ সমাধা করতে হবে। স্বল্পমূল্যে সুশৃঙ্খলভাবে হজ্বের করনীয় পালনে হাজীদের সেবাদানের জন্য চট্টগ্রামের প্রথম নির্বাচিত মেয়র এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী সম্পূর্ন অলাভজনক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কতিপয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণকে নিয়ে মেয়র হজ্ব কাফেলা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মক্কা ও মদিনায় এবং জমারায় থেকে নির্বিঘ্নে হজ্ব পালনে সহযোগিতা করাই এ প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য। প্রায় ৩০ বছরের অধিক সময় ধরে খেদমত করা এ প্রতিষ্ঠানটি এ বছর ৩০০ জন হাজী নিয়ে মক্কা-মদিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করবেন। বর্তমানে ৫৮নং মুয়াল্লিম সিরাজ হোসেইন এর তত্ত্বাবধানে মক্কা-মদিনায় যাবতীয় সেবা গ্রহণ করবেন মেয়র হজ্ব কাফেলা।
প্রশিক্ষন কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আতাউর রহমান, মফিজুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন, মুসা মিরদাদ, মো. ইউনুস এবং সংস্থার সিইও একেএম নুরুল আনোয়ার প্রমূখ।




