নিজস্ব প্রতিবেদক: পুরুষের অনুপস্থিতি নিয়ে আনোয়ারার গুয়াপঞ্চ গ্রামে এক প্রবাসী পরিবারের উপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকায় দেখা দিয়েছে অস্থিতিশীল পরিস্থিত। এসব সন্ত্রাসীরা আইন শৃংখলাবাহিনীর নিরবতার সুযোগ নিয়ে ইতোমধ্যে বাড়ির বেশ কিছু জায়গা দখল করে রাতারাতি রাস্তা নির্মাণ করা হয় বলে অভিযোগে জানিয়েছেন প্রবাসী হাবিবুর রহমানের স্ত্রী ফাতেমা বেগম ও মেয়ে তছলিমা আক্তার। এই পরিবারটি বর্তমানে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে বলে জানা গেছে। নির্যাতিত এই পরিবারটি সেনাবাহিনী ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ চেয়ে সুদৃষ্টিও কামনা করেছেন।
স্থানীয় সুত্রগুলো থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, আনোয়ারার বৈরাগ ইউপির দক্ষিণ গুয়াপঞ্চক গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছে। মেয়ের জামাই আবু তালেবও শশুরের সাথে বিদেশে অবস্থান করছে। এ সুযোগে হাবিবের ভাই আবদুল গফুর মান্নান ওরফে মনা শ্যালক দেলোয়ার হোসেন জমির স্বত্ব পাওয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা দিয়ে হয়রানী মারধর এবং নানা ভাবে নির্যাতন শুরু করা হয়। থানা আদালতে মামলা করা হলেও এলাকার কেউ ভয়ে এগিয়ে আসছেনা। পরিবারটির পক্ষে সাক্ষ্য দিতেও আসছেনা কেউ। ফলে তারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ সুযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দেলোয়ার গফুররা। তারা রীতিমতো বাড়িতে ও এলাকায় বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে মহড়া চালানো হচ্ছে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। মা-মেয়ে ছেলে সন্তানের জীবন ও বাড়ি ভিটি রক্ষায় এদিক সেদিক ছোটাছুটি করলেও এক্ষেত্রে কেউ তাদের পক্ষে সাহায্য কিংবা সহায়তা করতে এগিয়ে আসছেনা। কেউ আসতে চাইলে মারধর করা হচ্ছে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। বিপরীতে কয়েকটি নাম সর্বস্ব আন্ডার গ্রাউন্ড ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ ছাপিয়ে ব্ল্যাক মেইল করার চেষ্টা হচ্ছে। ভুল সংবাদ ছাপিয়ে এলাকার মানুষকে ও থানা পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তছলিমা।
তছলিমা অভিযোগ করে বলেছেন, ভুল বিএস এর কারণে আমি পটিয়া সহকারী জজ আদালতে অপর ২৪/১৩ মামলা এবং সর্বশেষ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে (চট্টগ্রাম মহানগর) একটি মিছ মামলা নং-১৭৯/২৫ দায়ের করা হয়। আদালত তার মামলাটি আমলে নিয়ে আনোয়ারা সহকারী কমিশনার(ভুমি) কে তদন্ত করে প্রতিবেদন এবং আনোয়ারা থানার ওসিকে শান্তি শৃংখলা রক্ষার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। এর আগে এই পরিবারের পক্ষ থেকে ৫ জনকে আসামী করে থানায় একটি অভিযোগও দেয়া হয়। কিন্তু কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করা হয় ওই নির্যাতিত পরিবারের পক্ষ থেকে। যেন ইদুঁর বেড়ালের খেলা শুরু হয়েছে ওই এলাকায়। মনে হয় যেন দেখার কেউ নেই। গত ৭ ফেব্রুয়ারীর হামলার ঘটনার নেতৃত্ব দানকারী দেলোয়ার ও আবদুল গফুর মান্নান ওরফে মনা উল্টো অভিযোগ করে বলেছেন, এখানে হাবিবুর রহমান কিংবা তার মেয়ে তছলিমার কোন সম্পত্তি নেই। এতোদিন তারা তাদের সম্পত্তি দখল করে রাখা হয়েছিল। আমরা তা পুনরুদ্ধার করে চলাচলের রাস্তা নির্মাণ করেছি।
স্থানীয় লোকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেছেন, দেলোয়ার হোসেন ও আবদুল গফুর মান্নান জোর পুর্বক ওই অসহায় পরিবারের সম্পত্তি দখল করে নিয়ে উল্টো তাদের উপর মামলা হামলা নির্যাতন করা হচ্ছে। তারা সমাজ আইন আদালত মানে না। ওসি মনির হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দেলোয়ার হোসেন একজন জাত ইয়াবা ব্যবসায়ী। ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর তারিখে পুলিশ তাকে একবার ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেছিল। তখন থানার এক যুবলীগ নেতার হস্তক্ষেপে ছাড়া পায় দেলোয়ার হোসেন। এরপর থেকে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। সম্প্রতি হাবিবুর রহমান এর বাড়ির পশ্চিম দক্ষিণে জায়গা কিনে একটি ঘর নির্মাণ করেন। এতে তার আসা যাওয়ার কোন রাস্তা নেই। প্রবাসী হাবিব ও তার মেয়ে তছলিমার জায়গা জোরপূর্বক দখল করে রাতারাতি পাকা রাস্তা তৈরী করা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনার আগে ফাতেমা বেগম ও তার মেয়ে তছলিমা হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন। এরপর তাদের চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। কিন্তু তারা কোন বিচার পায়নি।
তছলিমার অভিযোগ, আবদুল গফুর মান্নান ওরফে মনা শ্যালক দেলোয়ার হোসেন বিগত স্বৈরাচারী সরকারের দোষর। তারা সন্ত্রাসী কায়দায় আমার বাবার বাড়ির সামনে রাস্তায় ময়লা আবর্জনা ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। নির্যাতন করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তার।




