কল্পলোক মিডিয়া টাওয়ার সাংবাদিক ফ্ল্যাট মালিক স্টীয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান, প্রবীণ সাংবাদিক নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকতের সভাপতিত্বে এবং স্টীয়ারিং কমিটির সম্পাদক, বিশিষ্ট আইনজীবী মো. আবিদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান স্বপন কুমার মল্লিক, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি স.ম. ইব্রাহিম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সিনিয়র সদস্য প্রণব বড়ুয়া অর্ণব, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী আবুল মনসুর, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. শামসুল হক, সাবেক অর্থ সম্পাদক আলহাজ্ব নুর উদ্দিন আহমদ, সাবেক পরিচালক যীশু রায় চৌধুরী, সাবেক পরিচালক মনজুরুল আলম মনজু, বিশ্বজিৎ বড়–য়া, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক মোহাম্মদ ফারুক, শেখর ত্রিপাঠি, রনজিত দে, প্রভাত বড়ুয়া, গোলাম সরওয়ার, প্রদীপ নন্দী, শিশির বড়ুয়া, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সমাজসেবা সম্পাদক আইয়ুব আলী, চট্টগ্রাম ক্রীড়া সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি মাহবুব উর রহমান, প্রবীণ সাংবাদিক মাখন লাল সরকার, এ.কে.এম কমরুল ইসলাম চৌধুরী, জাকের হোসেন লুলু, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। মানববন্ধনে ঘোষণা পাঠ করেন স্টীয়ারিং কমিটির সম্পাদক এডভোকেট মোঃ আবিদ হোসেন।

ঘোষণায় বলা হয়, ২০০৯ সালে ৬৭ জন সাংবাদিকের টাকা দিয়ে কল্পলোক আবাসিক এলাকায় সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটির নামে সিডিএ থেকে একটি প্লট কেনা হয় ফ্ল্যাটব্লক নির্মাণের জন্য। সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটির তৎ সময়ের কমিটি জেনেসিস নামের একটি অখ্যাত বিল্ডার্স প্রতিষ্ঠানের সাথে ফ্ল্যাট ব্লক নির্মাণের জন্য চুক্তি করে। চুক্তি অনুসারে সর্বোচ্চ সময় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেবার শর্ত থাকলেও বিল্ডার্স প্রতিষ্ঠান জেনেসিস এখনো পর্যন্ত ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিতে পারেনি। ২০১৬ সালে সম্পাদিত সম্পূরক চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৬৭ জন সাংবাদিককে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিতে না পারলে সময়োপযোগী ফ্ল্যাট ভাড়া প্রদানের শর্ত সন্নিবেশ হয়। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেবার সময় শেষ হয়েছে। এখন সাংবাদিক ফ্ল্যাট মালিকদের চার বছরের ফ্ল্যাট ভাড়া বাকী রয়েছে। অবিলম্বে বকেয়া ফ্ল্যাট ভাড়া ৬৭ জন ফ্ল্যাট মালিক ও মৃত ফ্ল্যাট মালিকদের পরিবারকে পরিশোধ করে ফ্ল্যাট নির্মাণ কাজ তরান্বিত ও সম্পন্ন করা এবং প্রকৃত মালিক, স্থলাভিষিক্ত ও নমিনিদের বুঝিয়ে দেয়া প্রয়োজন।

চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের আবাসন সংকটে নিরসনে বিগত শতাব্দীর আশির দশকে তৎকালীন সরকার চট্টগ্রাম শহরের শেরশাহ এলাকায় ১৬ একর ভূমি বরাদ্দ দেয় চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটিকে। এই সোসাইটির মাধ্যমে সে সময়ে ১০৯ জন সাংবাদিককে প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। এই সোসাইটি কল্পলোক আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট ব্লক নির্মাণের জমি ক্রয় করে, এই সোসাইটি ২০০৭ সালে সিডিএ থেকে অনুমতি নিয়ে শেরশাহ এলাকায় আবাসন সুবিধা বঞ্চিত সাংবাদিকদের জন্য ফ্ল্যাট ব্লক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুরাচারী, শয়তানদের কারণে এই উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হয়। চিহ্নিত এই দুরাচারী, শয়তানচক্র এখন সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটিকে অবসায়নের ষড়যন্ত্র করছে কতিপয় দুর্নীতিবাজ, নীতিজ্ঞান শূন্য আমলাকে নিয়ে।

অতীতে যে সাংবাদিকরা যা অর্জন করেছিলেন তা সব তাদের নয়- এখন যারা সাংবাদিকতায় আছেন এতে তাদেরও অংশ রয়েছে। এটা যারা বিশ্বাস করে না, বুঝতে হবে তারা কঠিন গোঁড়ামি ও ভ্রান্তিতে ডুবে আছেন। সরকার সাংবাদিকদের জায়গা দিয়েছিল, নিজেদের আবাসন সংকট নিরসনের জন্য, গৃহ নির্মাণ করে থাকার জন্য- ব্যবসা করার জন্য নয়। তিনটি মৌলিক বিষয় নিয়ে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজের আজকের এই মানববন্ধন। ১. কল্পলোক মিডিয়া টাওয়ারের সাংবাদিক ফ্ল্যাট ব্লক নির্মাণ কাজ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করে প্রকৃত মালিকদের ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেয়া ও বকেয়া প্রাপ্য ফ্ল্যাট ভাড়া পরিশোধে বিল্ডার্স প্রতিষ্ঠান জেনেসিসকে তাগিদ দেয়া। ২. চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি অবসায়নের অপচেষ্টার চক্রান্তকারীদের কঠোর হস্তে দমন করার পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ৩. আবাসন সুবিধা বঞ্চিত সাংবাদিকদের জন্য শেরশাহ সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ফ্ল্যাটব্লক নির্মাণে বাধা প্রদানকারী দুরাচারী, শয়তানদের প্রতিরোধে বৃহত্তর সাংবাদিক ঐক্য গড়ে তোলো।

এই তিনটি বিষয় সমাধানের জন্য আমরা কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ করবো। তবে আমাদের কর্মসূচী হবে অহিংস ও আইনসম্মত। কারো ব্যক্তিগত আক্রোশ চরিতার্থ করার সুযোগ এখানে থাকবে না। ইনশাল্লাহ আমাদের আন্দোলন সফল হবে। জয় হোক মেহনতি সাংবাদিকদের সাংবাদিক ঐক্য- জিন্দাবাদ।

পরিশেষে আপনাদের অনুরোধ করতে চাই, সতর্ক থাকার জন্য। সতর্ক হতে হবে ও মুনাফেকদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। মুনাফেকরা যদি মজলুম সাংবাদিকদের সাথে আন্দোলনে শামিল হয়, তাহলে ওরা বিভ্রান্তি বাড়িয়ে দেবে। এই মুনাফেকরা মজলুম ও সংগ্রামী সাংবাদিকদের মধ্যে ঘোরাফেরা করে শুধু বিভেদ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে। মুনাফেকরা মিঠাবুলি দিয়ে আমাদের সহজ সরল সাংবাদিকদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে, কিন্তু অন্তরে পোষণ করে বিদ্বেষ। আবারো বলছি সকল সাংবাদিকের দায়মুক্তির জন্য দুর্নীতিবাজ, দুরাচারী সাংবাদিকদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। মুনাফেকদের চেনার এবং তাদের কার্যকলাপ অনুধাবনের জন্য সহজাত বিচার বুদ্ধির প্রয়োগ করার আহ্বান জানাই। ঘোষণায় চট্টগ্রাম সাংবাদিকদের আবাসিক সংকটের সম্পূর্ণ বিষয়টি নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।