নিজস্ব প্রতিবেদক: পার্বত্য রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি জনপদে সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলোতে সবুজ অরণ্যে প্রাকৃতিক বনজ সম্পদ নিধন চলছে। কতিপয় বনদস্যু ও কাঠচোর কর্তৃক রাঙ্গামাটি মহা সড়ক ও ইছামতি নদী পথে দিনে দুপুরে কয়েক শত কোটি টাকার কাঠ ও বাঁশ পাচার হচ্ছে।
সূত্রে জানা যায়, পার্বত্য রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া, বেতবুনিয়া,কলমপতি ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি জনপদের সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলোতে সংঘবদ্ধ কাঠচোর,বনখেঁকো কর্তৃক দিনে-রাতে মুল্যবান সেগুন কাঠও বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ কেটে ইছামতী নদী ও রাঙ্গামাটি সড়কের চোরাই পথে দেদারছে পাচার করে দিচ্ছে। ফলে এসব বনাঞ্চল অচিরেই বৃক্ষ শুন্য হয়ে পড়া ও পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারের পালাবদলের পর থেকে এ সবুজ অরণ্য নিধন প্রতিযোগিতা হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত অক্টোবর -নভেম্বর মাস থেকে চলতি মার্চ -২০২৫ইং মাস পর্যন্ত এ ৬ মাসে সবচেয়ে বেশি কাঠ পাচার হয়েছে।
সুত্র আরো জানায়, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের আওতাধীন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইছামতী ফরেস্ট রেঞ্জের আওতাভুক্ত বনাঞ্চল ও পার্শ্ববর্তী রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার প্রায় দেড় শতাধিক ইটের ভাটা রয়েছে। এ সব ইটের ভাটায় কয়েক দফায় প্রায় কয়েক হাজার মেট্রিক টন কাঠ পোড়ানো হয়েছে। যার আনুমানিক মুূল্য দু’শত কোটি টাকা।
আজ বুধবার দুপুরে সরেজমিনে পরিদর্শন কালে দেখা যায়, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাণীর হাটের বগাবিলসহ রাঙ্গামাটি মহাসড়কের দু’পাশে শতাধিক ইটের ভাটা রয়েছে। এ সব ইটের ভাটায় কয়েক মেট্রিকটন কাঠ পোড়ানোর জন্য স্তুুপ করে রাখা হয়েছে। এসব ইটের ভাটায় সরকারি ভাবে কাঠ পোড়ানো নিষিদ্ধ থাকলে ও কেউ তা মানছে না। অনেক ইটের ভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র নেই। সেখানকার ইটের ভাটা সমূহে যেন কাঠ পোড়ানোর মহোৎসব চলছে। গত অক্টোবর থেকে এ যাবত ৩/৪ দফায় এ সব ইটের ভাটায় অবৈধভাবে পাহাড় থেকে বনজকাঠ সংগ্রহ করে তা ইটের ভাটায় পোড়ানো হয়েছে। যা সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের দুর্ণীতি পরায়ন কতিপয় কর্মকর্তাদের যোগসাজোশ রয়েছে বলে স্থানীয় এলাকাবাসীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ অভিযোগের ভিত্তিতে আজ দুপুরে ইছামতী ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সেখানে দুপুরে কাউকে পাওয়া যায়নি। এসময়ে অফিসের মধ্যে তালা ঝুলতে দেখা গেছে।
এদিকে একটি সূত্র জানায়, ইছামতী ফরেস্ট রেঞ্জ ও পার্বত্য রাঙ্গামাটি ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের আওতাধীন কাউখালি উপজেলার দুর্গম বনাঞ্চলের বাঁশ ও সেগুন কাঠ খড়স্রোতা ইছামতী নদীপথে বাঁশের চালির সাথে পাচার হচ্ছে। এ ইছামতী ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসের পাশ ঘেষে রয়েছে খড়স্রোতা ইছামতী নদী। এ নদী পথে প্রতনিয়ত বাঁশের চালির সাথে বছরে কয়েক কোটি টাকার চোরাই কাঠ পাচার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কাঠ পাচারের সাথে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ ও রাঙ্গামাটি ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে।




