সিলেট প্রতিনিধি :সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের অপসারণ দাবীতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ১৩ দফা অভিযোগ সংবলিত স্মারকলিপি প্রদান করেছেন সুনামগঞ্জের জুলাই যোদ্ধারা। পরে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে সুনামগঞ্জের ছাত্র জনতা ও জুলাই যোদ্ধাদের আন্দোলন সংগ্রামের প্রেক্ষিতে গণদাবীর প্রেক্ষাপটে দুর্নীতিবাজ জেলা প্রশাসক ড.মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া (পরিচিতি নং ১৫৯০৭) কে অবিলম্বে অপসারণ দাবীতে এক সংক্ষিপ্ত মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
জুলাই রেভ্যুলুশনারি এলায়েন্স এর সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির আহবায়ক অতি গুরুতর আহত জুলাইযোদ্ধা মোঃ জহুর আলীর সভাপতিত্বে ও জুলাই যোদ্ধা মোঃ আফতাব উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন,জেলা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক শেখ এমদাদুল হক,বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার আহবায়ক এন.ডি উছমান গণি,জেলা ওয়ারিওর্স অব জুলাই এর যুগ্ম আহবায়ক রেদোয়ান আহমেদ,গুরুতর আহত জুলাই যোদ্ধা মোঃ উকিল আলী,জুলাইযোদ্ধা আল আমিন,রজব আলী,লোকমান আহমদ,রমজান মিয়া,সিদ্দিক আহমদ,জাকারিয়া আহমদ,মাছুম মিয়া,তানভীর আহমদ,ইমরান আলী,জুয়েল রানা,শ্রীকান্ত দাস,আবু রায়হান ও রহমত আলীসহ সুনামগঞ্জের জুলাই যোদ্ধারা।
মানবন্ধনে বক্তারা বলেন,আওয়ামীলীগ পূনর্বাসণ ও স্বৈরাচারের দোসরদের পৃষ্ঠপোষকতায় জড়িত সুনামগঞ্জের দুর্নীতিবাজ জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও এডিএম মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে অপসারণের দাবীতে গত ৪ঠা অক্টোবর শনিবার বিকেল ৩টায় সুনামগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্টে এক বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় আমরা সুনামগঞ্জের ছাত্রজনতা প্রতিবাদ সভা করি। আমাদের আন্দোলনের ফলে দুর্নীতিবাজ এডিএম মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে সুনামগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করা হলেও দুর্নীতির মূলহোতা জেলা প্রশাসক ড.মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সনের ১২ সেপ্টেম্বর ড.মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পরপরই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন পরবর্তী সুনামগঞ্জ জেলায় কিভাবে সর্বক্ষেত্রে সংস্কারসহ প্রশাসনিক পূনর্গঠনের মাধ্যমে জেলার শাসনভার পরিচালনা করবেন সে ব্যাপারে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল,সাংবাদিক ও জুলাই যোদ্ধাদের সাথে পৃথক পৃথকভাবে মত বিনিময় করেন।
এসময় সাংবাদিকরা গত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে কিভাবে জেলায় জাতীয় রাজস্ব আয়ের অন্যতম ক্ষেত্র যাদুকাটা নদী ও ধোপাজান নদী বালি পাথর মহাল লুটতরাজ হয়েছে,পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাবিখা প্রকল্পের আওতায় অপ্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মাণের নামে সরকারের বরাদ্দ আত্মসাৎ ও অপচয় করা হয়েছে এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র” এর স্থানীয় প্রতিনিধি দ্বারা আলেম ওলামাদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি,চোরাই কয়লা ও চোরাই পথে ভারত হতে পেয়াজ আমদানী ইত্যাদি বিষয়ে সুস্পষ্ট মতামত ব্যক্ত করেন। ৩রা আগস্ট ২০২৪ইং জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণাধীন শহরের শহীদ জগৎজ্যোতি পাঠাগার মিলনায়তনে বসে প্রকাশ্য সভা করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে ঠেকানোর জন্য কতিপয় আওয়ামী দোসর গোপনীয় সভা করে ছাত্র জনতার উপর রাষ্ট্র ও প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার করে পরদিন ৪ঠা আগস্ট শান্তি ও সম্প্রীতির শহর সুনামগঞ্জে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সূত্রপাত করেছিল সেসব দোসরদের বিরুদ্ধে সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দাবী জানালে জেলা প্রশাসক তার কার্যালয়ে কোন পোষ্য সাংবাদিক থাকবেনা এবং পাবলিক লাইব্রেরির সিসি ফুটেজ উদ্ধার করে ঐসব দোসরদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু অত্যন্ত দু:খের বিষয় ঘুরেফিরে তিনি স্বৈরাচারের চিহ্নিত ঐসব দোসরদের নিয়েই তার শাসনভার পরিচালনা করে যাচ্ছেন বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়।
বক্তারা ড.ইলিয়াস মিয়াকে সুনামগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার না করলে আরোও কঠোর কর্মসুচি পালন করবেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।