দি ক্রাইম ডেস্ক: কোটা বিরোধী ঐক্যজোটের ডাকা হরতালের মতো তীব্র আন্দোলনের মুখে অবশেষে ২১ নভেম্বর রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছে জেলা পরিষদ। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়—সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ২০২৫ পূর্বে কয়েক দফা স্থগিত হওয়ার পর সর্বশেষ ২১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল এবং সংশ্লিষ্ট সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত তারিখকে কেন্দ্র করে ডাকা হরতাল ও সম্ভাব্য পরিবহন ও নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতি বিবেচনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরিষদ পরীক্ষাটি পুনরায় স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। পরীক্ষা স্থগিতের ফলে পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সকলের যে অসুবিধা হয়েছে, তার জন্য পরিষদ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।

এদিকে পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় শুক্রবার (২১ নভেম্বর) হরতাল প্রত্যাহার করে নিয়েছে কোটা বিরোধী ঐক্যজোট। সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ বলেন, যারা হরতাল পালনে আমাদের সহযোগিতা করেছেন, তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় আমরা হরতাল প্রত্যাহার করেছি।

তারা আরও বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হোক—আমরা এটা চাইনি; আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আগামীকালের হরতাল প্রত্যাহার করছি। তবে আমাদের আন্দোলন থেমে যায়নি, চলমান থাকবে। শনিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করবো, জেলা পরিষদ আমাদের নির্দিষ্ট কোনো বার্তা দেয় কি না। আমাদের ছয় দাবি হলো—৭% কোটা, ৯৩% মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ; প্রশ্নপত্র ফাঁস ও অনিয়মের অভিযোগের কারণে শিক্ষা ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন; জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ট্রেজারিতে প্রশ্নপত্র সংরক্ষণ; পরীক্ষা খাতার মূল্যায়ন জেলা প্রশাসনের অধীনে পরিচালনা; নিয়োগ পরীক্ষার আগে উপজেলা কোটা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ; এবং পরীক্ষা শেষে সব পরীক্ষার্থীর নাম, রোল নম্বর ও ঠিকানা প্রকাশ।

এদিকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে শিক্ষক নিয়োগে কোটা নয়, মেধাকে প্রাধান্য দেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত হরতালের ডাক দেয় কোটা বিরোধী ঐক্যজোট।

সকাল থেকে হরতালের সমর্থনে রাঙ্গামাটি শহরের বর্ণরূপ, তবলছড়ি, দোয়েল চত্বরসহ ৮–১০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এতে স্কুল–কলেজ ও অফিসগামী সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। হরতালের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। এতে রাঙ্গামাটির সঙ্গে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি শহরের একমাত্র সিএনজি সার্ভিসসহ শপিংমলগুলোও কার্যত বন্ধ ছিল।

হরতালকে সমর্থন জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ, রাঙ্গামাটি জেলা শাখা। সমর্থন জানিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় শহরে মিছিল–সমাবেশও করেছে সংগঠনগুলো। হরতাল ঘিরে রাঙ্গামাটি শহর ছাড়াও বাঘাইছড়ি, লংগদুসহ বিভিন্ন উপজেলায় পিকেটিং করেছে সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীরা।

এর আগে বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন কোটা বিরোধী ঐক্যজোটের নেতারা।

গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের উল্লেখ করে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৭ শতাংশ কোটা রেখে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা। এতে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, কোনো মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন নয়—জেলা পরিষদের নিজস্ব আইন দিয়েই পরিষদ পরিচালিত হবে।

নেতারা অভিযোগ করেন, দেশব্যাপী কোটা সংস্কারের পরও পার্বত্য জেলার হস্তান্তরিত বিভাগে এখনো ৭০ শতাংশ উপজাতি কোটা বহাল রয়েছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। একই সঙ্গে নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও ঘুষ–বাণিজ্যের অভিযোগও তোলেন তারা। প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে শূন্যপদ ও কোটা বরাদ্দ স্পষ্ট না করাকেও তারা নিয়মবহির্ভূত বলে উল্লেখ করেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কোটা পদ্ধতি সংশোধনে বলা হয়েছে—সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্বশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের চাকরি/কর্মে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা ৯৩%, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫%, এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১% কোটা থাকবে। নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট কোটার শূন্য পদ সাধারণ মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হবে।

দি ক্রাইম ডেস্ক: কোটা বিরোধী ঐক্যজোটের ডাকা হরতালের মতো তীব্র আন্দোলনের মুখে অবশেষে ২১ নভেম্বর রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছে জেলা পরিষদ। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়—সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ২০২৫ পূর্বে কয়েক দফা স্থগিত হওয়ার পর সর্বশেষ ২১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল এবং সংশ্লিষ্ট সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত তারিখকে কেন্দ্র করে ডাকা হরতাল ও সম্ভাব্য পরিবহন ও নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতি বিবেচনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরিষদ পরীক্ষাটি পুনরায় স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। পরীক্ষা স্থগিতের ফলে পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সকলের যে অসুবিধা হয়েছে, তার জন্য পরিষদ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।

এদিকে পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় শুক্রবার (২১ নভেম্বর) হরতাল প্রত্যাহার করে নিয়েছে কোটা বিরোধী ঐক্যজোট। সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ বলেন, যারা হরতাল পালনে আমাদের সহযোগিতা করেছেন, তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় আমরা হরতাল প্রত্যাহার করেছি।

তারা আরও বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হোক—আমরা এটা চাইনি; আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আগামীকালের হরতাল প্রত্যাহার করছি। তবে আমাদের আন্দোলন থেমে যায়নি, চলমান থাকবে। শনিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করবো, জেলা পরিষদ আমাদের নির্দিষ্ট কোনো বার্তা দেয় কি না। আমাদের ছয় দাবি হলো—৭% কোটা, ৯৩% মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ; প্রশ্নপত্র ফাঁস ও অনিয়মের অভিযোগের কারণে শিক্ষা ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন; জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ট্রেজারিতে প্রশ্নপত্র সংরক্ষণ; পরীক্ষা খাতার মূল্যায়ন জেলা প্রশাসনের অধীনে পরিচালনা; নিয়োগ পরীক্ষার আগে উপজেলা কোটা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ; এবং পরীক্ষা শেষে সব পরীক্ষার্থীর নাম, রোল নম্বর ও ঠিকানা প্রকাশ।

এদিকে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে শিক্ষক নিয়োগে কোটা নয়, মেধাকে প্রাধান্য দেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত হরতালের ডাক দেয় কোটা বিরোধী ঐক্যজোট।

সকাল থেকে হরতালের সমর্থনে রাঙ্গামাটি শহরের বর্ণরূপ, তবলছড়ি, দোয়েল চত্বরসহ ৮–১০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এতে স্কুল–কলেজ ও অফিসগামী সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। হরতালের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। এতে রাঙ্গামাটির সঙ্গে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি শহরের একমাত্র সিএনজি সার্ভিসসহ শপিংমলগুলোও কার্যত বন্ধ ছিল।

হরতালকে সমর্থন জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ, রাঙ্গামাটি জেলা শাখা। সমর্থন জানিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় শহরে মিছিল–সমাবেশও করেছে সংগঠনগুলো। হরতাল ঘিরে রাঙ্গামাটি শহর ছাড়াও বাঘাইছড়ি, লংগদুসহ বিভিন্ন উপজেলায় পিকেটিং করেছে সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীরা।

এর আগে বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন কোটা বিরোধী ঐক্যজোটের নেতারা।

গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের উল্লেখ করে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৭ শতাংশ কোটা রেখে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা। এতে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, কোনো মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন নয়—জেলা পরিষদের নিজস্ব আইন দিয়েই পরিষদ পরিচালিত হবে।

নেতারা অভিযোগ করেন, দেশব্যাপী কোটা সংস্কারের পরও পার্বত্য জেলার হস্তান্তরিত বিভাগে এখনো ৭০ শতাংশ উপজাতি কোটা বহাল রয়েছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। একই সঙ্গে নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও ঘুষ–বাণিজ্যের অভিযোগও তোলেন তারা। প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে শূন্যপদ ও কোটা বরাদ্দ স্পষ্ট না করাকেও তারা নিয়মবহির্ভূত বলে উল্লেখ করেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কোটা পদ্ধতি সংশোধনে বলা হয়েছে—সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্বশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের চাকরি/কর্মে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা ৯৩%, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫%, এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১% কোটা থাকবে। নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট কোটার শূন্য পদ সাধারণ মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হবে।