ক্রাইম প্রতিবেদক: দক্ষ পুলিশ সমৃদ্ধ দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে উদযাপিত পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ এর দ্বিতীয় দিনে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) আজ সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে শিল্ড প্যারেড, ২০২০ ও ২০২১ সালের মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও চোরাচালান দ্রব্য উদ্ধারে সাফল্য অর্জনকারী বিভিন্ন ইউনিটের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
বাংলাদেশ পুলিশের সকল ইউনিটের উদ্ধার অভিযান বিবেচনায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ “গ” গ্রুপে চোরাচালান মালামাল উদ্ধার অভিযান-২০২১ সালে প্রথম স্থান এবং মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযান ২০২০ সালে তৃতীয় স্থান অধিকার করায় আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ জাহিদুল ইসলাম কে উত্তম কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ক্রেস্ট ও প্রশংসাপত্র প্রদান করেন।
এ সময় আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ দেশের মানুষকে সেবা দিতে বদ্ধপরিকর। আমরা প্রতিনিয়ত এ সংগঠনের মানোন্নয়নের জন্য কাজ করছি। পুলিশ সদস্যদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার মাধ্যমে সবচেয়ে মেধাবীদের নির্বাচন করা হচ্ছে। আমরা দীর্ঘ ৪০ বছর পর কনস্টেবল, সাব ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদের নিয়োগ বিধি সংশোধন করেছি। ইতোমধ্যে কনস্টেবল পদে ‘বেস্ট অব দি বেস্ট’ প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। আমরা মনে করি, পুলিশের চাকরি শুধু চাকরি নয়, সেবা। এজন্য আমাদের এবারের ট্যাগ লাইন হলো ‘চাকরি নয়, সেবা’। আমরা চাই পুলিশ বৈষম্যহীনভাবে দেশের মানুষকে সেবা দিবে।

জঙ্গি ও মাদকের প্রসঙ্গ তুলে ধরে ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছেন। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি বাস্তবায়ন করছি। যখনই আমাদের দেশে জঙ্গিবাদ হানা দিয়েছে তখনই জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা তা দমন করেছি। বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অস্ত্র সম্পূর্ণ নির্মূল করতে হবে। তিনি বলেন, মাদক নির্মূলে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে।
যুব সমাজের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের দেশ মাদক উৎপাদন করে না। কিন্তু আমরা কেন মাদকের শিকার হবো। যুব সমাজকে তা উপলব্ধি করতে হবে। যুবকদের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ যুব সমাজকে হাতছানি দিচ্ছে। আমাদেরকে অবশ্যই মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে।

করোনাকালে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, করোনা অতিমারিতে পুলিশ এক মহাকাব্যিক ভূমিকা পালন করেছে। নিজেদের জীবন বিপন্ন করে পুলিশ সদস্যরা জনগণের বাড়িতে ওষুধ পৌঁছে দেয়া, খাবার পৌঁছে দেয়া, কৃষকের ধান কাটার ব্যবস্থা করা, এমনকি করোনায় কেউ মারা গেলে যখন আত্মীয়-স্বজনরা লাশ ফেলে চলে গেছে তখন পুলিশ লাশ দাফন/সৎকার করেছে। করোনাকালে ১০৬ জন পুলিশ সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। সাতাশ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই আবার সুস্থ হয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করেছেন। তিনি অবৈধ অস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও চোরাচালান দ্রব্য উদ্ধারে সাফল্য অর্জনকারী ইউনিটসমূহকে ধন্যবাদ জানান। অন্যান্য ইউনিটসমূহকেও এক্ষেত্রে আরও তৎপর হওয়ার আহবান জানান আইজিপি। আইজিপি কৃতিত্ব অর্জনকারী বিভিন্ন ইউনিটের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
এসময় মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সমগ্র ইউনিটের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ “গ” গ্রুপে চোরাচালান মালামাল উদ্ধার অভিযান-২০২১ সালে প্রথম স্থান এবং মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযান ২০২০ সালে তৃতীয় স্থান এর কৃতিত্ব অর্জন করেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার এই কৃতিত্ব জেলা পুলিশের সকল অফিসার ফোর্স ও চুয়াডাঙ্গাবাসীর সকল সচেতন সম্মানিত জনসাধারণের আন্তরিকতার জন্য সম্ভব হয়েছে। এই কৃতিত্বের অধিকারী আমার সকল অফিসার-ফোর্স ও চুয়াডাঙ্গাবাসী। জঙ্গী, সন্ত্রাস, চোরাচালান ও মাদক মুক্ত সোনার বাংলাদেশ বিনির্মানে সকলের আন্তরিকতা ও সহযোগীতা কামনা করেন।
Post Views: 708



