চকরিয়া অফিস : কালু দাশ (৪৫)। নেই কোন ব্যবসা বাণিজ্য। এরপরও কোটি টাকার সম্পদের মালিক। মুলত আপন ভাইয়ের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থবিত্তের মালিক বনে গেছে এই প্রতারক। তার বিরুদ্ধে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে তার ছোট ভাই মিন্টু দাশের স্ত্রী বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের হিন্দপাড়ার বাসিন্দা মৃত সাধন দাশের সাত পুত্রের মধ্যে কালু দাশ সেজ। পরিবারে অভাব অনটনের মধ্যে দিনযাপন করলেও বসতভিটায় ডেভেলাপারকে দিয়ে বহুতল মার্কেট তৈরি করে বদলে যায় নিজেদের ভাগ্য। মার্কেটটি চকরিয়া ওশানসিটি বা সাধন মার্কেট নামে পরিচিতি রয়েছে। পরিবারের সকল সদস্য লন্ড্রীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বর্তমানে বসতভিটায় মার্কেট নির্মাণে তাদের মধ্যে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসে। তবে অনেকের দোকান থাকলেও পরিবারের দুই ভাইয়ের মধ্যে বরাদ্দের দোকান নয়ছয় করে হাতিয়ে নিয়েছেন কালু দাশ। ২০০৮ সালের দিকে ওই মার্কেটের যাত্রা শুরু হয়। সাধন দাশের পুত্রের মধ্যে সবাই জায়গা বরাদ্দে সঠিকভাবে পেলেও বৈশম্য তৈরী হয় দোকানে বরাদ্দের ক্ষেত্রে। পরিবারের প্রত্যেক সদস্য সাড়ে ৭টি করে দোকান বরাদ্দ পেলেও তার ভাই মিন্টু দাশের সাথে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। তাকে দোকান দেওয়া হয়েছে ৫টি। মিন্টু দাশ দুবাই থাকার কারণে কালু দাশ চরম প্রতারণা করে হাতি নিয়েছেন ১৪টি দোকান। যার বর্তমান মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা। মিন্টু দাশের সরলতার সুযোগ নিয়ে কালু দাশ অঢল সম্পদের মালিক হয়েছেন জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।
অন্যান্য ভাইয়ের চেয়েও মিন্টু দাশের দোকানের পরিমাণ কম হওয়ায় কালু দাশের কাছে জানতে চান পরিবারের সদস্যরা। এতে বেপরোয়া হয়ে উঠে কালু দাশ। তাকে নানাভাবে হয়রানী করতে থাকে মিন্টু দাশকে। একপর্যায়ে মিন্টু দাশকে বিষপ্রয়োগ করে হত্যার চেষ্ঠাও করে কালু দাশ ও তার সহযোগিরা। কোন রকম প্রাণে বাচলেও নানামুখি হয়রানী করে যাচ্ছেন।
মিন্টু দাশ জানান, পরিবারে ৭ ভাইয়ের মধ্যে সবাই জমি বরাদ্দ পেয়েছে। মুলত সবই পৈত্রিক জমি। সেখানে ডেভেলাপার দিয়ে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। প্রত্যেক ভাই সাড়ে ৭টি করে দোকান বরাদ্দ পান। আমি প্রবাসে থাকাতে আমার দোকান গুলো দেখাশোনা করেছেন তার ভাই কালু দাশ। সবাই সাড়ে ৭টি দোকান পেলেও আমাকে দেওয়া ৫টি। মুলত সরলতার সুযোগ নিয়ে তার নামীয় দোকান গুলো কালু দাশের নামে করেছেন। বর্তমানে সে ১৪টি দোকানের মালিক। নানাভাবে আমার ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এসবের প্রতিবাদ করায় আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন এবং মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করবে বলে হাকাবকা করছেন। এরইমধ্যে আমার স্ত্রী সারতী বালা দাশ বাদি হয়ে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কালু দাশের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। যার মামলা নং সিআর ৯৯৫/২৩। মামলা করার পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কালু দাশ। সে অর্থবিত্তের মালিক হওয়ায় মামলাটি ভিন্নখাতে ব্যবহারের চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা দিয়ে প্রতিবেদন তার পক্ষে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।




