দি ক্রাইম, ঢাকা: ঢাকায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের অন্যতম বৃহত্তম সংগঠন ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের (ডিএসইসি) বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনের পাঁচ শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
ডিএসইসির সভাপতি মামুন ফরাজীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইফনিয়ন-বিএফইউজে সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইফনিয়ন-বিএফইউজে এর মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইফনিয়ন (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম। এছাড়া ডিএসইসির সাবেক সভাপতি কায়কোবার মিলন, আশরাফুল ইসলাম, নাসিমা আক্তার সোমা, আলমামুন, শহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন । অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হৃদয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সংবাদকর্মীরা দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের জন্য নানান সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন। সাংবাদিক সংগঠনের নেতা যারা আছেন, তারা এখন অলংকারের মতো হয়ে গেছেন। কারণ তাদের সব কথা তাদের আগে প্রধানমন্ত্রীই বলে দেন।’
নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের কথা বলা হয়, আরও নানান সমালোচনা করা হয়। কিন্তু অষ্টম ও নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করা হয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়নের কথা বলা হয় না। একটা রাষ্ট্র সুশৃঙ্খলভাবে চলতে হলে আইনের ভিত্তিতেই চলতে হবে। দেশে কোনো অপরাধী আইনের বাইরে থাকবে না।’
একজন সাব-এডিটর তার মেধা কাজে লাগিয়ে পাঠকদের সামনে সংবাদ উপস্থাপন করেন জানিয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘তারা সারা দিন-সারা রাত কাজ করে, পরিবারেও অনেকে সময় দিতে পারেন না। বাইরে সংগঠন গোছানোর সুযোগ তাদের কম। তাই সবাইকে আহ্বান জানাই, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংগঠিত হয়ে হলেও দেশের গণমাধ্যম গঠনে আপনারা কাজ করবেন।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় সংবাদকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন জানিয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তানি বাহিনীর নির্যাতন ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের খবর সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়। কিন্তু বিগত ৫০ বছরেও আমরা সংবাদকর্মীদের যথাযথ স্থান ও মর্যাদা দিতে পারিনি।’
স্বাধীনতার পর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর গণমাধ্যম গঠনে চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাঁকে হত্যা করা হল। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আর কেউ পত্রিকায় বঙ্গবন্ধু শব্দটাই লিখতে পারেনি। বন্দুকের নলের কাছে তারা জিম্মি হয়ে পড়েছিল। আমরা সত্য থেকে সরে গিয়েছিলাম।’
মধ্যহ্ন বিরতির পর শুরু হয় দ্বিতীয় অধিবেশন। এসময় গত এক বছরে সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষের রিপোর্ট, গঠনতন্ত্র সংশোধনী প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়।

সংগঠনের সভাপতি মামুন ফরাজী বলেন, ‘করোনা মহামারিকালে দায়িত্ব নেওয়ার পরও আমরা থেমে থাকিনি। সংগঠনে গতি আনতে নানামুখি উদ্যোগ নিয়েছি। অধিকাংশ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। যে সব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা যায়নি আশা করি আগামী নেতৃত্ব সেগুলো করবে।’
সুন্দর ও শৃঙ্খলভাবে এজিএম অনুষ্ঠান সম্পন্ন হওয়ায় সংগঠনের সদস্যদের প্রতিও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সভাপতি মামুন ফরাজী।
Post Views: 804