রাজিব শর্মা:
চট্টগ্রাম আনোয়ারা উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনে মনোনিত প্রার্থীরা । এবার প্রার্থী হয়েছেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দরা । ভোটারগণের সাথে প্রতীক সমূহ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় যার যার মতো করে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। তবে নারী প্রাথীদের মধ্যে প্রচারণায় হাঁস প্রতীকে এগিয়ে আছেন অ্যাডভোকেট চুমকি চৌধুরী বলে মনে করছেন আনোয়ারাবাসী। যার প্রতিদ্বন্ধী হয়ে এবার লড়ছেন ফুটবল প্রতীকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম বেগম ও কলসি প্রতীকে পারভীন আক্তার।
তবে এবার অনান্য পাত্রীদের প্রচারণার পাশাপাশি সম্পূন্ন ভিন্নভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী অ্যাডভোকেট চুমকি চৌধুরী। যার শুরু থেকে প্রচারে জনগণের মাঝে দাবিগুলো তুলে ধরা হচ্ছে, তা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন সুরে। প্রচারে রাজনীতিতে মেধা ও মেধাবিদের গুরুত্ব দেয়া, বিজ্ঞানমনস্কতা, নারীদের অধিকার, যুব সমাজে পিছিয়ে পড়া, অবহেলিত নারীদের নিয়ে যার নানা চিন্তাধারা, প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারী ও যুবসমাজকে নিয়ে ভাবার বিষয়গুলো থাকাতেই নবপ্রজন্মদের মাঝে বেশ সাড়া পেলেছেন তরুণ এ প্রার্থী। এতে ওনার হয়ে নিরলসভাবে প্রচারণা চালাতেও দেখা যায় উপজেলার তরুণ ও যুবক শুরু করে সমাজের নিম্ন পেশার মানুষরাও।
আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্নস্থানে ঘুরে জানা যায়, নয়টি ইউনিয়নের কোনটাতে প্রচারে পিছিয়ে নেই অ্যাডভোকেট চুমকী চৌধুরী, তার সঙ্গে তারুণ্য শক্তি থাকাতেই বলা যায় আরও একদাপ প্রচারণায় এগিয়ে আছেন এ প্রার্থী। এতে হাঁস প্রতীকে সমর্থনে ভোটারদের মাঝে গণজোয়ার সৃষ্টি করেছে।
আনোয়ারা ৮নং চাতরী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. জয়নাল বলেন, গত নির্বাচনের চেয়ে এবার নির্বাচনে প্রার্থীদের যোগ্যতা অনেক বেশি । এবার আমাদের জন্য যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা অনেক সহজ। আমরা আশা করছি সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করব । যিনি জনগণের পাশে থাকেন আমরা তাকেই নির্বাচিত করবো।
বৈরাগ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. ফরহাদ বলেন, উপজেলা নির্বাচনে যিনি আমাদের তরুণ কথা বলছে। নারী অধিকারের কথা বরছে। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর কথা বলছে, আমরা তাকেই নির্বাচিত করব।

>>৬নং বারখাইনের শোলকাটা গ্রামের প্রচারণা মুহূর্তে চুমকি
৬ নং বারখাইন ইউনিয়নের শোলকাটা গ্রামের দিনমজুর মো. ফরিদ বলেন, প্রচারণায় অনেকেই অনেকভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছে, আমরা এমন চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান চাই যিনি অন্তত আমাদের মতো ভেটে খাওয়া মানুষের কথা ভাবেন।
মহিলা প্রার্থী সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্বাচনে অনেক মহিলা প্রার্থী অনেক কথা বলে। নির্বাচনের পর আমরা তাদের আর দেখিনা। কিন্তু এবার আমাদের মাঝে হাঁস মার্কা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী চুমকি আপার কথাগুলো মনে হয়েছে আনোয়ারা নারীশক্তিকে আরো একদাপ এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে এ প্রার্থী। আমরা মনেকরি, একজন নারীদের অধিকার নিয়ে যে ভাবছে তাকে সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন। তাই আপাতত তার জনপ্রিয়তা শীর্ষে দেখছি।’
অন্যদিকে একজন যোগ্য প্রতিনিধিত্ব বলে মনে করছেন সমাজের সুবিধাবঞ্চিত নারীদের একটি অংশ। বটতলী ইউনিয়নের কলেজ শিক্ষার্থী নাসরিন জাহান বলেন, ‘সচরাচর সমাজের উন্নয়নে যেখানে রাজনীতি থেকে মেধাবিরা সরে পড়ছে, ঐস্থানে একজন মেধাবি এগিয়ে আসা মানে বুঝতে হবে রাজনীতি ধারা বদলাচ্ছে। এভাবে সমাজের মেধাবিরা যদি রাজনীতিতে আসে আমি মনে করি, সমাজ বদলানো সম্ভব। দীর্ঘদিন পর একজন নারীদের মধ্যে যোগ্য প্রতিনিধিত্ব পেতে যাচ্ছে আনোয়ারাবাসী।
বর্তমান প্রচারনা নিয়ে মাঠের সর্মথন কেমন পাচ্ছেন জানতে চাইলে ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট চুমকি চৌধুরী বলেন, প্রচারণায় বেশ জনসমর্থন পাচ্ছি। সমাজের সচেতন মহল থেকে শুরু করে নবপ্রজন্ম আমাকে সাড়া দিচ্ছে। এখন ভোটাররা তাদের যোগ্য প্রতিনিধিত্বকে বেছে নেবেন। কারও বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই। আমি জনগণের হয়ে, সমাজে পিছিয়ে পড়া নারীদের উন্নয়নের কথা ভাবছি। নির্বাচনের আসার মূলত উদ্দেশ্য হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ও স্বপ্ন স্মার্ট বাংলাদেশে গড়ার প্রত্যয়ে একজন নাগরিক হিসেবে পাশে থাকা কর্তব্য বলে মনে করি। সে হিসেবে আমি জনগণের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। জনগণ আমাকে সমর্থন না করলেও আমার সহযোগিতা সবসময় তারা পাবে। আনোয়ারার জনগণের জন্য আমার আইনী সেবার দরজা সবসময় খোলা থাকবে।

>>আনোয়ারা উপকূলীয় এলাকায় বিদ্যালয় পরিদর্শনে তরুণ এ প্রার্থী
এছাড়া চট্টগ্রামের আনোয়ারায় এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ২৯ মে ব্যালেট পেপারের মাধ্যমে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষদিন গত রোববার (১২ মে) মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন চেয়ারম্যান পদে আবুল কালাম চৌধুরী ও ছাবের আহমদ এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে মুজিবুর রহমান। সোমবার (১৩ মে) দুপুরে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে প্রতীক বরাদ্দের পরপরই নির্বাচনী এলাকা আনোয়ারায় নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। পছন্দের প্রার্থীদের প্রতীকের পোষ্টার টানানোর পাশাপাশি মাইক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে প্রচার-প্রচারণা।
এবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রচারণায় আছেন চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী (দোয়াত কলম), উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এমএ মান্নান চৌধুরী (মোটরসাইকেল) ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক (আনারস) প্রতীক নিয়ে প্রচারণায় নেমেছেন। এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুগ্রীব মজুমদার দোলন (তালা), আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা আবু জাফর চৌধুরী (টিয়াপাখি), সালাহ্ উদ্দিন সারো (টিউবওয়েল), এম.এ মান্নান মান্না (চশমা), প্রদীপ দত্ত কনক (মাইক), সন্তোষ কুমার দে (বই) প্রতীক এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম বেগম (ফুটবল), পারভীন আকতার (কলসি), অ্যাডভোকেট চুমকি চৌধুরী (হাঁস) প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে নেমেছেন। প্রচারণা চলবে আগামী ২৭ মে রাত ১২টা পর্যন্ত।




