নগর প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবা বা বিশেষায়িত হাসপাতাল করার জন্য বেসরকারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার জন্য তিনি আহবান জানান। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। এটি চিকিৎসা সেবায় চট্টগ্রামবাসীর আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। করোনাকালীন করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবায় আপনারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন যা সব মহলে প্রশংসিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার(০৫ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে কার্যনির্বাহী কমিটির সাথে বৈঠকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল পরিদর্শন কালে এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন উপলক্ষে কার্যনির্বাহী কমিটির প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রামে সরকারী এবং বেসরকারী পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা খুবই অপ্রতুল। সরকারী পর্যায়ে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের উপর আমাদের নির্ভর করতে হচ্ছে। এটা চট্টগ্রামবাসীর জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক। দেশের সকল সরকারী ও বেসরকারী বিশেষায়িত হাসপাতাল গুলো ঢাকা কেন্দ্রিক।
তিনি বলেন, সরকারের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত একটা অর্থনীতি নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তারপরও আমরা সরকারের অগ্রাধিকার অনুযায়ী সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি। সরকারের আর্থিক অনেক সীমাবদ্ধতা সত্তেও আমরা স্বাস্থ্যখাতে অনেক কাজ করে যাচ্ছি। হার্টের রোগীদের রিং এর দাম কমানো হয়েছে, ক্যান্সারের ঔষধসহ অনেক ঔষধের দাম কমানো হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, বিদেশে নার্সের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আমাদের নার্সদের বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষভাবে তৈরি করতে হবে। ইংরেজি ভাষায় তাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। জাপানে প্রচুর নার্সের চাহিদা রয়েছে। তাদেরকে জাপানি ভাষা শিখতে হবে। এজন্য আমাদের কেয়ার গিভার একটা প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা রয়েছে। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। সরকারী এবং বেসরকারী মেডিকেল কলেজ গুলোতে কোয়ালিটি টিচিং এর ব্যাপারে তিনি গুরুত্বারোপ করেন। বর্তমান সরকার মেডিকেল শিক্ষায় কোয়ালিটির ব্যাপারে কোন প্রকার ছাড় দিবেনা। যারা কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে পারবেনা তাদের ব্যাপারে সরকার কঠিন সিদ্ধান্ত নিবে।
ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ডাক্তারদের কোন দল থাকতে পারেনা। সবার উপরে তারা ডাক্তার। তাদেরকে মানবিক হতে হবে। সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সৎ থাকতে হবে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে অনাকাংক্ষিত ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে সবকিছুতেই একটা চরম অস্থিরতা কাজ করছে। এটা আমাদের মানসিক দৈনতা। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি আজকের এই বন্ধের দিনে সকলকে কষ্ট দেয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
এরপর তিনি হাসপাতালের এনআইসিইউ, পিআইসিইউসহ কয়েকটি বিভাগ পরিদর্শন করেন। কার্যনির্বাহী কমিটির প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রমের বিষয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মহোদয়কে অবহিত করেন। তিনি হাসপাতালের গ্রান্ট ইন এইড খাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়ে উপদেষ্টা মহোদয়ের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন এবং হাসপাতাল পরিদর্শনে আসার জন্য তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও সচিব ডা. মো. মনজুরুল ইসলাম, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ড. সেখ ফজলে রাব্বি, সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, ডেপুটি সিভিল সার্জন জনাব তৌহিদুল ইসলাম, হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডোনার) ডা. কামরুন নাহার দস্তগীর, ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান রানা, জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারী মো. জাহিদুল হাসান, অর্গানাইজিং সেক্রেটারী মোহাম্মদ সাগির, ডোনার মেম্বার ইঞ্জি. মো. জাবেদ আবছার চৌধুরী, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. এ টি এম রেজাউল করিম, মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল প্রফেসর এ এস এম মোস্তাক আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল প্রফেসর অসীম কুমার বড়ুয়া, পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. নূরুল হক, পরিচালক (মেডিকেল এ্যাফেয়ার্স) ডা. এ কে এম আশরাফুল করিম, উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন, নিওনেটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর (ডা.) ওয়াজির আহমেদ, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. মো. জালাল উদ্দিন, অবস এন্ড গাইনী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর (ডা.) সিরাজুন নুর রোজী, জেনারেল সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর (ডা.) আনোয়ারুল হক, শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক (ডা.) দিদারুল আলম, প্রফেসর বাবুল ওসমান চৌধুরী, প্রফেসর (ডা.) তাহেরা বেগম, প্রফেসর (ডা.) সঞ্জয় কান্তি বিশ্বাস, প্রফেসর (ডা.) আসমা মোস্তফা, ডেন্টাল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এসিসটেন্ট প্রফেসর (ডা.) মো. কামরুল ইসলাম, নার্সিং কলেজের প্রিন্সিপাল মিসেস স্মৃতি রানী ঘোষ, নার্সিং ইনষ্টিটিউটের প্রিন্সিপাল মিসেস ঝিনু রানী দাশ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও নার্সিং ইনষ্টিটিউটের ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।