নুরুল ইসলাম: দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পাহাড় ও ফসলি জমির মাটি কাটা হয় প্রায় রাতেই। বলা যায় পাহাড়ের মাটি ও চাষাবাদের জমির উর্বর মাটি (টপসয়েল) কেটে বিক্রি করে থাকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত স্বার্থন্বেষী মহল। সিন্ডিকেট করেই পাহাড় ও জমির মাটি বিক্রি করে তারা। ব্যক্তিমালিকানাধীন টিলার মাটিও রাতের আঁধারে কেটে নিচ্ছে মাটিদস্যুরা।
চলতি ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহের এক রাতে লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের বিবিবিলা এলাকার স্বপন কান্তি নাথের বসতভিটার টিলার মাটি কেটে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ মতে মাটি দস্যুরা বসতভিটার টিলা কাটতে ব্যবহার করেছে এস্কেভেটর। যারা পাহাড় টিলা ও জমির মাটি কেটে নেয়, তারা ধরাকে সরাজ্ঞান করে চলে। এ ব্যাপারে স্বপন কান্তি নাথ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর, লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবরে ইতোমধ্যে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিজ্ঞদের মতে, লোহাগাড়া উপজেলায় প্রায়ই রাতের অন্ধকারে এলাকার বিভিন্ন পাহাড় ও চাষাবাদের জমির মাটি কাটা শুরু করে। এ মাটিকাটা চলে ভোর পর্যন্ত। পাচার হয় প্রতি রাতে বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক ডাম্প ট্রাক ও পিকআপ ভর্তি পাহাড় ও চাষাবাদের মাটি। এলাকার সচেতন মহলের মতে, মাটিদস্যুরা কোনো আইন ও নিয়মনীতি মানতে রাজি নয়। তারা বেপরোয়া। পাহাড় ও চাষাবাদের মাটি কাটতে ব্যবহার করে এস্কেভেটর। ডাম্প ট্রাক ও পিকআপ ভর্তি করে এসব মাটি নেয়া হয় এলাকার বিভিন্ন ইট ভাটায়। শুধু তা নয়, বসতভিটা ভরাট, পুকুর ও ডোবা ভরাট কাজেও এসব মাটি ব্যবহার করা হয়।
উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়নেই মাটিদস্যুদের পৃথক পৃথক সিন্ডিকেট রয়েছে। শুকনা মৌসুমের শুরু থেকে আরম্ভ হয় মাটি কাটা। চাষীদের মতে, ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে মূল উপাদান জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি (টপসয়েল)। এ মাটি কেটে নিলে ফসল উৎপাদন হ্রাস হয়। অভিজ্ঞ মহল জানায়, চাষাবাদের জমির মাটি ও পাহাড় কাটলে ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নেমে যায়। ফলে শুকনা মৌসুমে পানির অভাবে দূর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। পাহাড় কাটার ফলে বিনষ্ট হয় প্রাকৃতিক পরিবেশ। জমির মাটি ও পাহাড় কাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ অপরিহার্য মনে করেন সচেতন মহল। অন্যথায় ব্যাপক ক্ষতি হবে।




