চকরিয়া অফিস: চকরিয়া জনস্বাস্থ্য অফিসের গুদাম থেকে প্রায় ৩৬ লাখ টাকা মূল্যের ৯টি বিদেশি মোটরসহ গভীর নলকূপের মালামাল রহস্যজনকভাবে চুরি হয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট উপকারভোগী প্রায় ৪ হাজার পরিবারেরর ২০ হাজার মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠিকাদার মনির ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক নাসিম ফকির বাদী হয়ে চকরিয়া জনস্বাস্থ্য অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী আল আমিন বিশ্বাস ও পাহারাদার ইমরান হোসেন (২৫) কে আসামি করে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) চকরিয়া থানায় এজাহার দায়ের করেন।
বাদী নাসিম ফকির বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু সংকট মোকাবিলায় মাল্টিসেক্টর প্রজেক্ট (জিওবি- বিশ্ব ব্যাংক) আওতাধীন চকরিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ৮টি প্রকল্পের জন্য ইতালি থেকে আমদানিকৃত মুল্যবান যন্ত্রপাতি গত মার্চ মাসের শুরুতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের গুদামে মজুদ রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে ৯টি সাবমার্সিবল মোটর ও ৩টি সাবমার্সিবল পাম্প উধাও হয়ে গেছে। যার ফলে বাকি যন্ত্রাংশ কোন কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৩৬ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট উপকারভোগীদের বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটানো সুদুর পরাহত হয়ে পড়েছে। আবার এলসি খোলে ইতালি থেকে এসব মালামাল আনা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
চুরির ঘটনাটি গত ১৫ অক্টোবর জানতে পারেন নাসিম ফকির। তখন থেকে অফিসের কর্মকর্তারাসহ ওই কেয়ারটেকারকে চাপ দিলে সে বার বার সময় নিয়ে এখন আত্মগোপনে চলে গেছে। বিষয়টি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী ইফতেখারুল আলমকসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলে উনারা থানায় মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন।
তিনি আরও বলেন, চকরিয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী আল আমিন বিশ্বাসের যোগসাজশে অফিসের কেয়ারটেকার ইমরান হোসেনই এগুলো চুরি করেছে। ওই পাহারাদারকে নিয়োগ দিয়েছেন আল আমিন বিশ্বাস।’
এ বিষয়ে উপসহকারী প্রকৌশলী আল আমিন বিশ্বাসের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিসের নির্দিষ্ট কোন পাহারাদার নেই। ওই গুদামে পাঁচ থেকে ছয়জন ঠিকাদারের মালামাল রাখা হয়। তাদের অর্থে একজন পাহারাদার বা কেয়ারটেকার রাখা হয়েছে। ইতোপূর্বেও সেখান থেকে মালামাল চুরির ঘটনা ঘটে। ওই সময় তাকে বাদ দিতে চাইলে কয়েকজন ঠিকাদার বাদ সাধে, তাই বাদ দেওয়া যায়নি।
হাইসিকিউরিটি সম্পন্ন চকরিয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের গুদাম থেকে মুল্যবান যন্ত্রপাতি চুরির ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী ইফতেখারুল আলম বলেন, আমি এই অফিসে যোগদানের পূর্বেও এখান থেকে মালামাল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এই চুরির বিষয়টি আমরা সিরিয়াসভাবে নিয়েছি। এ ঘটনায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের কারো সংশ্লিষ্টতা পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল আনোয়ার জানান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের যন্ত্রপাতি চুরি সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে তদন্ত চলছে।




