ইউসুফ হুসাইন লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের লালপুর থানার পরে এবার নাটোর সদর থানার ফুটেজ এবং ওসির বক্তব্য নিতে গেলে চ্যানেল টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের সাংবাদিক ও নাটোরের ইউনিক প্রেসক্লাবের সভাপতি দেবাশীষ কুমার সরকারের মোবাইল এবং তার ক্যামেরাম্যানের কাছ থেকে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় নাটোর সদর থানার ওসি নাছিম আহমেদ।
এসময় ওসি নাছিম চ্যানেল টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান সজিবুর রহমানকে ধাক্কাধাকিও করেন। পরে ১১টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম এসে ক্যামেরা ও মোবাইল ফেরত দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের সাংবাদিক দেবাশীষ কুমার সরকার বলেন, নাটোর থানা পুলিশের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে প্রতিবেদন করার জন্য থানার ভিডিও ফুটেজ এবং ওসির বক্তব্য নিতে গেলে ওসি নাছিম আহমেদ উত্তেজিত হয়ে উঠে এবং তার ব্যক্তিগত মোবাইল এবং টেলিভিশনের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়। এসময় ক্যামেরাম্যান সজিবুরকে ধাক্কাধাক্কি করে ওসি নিজেই। পরে ছিনিয়ে নেয়া মোবাইল এবং ক্যামেরা একই থানার উপ-পরিদর্শক শাহাদৎ হোসেনের জিম্মায় রেখে বাইরে চলে যান।
উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ওন্ড অপারেশন) শরিফুল ইসলাম থানায় এসে থানার উপ-পরিদর্শক শাহাদৎ হোসেনের কাছ থেকে মোবাইল এবং ক্যামেরা নিয়ে সাংবাদিক দেবাশীষের কাছে ফিরিয়ে দেন।
ওসির এমন কান্ডের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিনি ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন ‘এসপি স্যার সারদায় আছেন আইজিপি স্যারের অনুষ্ঠানে। সেখান থেকে ফিরলে ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।“
নাটোর থানার অফিসার ইনচার্জ নাছিম আহমেদ বলেন, “আমি মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলছিলাম। এসময় তিনি সেলিমের বিরুদ্ধে কয়টা মামলা আছে জানতে চান এবং ক্যামেরাম্যান এসব রেকর্ড করছিলো। সেকারণে তাদের মোবাইল এবং ক্যামেরা একজন উপপরিদর্শকের কাছে দিয়ে যাই। অফিসে ঢুকেই কথপোকথন রেকর্ড করা তো ঠিক না। আমি দুঃখ পেয়েছি।
অপরদিকে, গত ২৪ সেপ্টম্বর লালপুরের ওসি উজ্জ্বল হোসেন এর বিরুদ্ধে মহেশ্বর গ্রামে ছেলে কর্তৃক পিতাকে ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে পিতার মৃত্যু হয় বিষয়টি তাৎক্ষণিক ওসি উজ্জ্বল হোসেনকে জানালে তিনি সরেজমিনে এসে সুরত হাল না করেই প্রকাশ্যে জনসাধারণের মাঝে তথ্যদাতা সাংবাদিক ইউসুফ হোসেনের নাম প্রকাশ করে সাধারণ জনগণের হাতে সাংবাদিক ইউসুফ হোসাইন লাঞ্ছিত হয়।
উল্লেখ্য,ওসি উজ্জ্বল হোসেন এর উপস্থিতিতে লাশ দাফন করা হয়। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেই দিন থেকে চার দিন পর্যন্ত নিহতের ছেলে সিদ্দিক আলী (৪১) পলাতক ছিল।
এ ব্যাপারে নাটোর পুলিশ সুপার , উপ-পুলিশ পরিদর্শক রাজশাহী ,এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার ঢাকাতে অভিযোগ জমা দেওয়া হয়।
বর্তমান স্মার্ট বাংলাদেশের যুগে পুলিশ সাংবাদিকের সৃজনশীল মনোভাব না থাকায় সাধারণ জনগণের মাঝে বিরূপ প্রক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে । বিষয়টি উদ্ধর্ত্বন কর্মকর্তাদের নজর দিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন সাধারণ জনগণ।