নিজস্ব প্রতিবেদক: রাউজান উপজেলাধীন বাঘোয়ান ইউনিয়নের পাঁচখাইন শান্তি কুঞ্জ বিহারের অধ্যক্ষ ডক্টর ভদন্ত প্রিয়দর্শী মহাথেরোর বিরুদ্ধে দানীয় চাঁদার টাকা আত্মসাৎ কুকর্মসহ ও নানান দুর্নীতির অভিযোগে এলাকাবাসী তীব্র ক্ষাভ প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গ্রামবাসী দু’পক্ষের মধ্যে বিহারে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। এতে নিজ সম্প্রদায়ের লোকজনের হাতে প্রিয়দর্শী মহাথেরো লাঞ্চিত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় এলাকাবাসীর একাধিক সুত্রে জানা যায়, সুদীর্ঘ একটানা ৩২ বছর ধরে ভদন্ত প্রিয়দর্শী ভিক্ষু এ শান্তি কুঞ্জ বিহারের অধ্যক্ষ পদে আসীন রয়েছে। তিনি এ বিহারে অবস্থান কালে ধর্মীয় বিধি- বিধান মেনে থেরো, ও মহাথেরো হয়েছেন। বিগত কযেক বছর আগে তিনি মহাথেরো অভিধায় অভিসিক্ত হন। এ মহাথেরো বরণোৎসবের প্রায় ১৭ লাখ টাকার কোনো হিসাব নিকাশ উদযাপন কমিটিকে আজো দেয়নি। বরঞ্চ এ চাঁদার টাকার হিসেব দিতে তিনি গরিমসি করছে ও নিজেই আত্নসাৎ করেছেন। এ টাকা আত্নসাৎ কে কেন্দ্র করে বিহার পরিচালনা কমিটির লোকজনের সাথে ভিক্ষু প্রিয়দর্শী ও এলাকাবাসীর মধ্যে নানান মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। যা বর্তমানে চরম আকার ধারন করেছে।
উল্লেখ্য যে, চলতি বৎসরে এক পক্ষকে বাদ দিয়ে কতিপয় স্বার্থানেস্বী ও কুচক্রী মহলকে নিয়ে ভিক্ষু প্রিয়দর্শী আরেকটি বিহার পরিচালনা কমিটি গঠন করে। তিনি সেখানে দীর্ঘদিন থাকার কারণে অসামাজিক কার্যকলাপ সহ নানা অপকর্ম শুরু করে। এতে এলাকার অধিকাংশ নর- নারী তাকে বাদ দিয়ে বিহারের নতুন পরিচালনা কমিটি গঠন করেন।তাঁর নানা অপকর্ম ও দুর্নীতিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি নিজ উদ্যোগী হয়ে পুরাতন কমিটির মেয়াদ শেষ না হতেই আরেকটি পাল্টা নয়া কমিটি গঠন করে। এ নয়া বিহার কমিটির মাধ্যমে বিহারের ধর্মীয় কার্যাদি চললে ও অন্য পক্ষ বিহারে যেতে অনীহা প্রকাশ করছে। বর্তমান এ কমিটিতে তিনি সভাপতির পদ লাভ করে। এতে ওই এলাকার ধর্মপ্রান বৌদ্ধ নর- নারী দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ে। একে অপরের প্রতি ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে।এতে এলাকার বেশির ভাগ নারী পুরুষ ভিক্ষু প্রিয়দর্শীর বিরুদ্ধে ফুসে ওঠেছে।
গত বুধবার তাঁকে বিহার থেকে অপসারণের দাবী উঠলে পক্ষ ও বিপক্ষের মধ্যে বেশ উত্তেজিত হয়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির সৃষ্টি হয়।
এদিকে স্থানীয় মাষ্টার রণধীর বড়ুয়া ও এই বিহার কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিকু বড়ুয়াসহ অনেকেই এ বৌদ্ধ ভিক্ষুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে এ প্রতিবেদকে জানায়, এই বিহারের অধ্যক্ষের কারণে স্থানীয় অনেক পরিবারের মহিলারা এ বিহারে পূজা দিতে পারছেন না।তিনি বিহারকে পুঁজি করে ভিক্ষু প্রিয়দর্শী বর্তমানে সেখানে অপকর্মের আস্তানা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। যার ফলে এলাকাবাসি তাঁর ওপর চরম ক্ষুব্দ হয়ে পড়ে। গত বুধবার এই ক্ষোভের বশিভূত হয়ে শান্তি কুঞ্জ বিহারে ব্যাপক হাতাহাতি র ঘটনা ঘটে।
অপর দিকে স্খানীয় বৌদ্ধ জনগোষ্ঠি কর্তৃক ভদন্ত প্রিয়দর্শী ভিক্ষুর বিরুদ্ধে আনীত নানান অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ভিক্ষু প্রিয়দর্শী সব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও সুগভীর ষড়যন্ত্র মুলক বলে আখ্যায়িত করেন। একটি স্বার্থন্বেষী মহল এ ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে বলে তিনি জানান।
এ রিপোর্ট লেখার পূর্বে এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।