মোঃ আয়ুব মিয়াজী,চন্দনাইশ: সাধারণ জনগণের মতামত লিখিতভাবে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটি ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জানাতে। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি)বিকালে চন্দনাইশ-সাতকানিয়া উন্নয়ন ফোরামের উদ্যোগে দোহাজারীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী,সাবেক বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের বিজয় আপনারা দেখেছেন। তারা ৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার ঘোষণা দিয়েছিল। ছাত্ররা যম হিসেবে আবিভূর্ত হলে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় শেখ হাসিনা। মাত্র ৫২ মিনিট সময় পেয়েছিলেন, রান্না করা ভাতও খেতে পারেননি। একই ভাবে এই অঞ্চলে রাজা লক্ষণ সেনও অত্যচারী ছিলেন। বখতিয়ার খিলজী যখন আক্রমণ করেছিলেন তখন তিনিও খাবার না খেয়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এটি একটি শিক্ষণীয় বিষয়। নতুন নতুন রাজনৈতিক দল নতুন নতুন কথা বলছেন। কে কি করবেন তা আপনাদের নিকট থেকে জেনেই রাজনীতি করতে হবে। বিগত সময়ে যারা গাড়িতে পতকা উড়িয়ে চলে গেছেন, তারা কেউ কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা করেনি বলে এই পরিণতি হয়েছে।
সাবেক বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন বলেন, রাজনীতিবিদদের জনগণের পাশে যেতে হবে। কেমন দেশ, কেমন রাজনীতিবিদ চাই তা জানতে হলে জনগণের নিকট আসতে হবে। বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। দিনের ভোট রাতে নেয়া যাবে না। দোহাজারীতে ক্যান্টনমেন্ট স্থাপন করতে হবে। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে এর বিকল্প নেই। আধু খান বিষয়টিকে অনুধাবন করে দোহাজারীতে সেই সময় দুই হাজার সৈন্য নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট তৈরি করেছিলেন। সেই থেকে দোহাজারী নামকরণ হয়েছে। জনগণের আশা-আখাক্সক্ষা পূরণের লক্ষে মুক্ত রাজনৈতিক চিন্তা চেতনা নিয়ে দেশকে তৈরি করতে হবে। ইয়াবা বহনকারীরা মাত্র ১ থেকে ২ হাজার টাকার জন্য জেল খাটে। মাদক ব্যবসায়ীরা তাদেরকে জামিন করে অনেক টাকা খরচ হয়েছে বলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মাদক ব্যবসায় জড়িত করে ফেলে। এদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করলে তারা এই ধরনের ঝুঁকি নেবে না। আইনকে শিথিল করে মালেশিয়া এবং সিঙ্গাপুরের মত বেত্রাঘাত করে ছেড়ে দিয়ে কর্মসংস্থানে সংযুক্ত করতে হবে।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট নাজিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, বিগত ১৫ বছরের অপশাসন পর্যালোচনা করে পরবর্তী রাজনীতির পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। তারেক জিয়ার ৩১ দফা রাষ্ট্র পরিচালনায় সহায়ক হিসেবে ভুমিকা রাখবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের গুণেধরা রাজনীতিকে স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে ঘুম-খুন, মামলা-হামলা, জবরদখল পরিহার করে ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
মূখ্য আলোচক এম.এ হাশেম রাজু বলেন, দলীয় পদ-পদবী ব্যবহার করে চাঁদাবাজী করলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে রাজপথে ও জেলখানায় যৌবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে। তারেক জিয়ার উৎপাদনমূখী, গণতন্ত্রকামী রাষ্ট্র কায়েমে কাজ করতে হবে সবাইকে।
আলোচনায় অংশ নেন, সাংবাদিক নাসির উদ্দীন বাবলু, বিএনপি নেতা আমির হোসেন, মহিউদ্দীন, লোকমান হাকিম, ছাত্রদল নেতা রাজিব উদ্দীনসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ। আলোচনা শেষে সাবেক বিচারপতি আবদুস সালাম মামুনকে প্রধান উপদেষ্টা, এড. নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, আফিল উদ্দীনকে উপদেষ্টা, এম.এ হাশেম রাজুকে সভাপতি, এড. সাদ্দাম হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক, জসিম উদ্দীন চৌধুরী মিন্টু, আমির হোসেনকে সহ-সভাপতি করে চন্দনাইশ-সাতকানিয়া উন্নয়ন ফোরাম প্রস্তাবিত কমিটি ঘোষণা করা হয়।




