মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, (পেকুয়া): কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় রাতের আঁধারে খোদ বিট অফিসেই বিট কর্মকর্তা ও বনপ্রহরীদের উপর হামলা চালিয়ে চোরাই কাঠভর্তি পিকআপ গাড়ি ছিনিয়ে নিয়েছে সংঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারীরা। হামলায় বন বিভাগের ৩ জন আহত হয়েছে। আহতরা হলেন, উপকূলীয় বন বিভাগের মগনামা বনবিট কর্মকর্তা মো: হোসনে মোবারক, মগনামা বনবিটের প্রহরী আবছার উদ্দিন ও বোটম্যান আনোয়ার হোছাইন। তারা পেকুয়া সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে, গতকাল ১৯ এপ্রিল দিবাগত রাত ২টার দিকে উপকূলীয় বন বিভাগের পেকুয়া উপজেলার মগনামা বনবিট কার্যালয়ের সামনে।
আগত বিট কর্মকর্তা মো: হোসনে মোবারক এ প্রতিনিধিকে জানান, গতকাল ১৯ এপ্রিল রাত ১২ টার দিকে উপকূলীয় বন বিভাগের চনুয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা এবিএম সাইদুর রহমান আকন্দ পেকুয়া বাজার থেকে চোরাই কাঠভর্তি একটি পিকআপ গাড়ি আটক করে মগনামা বনবিট কার্যালয়ে নিয়ে যায়। চোরাই কাঠভর্তি পিকআপ গাড়ি লামার আজিজ নগর থেকে পেকুয়া বাজারে আনা হচ্ছিলো।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, চোরাই কাঠভর্তি গাড়িটি রেঞ্জ কর্মকর্তা মগনামা বনবিটে নিয়ে যাওয়ার পর পেকুয়া বাজারের কাঠ ব্যবসায়ী ফোরকান, আবু ছালেকসহ আরো কয়েকজন মগনামা বনবিটে কাঠভর্তি পিকআপ ছাড়িয়ে নিতে যান। পেকুয়া বাজারের কাঠ ব্যবসায়ীরা মগনামা বনবিটে পৌঁছার পর আজিজ নগর এলাকা থেকে একটি নোহা গাড়ি যোগে সংঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেটের মূলহোতা মনির, জব্বার ও ইদ্রিসসহ আরো কয়েকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেখানে যান। এসময় কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই আজিজ নগরের কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেটের মূলহোতা মনির, জব্বার ও ইদ্রিস মগনামা বনবিটের কর্মকর্তা কর্মচারীদর উপর বেপরোয়া হামলা চালায়। হামলায় মগনামা বনবিট কর্মকর্তাসহ দুই কর্মচারী আহত হয়। এ সুযোগে সংঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেট মগনামা বনবিট থেকে রেঞ্জ কর্মকর্তার জব্দকৃত চোরাই কাঠভর্তি পিকআপ গাড়িটি ছিনতাই করে পেকুয়া বাজারে নিয়ে আসেন। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে মগনামা বনবিটে পৌঁছালে অন্যান্য কাঠ পাচারকারীরা পালিয়ে যায়।
কাঠ পাচারকারীদের হামলায় আহত বনবিট কর্মকর্তা মোঃ হোসনে মোবারক জানান,হামলায় তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি এ ঘটনায় উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন এবং হামলাকারী কাঠ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
উপকূলীয় বন বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা বন বিভাগের কার্যালয়ে ঢুকে বনরক্ষীদের মারধর করে জব্দ করা গাছভর্তি গাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে দুঃসাহসের পরিচয় দিয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বনরক্ষীদের ওপর এমন হামলা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। তাই গাছ চোর চক্রের চিহ্নিত সদস্যদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। পেকুয়া থানার ওসি কানন সরকার জানান, মগনামা বনবিট কর্মকর্তা ২০ এপ্রিল বিকালে থানায় এসেছিলেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।



