রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি: রাঙ্গামাটিতে গত এক সপ্তাহে ২১৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অংকের হিসেবে শনাক্তের হার আট দশমিক পঁচিশ শতাংশ। তবে এদের মধ্যে কেবল একজনই হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তবুও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্যে পর্যটন শহর রাঙ্গামাটিকে ‘সংক্রমণের উচ্চঝুঁকি’ দেখিয়ে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তবে রাঙ্গামাটিকে রেড জোন ঘোষণা করা হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনও সচেতনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই এখানে। স্বাভাবিক সময়ের মতোই মানুষজন দৈনন্দিন কর্মকান্ড চালাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে ‘জনগণের অসচেতনতা’কেই দুষছেন রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা।
তিনি বলেন, এখানের জনগণের সচেতনতা একটু কম হওয়াতে এই সংখ্যাটা বেড়ে গেছে বলে মনে করি। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করেতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত প্রতিদিন জেলার জনবহুল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছে।
আজ বুধবার (১২ জানুয়ারী) নিজের কার্যালয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘রোগি শনাক্তের হার ১০ থেকে ১৯ শতাংশ হলেই সেখানে রেড জোন ঘোষণা করা হচ্ছে। তার ভিত্তি করেই রাঙামাটিকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। গত সপ্তাহে আমাদের রোগি শনাক্ত হয়েছে ১৮ জন। সেই হিসেবে আমি মনে করি যে সংখ্যাটা খুব একটা বেশি নয়। শুধু এখানে আমাদের পরীক্ষা সংখ্যা কম হওয়াতে এই পার্সেন্টিজ বেড়ে গেছে’।
‘নভেম্বর মাসে রোগির সংখ্যা ছিল ৮ জন। ডিসেম্বরে ২৭ জন। এবং গতকাল পর্যন্ত রাঙামাটি জেলায় এই সংখ্যা ২৪ জন। এটা শুধু পর্যটকদের আসার কারণে হয়েছে বলবো না। এখানকার অনেক লোক বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে লোকও আসে। তবে সীমান্তবর্তী এলাকা নিয়ে আমাদের বেশি ভীত-সন্ত্রস্ত হওয়ার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না’।
করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে নিজেদের সক্ষমতা উল্লেখ করে সিভিল সার্জন বলেন, ‘মন্ত্রী পরিষদ থেকে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে ইতোমধ্যে আমরা সার্কুলার করেছি। এবং আমাদের কভিড ইউনিট প্রস্তুত আছে। সেখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রয়োজনীয় লজিস্টিকও আছে’।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, উচ্চঝুঁকি থাকায় ঢাকা ও রাঙামাটি জেলা সংক্রমণের রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া মধ্যম ঝুঁকির তালিকায় ৬ জেলাকে ‘হলুদ জোন’ এবং কম ঝুঁকির ৫৪ জেলাকে সবুজ জোন বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেখানে সংক্রমণের উচ্চঝুঁকি, মধ্যম ঝুঁকি ও কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়।
সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৪৫ জনের। এরমধ্যে তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৬.৬৭%।



