দি ক্রাইম ডেস্ক: টাঙ্গা‌ইলের সখীপুর উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের কামালিয়া চালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে প্রায় দুই দশক ধরে বসছে বাঁশের হাট। নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে সোমবারেই হাট বসার কথা থাকলেও রোববার সকাল থেকেই ব্যবসায়ীরা বাঁশ নিয়ে আসা শুরু করেন।

এতে বিদ্যালয়ের ১১০ জন কোমলমতি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা, খেলাধুলা ও শারীরিক চর্চা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত সরকারি স্কুলের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে এমন জটিলতা। এতে এলাকার স্থানীয় একটি পক্ষ স্কুলমাঠের একাংশে দীর্ঘদিন ধরে বাঁশের হাট বাসিয়ে আসছে। শিক্ষার্থীদের অসুবিধা ও নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে হাট বসাতে নিষেধ করা হলেও বসানো হচ্ছে হাট। এ নিয়ে স্কুলটির অভিভাবক ও স্থানীদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের ভেতরেই জমে উঠেছে বাঁশের হাট। হাজার হাজার বাঁশ বিদ্যালয় মাঠে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বাঁশগুলো কাঁধে করে বিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়েই আনা-নেওয়া করছেন, আর সেই একই ফটক দিয়ে শিক্ষার্থীরাও যাতায়াত করছে। ফলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

তারা জানান, সপ্তাহে দুই দিন (রোববার ও সোমবার) পুরো মাঠ অচল হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা মাঠে স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা তো দূরের কথা, বারান্দার সামনেও জায়গা থাকে না। এমনকি শ্রেণীকক্ষের সামনেও বাঁশ রাখা হয় বিক্রির উদ্দেশ্যে। হাট শেষ হলেও মাঠে পড়ে থাকে বাঁশের কঞ্চি, ধারালো বাঁশের টুকরো ও অন্যান্য আবর্জনা। ফলে সপ্তাহজুড়েই শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ ও সাকিব জানায়, ‘মাঠে বাঁশ রাখায় কাদা হয়ে যায়, তাই আমরা ফুটবল খেলতে পারি না।’

আরেক শিক্ষার্থী আরাফাত জানায়, ‘মাঠে বাঁশ থাকায় একদিন আমি আঘাত পেয়েছিলাম।’

অভিভাবক আবদুল করিম বলেন, ‘বিদ্যালয় মাঠে বাঁশ রাখায় বাচ্চাদের খেলাধুলায় বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে।’

এলাকাবাসী সাব্বির বলেন, ‘আমাদের উচিৎ মাঠটা রক্ষা করা, যাতে বিদ্যালয় ও এলাকার শিশুরা সুন্দরভাবে খেলতে পারে।’

এদিকে হাটের ইজারাদার নব্বেছ আলী দাবি করেন, এই মাঠ বিদ্যালয়ের জমি নয়, এটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। জমির মালিকানা দাবি করে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, বিদ্যালয়ের জমি আমার নানা দান করেছিলেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের সামনের অনেকটা জায়গা ব্যক্তি মালিকানা। জোরপূর্বক সীমানা প্রাচীর দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম মিয়া বলেন, ‘আমি ২০১৮ সাল থেকে বিদ্যালয়ের দায়িত্বে আছি। বহু বছর ধরেই বিদ্যালয় মাঠে বাঁশের হাট বসছে। আমি আসার পর সীমানা প্রাচীর হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও খেলাধুলা ব্যাহত হচ্ছে। অনেকবার নিষেধ করেছি, কিন্তু তারা শোনেন না। শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছি। বিদ্যালয়ের জমি চিহ্নিত না হওয়ায় সমস্যাটা জটিল হচ্ছে। আমরা চাই মাঠ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকুক, শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর হোক।’

উপজেলা শিক্ষা অফিসার খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। ইতোমধ্যে বিষয়টি জেনেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও খেলাধুলার স্বার্থে মাঠটি পুরোপুরি হাটমুক্ত করা হবে।’

এ প্রস‌ঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল রনী বলেন, ‘বিদ্যালয়ের জমি বা মাঠ দখল করে কোনো হাট বসা অগ্রহণ‌যোগ‌্য, খেলার মাঠ প্রধানত শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা ও শারীরিক বিকাশের জন্য সংরক্ষিত। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ও খেলাধুলা ব‌্যাহত না হয় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকে।’

দি ক্রাইম ডেস্ক: টাঙ্গা‌ইলের সখীপুর উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের কামালিয়া চালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে প্রায় দুই দশক ধরে বসছে বাঁশের হাট। নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে সোমবারেই হাট বসার কথা থাকলেও রোববার সকাল থেকেই ব্যবসায়ীরা বাঁশ নিয়ে আসা শুরু করেন।

এতে বিদ্যালয়ের ১১০ জন কোমলমতি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা, খেলাধুলা ও শারীরিক চর্চা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত সরকারি স্কুলের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে এমন জটিলতা। এতে এলাকার স্থানীয় একটি পক্ষ স্কুলমাঠের একাংশে দীর্ঘদিন ধরে বাঁশের হাট বাসিয়ে আসছে। শিক্ষার্থীদের অসুবিধা ও নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে হাট বসাতে নিষেধ করা হলেও বসানো হচ্ছে হাট। এ নিয়ে স্কুলটির অভিভাবক ও স্থানীদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের ভেতরেই জমে উঠেছে বাঁশের হাট। হাজার হাজার বাঁশ বিদ্যালয় মাঠে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বাঁশগুলো কাঁধে করে বিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়েই আনা-নেওয়া করছেন, আর সেই একই ফটক দিয়ে শিক্ষার্থীরাও যাতায়াত করছে। ফলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

তারা জানান, সপ্তাহে দুই দিন (রোববার ও সোমবার) পুরো মাঠ অচল হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা মাঠে স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা তো দূরের কথা, বারান্দার সামনেও জায়গা থাকে না। এমনকি শ্রেণীকক্ষের সামনেও বাঁশ রাখা হয় বিক্রির উদ্দেশ্যে। হাট শেষ হলেও মাঠে পড়ে থাকে বাঁশের কঞ্চি, ধারালো বাঁশের টুকরো ও অন্যান্য আবর্জনা। ফলে সপ্তাহজুড়েই শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ ও সাকিব জানায়, ‘মাঠে বাঁশ রাখায় কাদা হয়ে যায়, তাই আমরা ফুটবল খেলতে পারি না।’

আরেক শিক্ষার্থী আরাফাত জানায়, ‘মাঠে বাঁশ থাকায় একদিন আমি আঘাত পেয়েছিলাম।’

অভিভাবক আবদুল করিম বলেন, ‘বিদ্যালয় মাঠে বাঁশ রাখায় বাচ্চাদের খেলাধুলায় বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে।’

এলাকাবাসী সাব্বির বলেন, ‘আমাদের উচিৎ মাঠটা রক্ষা করা, যাতে বিদ্যালয় ও এলাকার শিশুরা সুন্দরভাবে খেলতে পারে।’

এদিকে হাটের ইজারাদার নব্বেছ আলী দাবি করেন, এই মাঠ বিদ্যালয়ের জমি নয়, এটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। জমির মালিকানা দাবি করে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, বিদ্যালয়ের জমি আমার নানা দান করেছিলেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের সামনের অনেকটা জায়গা ব্যক্তি মালিকানা। জোরপূর্বক সীমানা প্রাচীর দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম মিয়া বলেন, ‘আমি ২০১৮ সাল থেকে বিদ্যালয়ের দায়িত্বে আছি। বহু বছর ধরেই বিদ্যালয় মাঠে বাঁশের হাট বসছে। আমি আসার পর সীমানা প্রাচীর হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও খেলাধুলা ব্যাহত হচ্ছে। অনেকবার নিষেধ করেছি, কিন্তু তারা শোনেন না। শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছি। বিদ্যালয়ের জমি চিহ্নিত না হওয়ায় সমস্যাটা জটিল হচ্ছে। আমরা চাই মাঠ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকুক, শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর হোক।’

উপজেলা শিক্ষা অফিসার খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। ইতোমধ্যে বিষয়টি জেনেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও খেলাধুলার স্বার্থে মাঠটি পুরোপুরি হাটমুক্ত করা হবে।’

এ প্রস‌ঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল রনী বলেন, ‘বিদ্যালয়ের জমি বা মাঠ দখল করে কোনো হাট বসা অগ্রহণ‌যোগ‌্য, খেলার মাঠ প্রধানত শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা ও শারীরিক বিকাশের জন্য সংরক্ষিত। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ও খেলাধুলা ব‌্যাহত না হয় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকে।’