মিজবাউল হক, চকরিয়া : কক্সবাজারের চকরিয়ায় জালিয়াতি করে টিসিবির ডিলারশীপ হাতিয়ে নেওয়া সেই সাজ্জাদ হোসাইন ও অহিদুর রহমানের বরাদ্দ স্থগিত করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক। গত ২৯ জানুয়ারি চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতিকুর রহমান পূর্বের ডিলার এমএ শপিং শপ ও এমকে স্টোরের নামে ২০ হাজার ১৪৫ টিসিবির কার্ডধারীর পন্য উত্তোলন করতে বরাদপত্রে স্বাক্ষর করেছেন।
সুত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসাইন ও চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের বাসিন্দা অহিদুর রহমান ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে চকরিয়া উপজেলা থেকে টিসিবির ডিলারশীপের জন্য আবেদন করেন। আবেদনকারিরা ডিলারশীপ ভাগিয়ে আনতে চকরিয়া উপজেলার বরইতলী একতাবাজার এলাকার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও মো: জুবাইর উদ্দিনের মালিকানাধীন দুইটি মুদির দোকান নিজেদের দেখিয়ে মালিক বনে যান। প্রতারণা করার বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগী দুই মুদির দোকান মালিক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও মো: জুবাইর উদ্দিন বাদি হয়ে টিসিবির চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগটি তদন্ত করছেন অতিরিক্ত সচিব প্রশাসক (সার্বিক) নিজাম উদ্দিন আহমদ।
এরমধ্যে গত ২৩ জানুয়ারি টিসিবির চট্টগ্রামস্থ আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে ডিলার সাজ্জাদ হোসাইন ও অহিদুর রহমানের নাম সংযুক্ত করে বরাদ্দপত্র ইস্যু করা হয়। এ ঘটনায় প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী দুই মুদির দোকানী বিষয়টি ঢাকাস্থ টিসিবির প্রধান কার্যালয়ে অবহিত করলে ২৩ জানুয়ারি একই তারিখে অভিযুক্ত দুই ডিলারের নাম বরাদ্দপত্র থেকে বাদ দিয়ে পুনরায় অফিস আদেশ দেন টিসিবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান শফিকুল ইসলাম।
ভুক্তভোগী দোকানদার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও জুবাইর উদ্দিন বলেন, জালিয়াতির ঘটনায় আমাদের দেওয়া অভিযোগ তদন্তে চলছে। গত ২৭ জানুয়ারি টিসিবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে পুনরায় আরেকটি বরাদ্দপত্র ইস্যু করা হয়। বাদ দেওয়া অভিযুক্ত দুই ডিলার সাজ্জাদ হোসাইন ও অহিদুর রহমানকে সংযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ওই বরাদ্দপত্রটি আর আমলে নেয়নি। ২৩ জানুয়ারি জারি করা দ্বিতীয় দফার বরাদ্দপত্র অনুযায়ী টিসিবির পন্য উত্তোলনের জন্য পুরনো ডিলার এমএ শপিং শপ ও এমকে স্টোরের নামে ছাড়পত্রে স্বাক্ষর দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নিজাম উদ্দিন আহমদ।
তারা আরও বলেন, টিসিবির ডিলারশীপ পেতে আমাদের দোকান তাদের দেখিয়ে জালিয়াতি করার ঘটনায় আমরা অভিযুক্ত দুইজনের বিরুদ্ধে এ সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি ঢাকাস্থ টিসিবির চেয়ারম্যান কার্যালয়ে। কারণ টিসিবির অসাধু কিছু কর্মকর্তা কৌশলে জালিয়াতির ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে অভিযুক্ত দুইজনকে ডিলার হিসেবে বরাদ্দ দিতে নানাভাবে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ অবস্থায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন ও টিসিবি কর্তৃপক্ষ পুনরায় সরেজমিনে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।




