মন্তব্য প্রতিবেদন———-

মঈনুদ্দীন কাদেরী শওকত: গত ১০ই জুন ছিল আমার জন্মদিন। এ দিন উপলক্ষে যাঁরা আমাকে শুভেচ্ছা, অভিনন্দন জানিয়ে সুস্বাস্থ্যের জন্য দোয়া করেছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদেরকে জানাই আমার শ্রদ্ধা-ভালোবাসা-অভিনন্দন। দেখা যায়, সহস্রাধিক শুভ কামনাকারীদের মধ্যে বেশির ভাগই হলেন চট্টগ্রাম-ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার মজলুম সাংবাদিক। তাছাড়াও ভারত, ইউরোপ, এশিয়া, আমেরিকা ও আফ্রিকা সহ বিভিন্ন দেশের সাংবাদিক এবং সংবাদ মাধ্যম ব্যক্তিত্ব।

গত তিন বছর ধরে আমি অসুস্থ, শরীরে অপারেশনও হয়েছে। অনেক সময় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে উপনীত হতে হয়েছে। আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের দোয়ায় এখনো বেঁচে আছি। জীবনে বিভিন্ন সময়ে যাদের সান্নিধ্যে সংগঠন করেছিলাম, যাঁদের সঠিক পরামর্শ পেয়েছিলাম তাদের প্রায় আজ বেঁচে নেই। দৃশ্যতঃ অনেক সময় আমার জীবন অর্জনহীন মনে হলেও ছেঁড়া খোঁড়া জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে অনন্ত এটুকু আনন্দ যে, প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, আজীবন অসত্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন জননেতা, ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালার অলি আহাদ এর রাজনৈতিক অনুবর্তী সহকর্মী এবং তাঁর সম্পাদিত ইত্তেহাদ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি/ সাংবাদিক ছিলাম প্রায় পাঁচ দশক পর্যন্ত।

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল এবং প্রেস কাউন্সিল জুডিসিয়াল কমিটি, প্রেস কাউন্সিল রুলস কমিটি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সদস্য থাকাকালীন সময়ে আমাদের অতুজ্জল সিনিয়র ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন, প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মাননীয় বিচারপতি এম. মোজাম্মেল হক, সদস্য গিয়াস কামাল চৌধুরী, এডভোকেট মাহবুবে আলম, (সাবেক এর্টনি জেনারেল), কাজী সিরাজউদ্দিন আহমদ, আজিজুল হক বান্না, বিশ্ব প্রেস কাউন্সিলের নির্বাহী পরিষদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে এই পরিষদের অন্যতম সদস্য ও সাইপ্রাস প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ইসমত কোটাক। চট্টগ্রাম সম্পাদক পরিষদ ও চট্টগ্রাম সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব পালনের সময় আজাদী সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ, দৈনিক জমানা সম্পাদক মইনুল আলম, দৈনিক পূর্বকোণ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইউসুফ চৌধুরী, সম্পাদক তসলিম উদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ মোসলেম খান, মইনুল আহসান সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের দায়িত্ব পালনের সময় বি এ আজাদ ইসলামাবাদী, নুর সাঈদ চৌধুরী, অধ্যাপক এস এম আফজল মতিন সিদ্দিকী, ইমামুল ইসলাম লতিফী, এ.টি.এম মোদাবেবর চৌধুরী, আতাউল হাকিম, আ.জ.ম ওমর, এস এম আতিকুর রহমান, চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি চেয়ারম্যান ও পরিচালকের দায়িত্ব পালনের সময় কাজী জাফরুল ইসলাম, মোহাম্মদ ইউসুফ, স্বপন কুমার মহাজন, মোহাম্মদ মোসলেম খান, স্নেহভাজন দিদারুল আলম এর সহযোগিতা, সান্নিধ্য ও পরামর্শ পেয়েছিলাম। তাঁদের কেউ এখন বেঁচে নেই। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

গত ৩ বছরে আমার অসুস্থতার মধ্যেও সিনিয়র জার্নালিষ্ট ফোরাম আহ্বায়ক এবং কল্পলোক মিডিয়া টাওয়ার সাংবাদিক ফ্ল্যাট মালিক স্ট্রীয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব আমার ওপর অর্পিত হয়েছে। আন্তরিকতা ও স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। সবচেয়ে কঠিন দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে ৬ আগস্ট (২০২৪) চট্টগ্রাম প্রেসকèাব অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক এর দায়িত্ব অর্পণ করে। ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ৬ই আগস্ট (২০২৪) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে সাংবাদিক-সম্পাদক এবং বিপ্লবী ও বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতার বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিভিন্ন বক্তা তথ্য প্রমাণসহ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের কতিপয় কর্মকর্তা এবং সদস্যের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদের অমানবিক কাজে সহযোগিতা ও ছাত্র হত্যার উস্কানি দানসহ বিভিন্ন অভিাযোগ উত্থাপন করেন।

বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে হামলার জন্য উদ্যত্ত হলে আমি এবং চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: হাসান ফেরদৌস (অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য) তাদের নিবৃত্ত ও শান্ত করার চেষ্টা করি। এই উত্তাল প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে উপস্থিত সাংবাদিক- ছাত্র জনতা প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে ফ্যাসিবাদের দোসর প্রমাণিত ও অভিযুক্ত করে বিলুপ্ত করে দেয় এবং আমাকে আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটি সাবেক বিভাগীয় সম্পাদক গোলাম মাওলা মুরাদকে সদস্য সচিব করে ০৯ সদস্য বিশিষ্ট চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন ও ঘোষণা করে। এরপর থেকে অন্তরালে চলতে থাকে আরেক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। একটি কুচক্রী মহল চেয়েছে আগের কমিটি এবং আমাদের কমিটি বাদ দিয়ে নতুনকরে উভয় পক্ষ থেকে দুই জন করে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন এবং জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক করা। এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গবঃরপঁষড়ঁং একটি শব্দ খুব বেশি করে প্রথম দিকে ব্যবহার করা হয়েছে।

পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে অর্থ্যাৎ স্বাধীনতার পর থেকেই দেখে আসছি আমাদের সাংবাদিক নেতা আহমেদ হুমায়ুন, আনোয়ার জাহিদ, নির্মল সেন, গিয়াস কামাল চৌধুরী, এ.বি.এম মুসা কামাল লোহনী সহ সকলেই আমলাদের খবরদারির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, প্রতিবাদ করতেন।

আমাদের প্রিয় সংগঠন প্রেসক্লাবের সমস্যা নিজেরা সমাধান না করে আমলার কর্তৃত্বে ন্যস্ত করা কোন ধরনের গবঃরপঁষড়ঁং চষধহ. গত চার দশক ধরে আমাদের নেতারা ও আমরা বলে আসছি দুর্নীতিবাজ ঘুষখোর আমলা, চোরাকারবারী, কালো টাকার মালিক, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনকারীরা সংবাদ মাধ্যমকে জিম্মি করে রেখেছে। তাহলে আমাদের সংগঠনগুলোও এদের দোসরদের গবঃরপঁষড়ঁং চষধহ থেকে মুক্ত নয়!

আমি জনমতকে শ্রদ্ধা করি এবং আইন মেনে চলি। ৬ই আগস্ট জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি আহ্বায়ক এর দায়িত্ব নিতে সম্মত হয়েছিলাম। পরবর্তীতে সাংবাদিক-ছাত্র জনতার ৬ই আগস্টের সমাবেশে বিলুপ্ত করা কমিটিকে জেলা প্রশাসক এক আদেশ বলে আবারো বিলুপ্ত করে নিজে আহ্বায়ক করে আরেকটি অন্তবর্তী কমিটি গঠন করে প্রেসক্লাবের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন গত নভেম্বর মাস থেকে।

আমাদের ৬ আগস্টের কমিটিকে জেলা প্রশাসক বিলুপ্ত করেননি। এটা বিপ্লবী সাংবাদিক ছাত্র জনতার ম্যান্ডেটে করা কমিটি। এই কমিটিকে বিলুপ্ত করার এখতিয়ার হয়ত তাঁর ছিলনা। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের কমিটির সাথে কাজ ও সহযোগিতা করতে আমাকে আহ্বায়ক করে শৃঙ্খল ও ব্যবস্থাপনা উপ কমিটি গঠন করে দেয়। এই কমিটি কিছুটা তৎপর হবার এবং সভা ডাকার উদ্যোগ নিলে জেলা প্রশাসকের নিযুক্ত অন্তবর্তী কমিটির সদস্য সচিব চিঠির মাধ্যমে এই কমিটির কার্যক্রম কোন কারণ না দেখিয়ে স্থগিত করে দেয়।

প্রেসক্লাবের প্রবীন, পুরানো স্থায়ী সদস্যরা আমাকে জিজ্ঞেস করে সদস্যদের কল্যাণ তহবিলের টাকা জমা হচ্ছে না কেন? চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে কেন? ডাক্তার কেন বিদায় করা হয়েছে? আরো বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান। আমি কোনো উত্তর দিতে পারি না। আইনতঃ আমি জবাবদিহি করার দায়িত্ব প্রাপ্ত নই। আইনজীবি পরিবারের সদস্য বিধায় শৈশব কাল থেকে আইন মেনে চলতে অভ্যস্ত। এ সব বিষয় নিয়ে এক সময় হয়তো লেখা হবে। সত্য ঘটনাই প্রকাশ পাবে। সুবিধাবাদী ও স্বার্থান্বেষীদের অভিসঞ্চিতে হীনমনা ও ইর্ষাপরায়ণরা যাতে সঠিক ইতিহাস মুছে ফেলতে বা বিকৃত করতে না পারে সেদিকে তীক্ষèদৃষ্টি রাখতে হবে।

বিভিন্ন জনের প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের জবাবে ধন্যবাদ- কৃতজ্ঞতা জানানোর সাথে সাথে আমাকে সংক্ষিপ্তভাবে কৈফিয়ত দিতে হল। কারণ মৃত্যু কখন হবে বলা যায় না, আল্লাহ পাকই জানেন। কষ্ট সহ্য করার মত মানসিক ও শারীরিক অবস্থা অবশিষ্ট নেই। তবুও শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত মজলুম সাংবাদিক-জনতার পাশে প্রাণপূর্ণ শক্তি নিয়ে ইনশাল্লাহ থাকবো। বাকী জীবন আর কারো দীর্ঘশ্বাস ও অভিশাপের কারণ হতে চাই না।

মন্তব্য প্রতিবেদন———-

মঈনুদ্দীন কাদেরী শওকত: গত ১০ই জুন ছিল আমার জন্মদিন। এ দিন উপলক্ষে যাঁরা আমাকে শুভেচ্ছা, অভিনন্দন জানিয়ে সুস্বাস্থ্যের জন্য দোয়া করেছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদেরকে জানাই আমার শ্রদ্ধা-ভালোবাসা-অভিনন্দন। দেখা যায়, সহস্রাধিক শুভ কামনাকারীদের মধ্যে বেশির ভাগই হলেন চট্টগ্রাম-ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার মজলুম সাংবাদিক। তাছাড়াও ভারত, ইউরোপ, এশিয়া, আমেরিকা ও আফ্রিকা সহ বিভিন্ন দেশের সাংবাদিক এবং সংবাদ মাধ্যম ব্যক্তিত্ব।

গত তিন বছর ধরে আমি অসুস্থ, শরীরে অপারেশনও হয়েছে। অনেক সময় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে উপনীত হতে হয়েছে। আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের দোয়ায় এখনো বেঁচে আছি। জীবনে বিভিন্ন সময়ে যাদের সান্নিধ্যে সংগঠন করেছিলাম, যাঁদের সঠিক পরামর্শ পেয়েছিলাম তাদের প্রায় আজ বেঁচে নেই। দৃশ্যতঃ অনেক সময় আমার জীবন অর্জনহীন মনে হলেও ছেঁড়া খোঁড়া জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে অনন্ত এটুকু আনন্দ যে, প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, আজীবন অসত্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন জননেতা, ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালার অলি আহাদ এর রাজনৈতিক অনুবর্তী সহকর্মী এবং তাঁর সম্পাদিত ইত্তেহাদ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি/ সাংবাদিক ছিলাম প্রায় পাঁচ দশক পর্যন্ত।

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল এবং প্রেস কাউন্সিল জুডিসিয়াল কমিটি, প্রেস কাউন্সিল রুলস কমিটি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সদস্য থাকাকালীন সময়ে আমাদের অতুজ্জল সিনিয়র ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন, প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মাননীয় বিচারপতি এম. মোজাম্মেল হক, সদস্য গিয়াস কামাল চৌধুরী, এডভোকেট মাহবুবে আলম, (সাবেক এর্টনি জেনারেল), কাজী সিরাজউদ্দিন আহমদ, আজিজুল হক বান্না, বিশ্ব প্রেস কাউন্সিলের নির্বাহী পরিষদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে এই পরিষদের অন্যতম সদস্য ও সাইপ্রাস প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ইসমত কোটাক। চট্টগ্রাম সম্পাদক পরিষদ ও চট্টগ্রাম সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব পালনের সময় আজাদী সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ, দৈনিক জমানা সম্পাদক মইনুল আলম, দৈনিক পূর্বকোণ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইউসুফ চৌধুরী, সম্পাদক তসলিম উদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ মোসলেম খান, মইনুল আহসান সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের দায়িত্ব পালনের সময় বি এ আজাদ ইসলামাবাদী, নুর সাঈদ চৌধুরী, অধ্যাপক এস এম আফজল মতিন সিদ্দিকী, ইমামুল ইসলাম লতিফী, এ.টি.এম মোদাবেবর চৌধুরী, আতাউল হাকিম, আ.জ.ম ওমর, এস এম আতিকুর রহমান, চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি চেয়ারম্যান ও পরিচালকের দায়িত্ব পালনের সময় কাজী জাফরুল ইসলাম, মোহাম্মদ ইউসুফ, স্বপন কুমার মহাজন, মোহাম্মদ মোসলেম খান, স্নেহভাজন দিদারুল আলম এর সহযোগিতা, সান্নিধ্য ও পরামর্শ পেয়েছিলাম। তাঁদের কেউ এখন বেঁচে নেই। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

গত ৩ বছরে আমার অসুস্থতার মধ্যেও সিনিয়র জার্নালিষ্ট ফোরাম আহ্বায়ক এবং কল্পলোক মিডিয়া টাওয়ার সাংবাদিক ফ্ল্যাট মালিক স্ট্রীয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব আমার ওপর অর্পিত হয়েছে। আন্তরিকতা ও স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। সবচেয়ে কঠিন দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে ৬ আগস্ট (২০২৪) চট্টগ্রাম প্রেসকèাব অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক এর দায়িত্ব অর্পণ করে। ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ৬ই আগস্ট (২০২৪) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে সাংবাদিক-সম্পাদক এবং বিপ্লবী ও বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতার বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিভিন্ন বক্তা তথ্য প্রমাণসহ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের কতিপয় কর্মকর্তা এবং সদস্যের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদের অমানবিক কাজে সহযোগিতা ও ছাত্র হত্যার উস্কানি দানসহ বিভিন্ন অভিাযোগ উত্থাপন করেন।

বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে হামলার জন্য উদ্যত্ত হলে আমি এবং চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: হাসান ফেরদৌস (অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য) তাদের নিবৃত্ত ও শান্ত করার চেষ্টা করি। এই উত্তাল প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে উপস্থিত সাংবাদিক- ছাত্র জনতা প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে ফ্যাসিবাদের দোসর প্রমাণিত ও অভিযুক্ত করে বিলুপ্ত করে দেয় এবং আমাকে আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটি সাবেক বিভাগীয় সম্পাদক গোলাম মাওলা মুরাদকে সদস্য সচিব করে ০৯ সদস্য বিশিষ্ট চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন ও ঘোষণা করে। এরপর থেকে অন্তরালে চলতে থাকে আরেক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। একটি কুচক্রী মহল চেয়েছে আগের কমিটি এবং আমাদের কমিটি বাদ দিয়ে নতুনকরে উভয় পক্ষ থেকে দুই জন করে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন এবং জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক করা। এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গবঃরপঁষড়ঁং একটি শব্দ খুব বেশি করে প্রথম দিকে ব্যবহার করা হয়েছে।

পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে অর্থ্যাৎ স্বাধীনতার পর থেকেই দেখে আসছি আমাদের সাংবাদিক নেতা আহমেদ হুমায়ুন, আনোয়ার জাহিদ, নির্মল সেন, গিয়াস কামাল চৌধুরী, এ.বি.এম মুসা কামাল লোহনী সহ সকলেই আমলাদের খবরদারির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, প্রতিবাদ করতেন।

আমাদের প্রিয় সংগঠন প্রেসক্লাবের সমস্যা নিজেরা সমাধান না করে আমলার কর্তৃত্বে ন্যস্ত করা কোন ধরনের গবঃরপঁষড়ঁং চষধহ. গত চার দশক ধরে আমাদের নেতারা ও আমরা বলে আসছি দুর্নীতিবাজ ঘুষখোর আমলা, চোরাকারবারী, কালো টাকার মালিক, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনকারীরা সংবাদ মাধ্যমকে জিম্মি করে রেখেছে। তাহলে আমাদের সংগঠনগুলোও এদের দোসরদের গবঃরপঁষড়ঁং চষধহ থেকে মুক্ত নয়!

আমি জনমতকে শ্রদ্ধা করি এবং আইন মেনে চলি। ৬ই আগস্ট জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি আহ্বায়ক এর দায়িত্ব নিতে সম্মত হয়েছিলাম। পরবর্তীতে সাংবাদিক-ছাত্র জনতার ৬ই আগস্টের সমাবেশে বিলুপ্ত করা কমিটিকে জেলা প্রশাসক এক আদেশ বলে আবারো বিলুপ্ত করে নিজে আহ্বায়ক করে আরেকটি অন্তবর্তী কমিটি গঠন করে প্রেসক্লাবের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন গত নভেম্বর মাস থেকে।

আমাদের ৬ আগস্টের কমিটিকে জেলা প্রশাসক বিলুপ্ত করেননি। এটা বিপ্লবী সাংবাদিক ছাত্র জনতার ম্যান্ডেটে করা কমিটি। এই কমিটিকে বিলুপ্ত করার এখতিয়ার হয়ত তাঁর ছিলনা। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের কমিটির সাথে কাজ ও সহযোগিতা করতে আমাকে আহ্বায়ক করে শৃঙ্খল ও ব্যবস্থাপনা উপ কমিটি গঠন করে দেয়। এই কমিটি কিছুটা তৎপর হবার এবং সভা ডাকার উদ্যোগ নিলে জেলা প্রশাসকের নিযুক্ত অন্তবর্তী কমিটির সদস্য সচিব চিঠির মাধ্যমে এই কমিটির কার্যক্রম কোন কারণ না দেখিয়ে স্থগিত করে দেয়।

প্রেসক্লাবের প্রবীন, পুরানো স্থায়ী সদস্যরা আমাকে জিজ্ঞেস করে সদস্যদের কল্যাণ তহবিলের টাকা জমা হচ্ছে না কেন? চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে কেন? ডাক্তার কেন বিদায় করা হয়েছে? আরো বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান। আমি কোনো উত্তর দিতে পারি না। আইনতঃ আমি জবাবদিহি করার দায়িত্ব প্রাপ্ত নই। আইনজীবি পরিবারের সদস্য বিধায় শৈশব কাল থেকে আইন মেনে চলতে অভ্যস্ত। এ সব বিষয় নিয়ে এক সময় হয়তো লেখা হবে। সত্য ঘটনাই প্রকাশ পাবে। সুবিধাবাদী ও স্বার্থান্বেষীদের অভিসঞ্চিতে হীনমনা ও ইর্ষাপরায়ণরা যাতে সঠিক ইতিহাস মুছে ফেলতে বা বিকৃত করতে না পারে সেদিকে তীক্ষèদৃষ্টি রাখতে হবে।

বিভিন্ন জনের প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের জবাবে ধন্যবাদ- কৃতজ্ঞতা জানানোর সাথে সাথে আমাকে সংক্ষিপ্তভাবে কৈফিয়ত দিতে হল। কারণ মৃত্যু কখন হবে বলা যায় না, আল্লাহ পাকই জানেন। কষ্ট সহ্য করার মত মানসিক ও শারীরিক অবস্থা অবশিষ্ট নেই। তবুও শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত মজলুম সাংবাদিক-জনতার পাশে প্রাণপূর্ণ শক্তি নিয়ে ইনশাল্লাহ থাকবো। বাকী জীবন আর কারো দীর্ঘশ্বাস ও অভিশাপের কারণ হতে চাই না।