রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রাঙামাটির নানিয়ারচর সেতু নির্মাণের মধ্যদিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে পথ আরও একধাপ আমরা এগিয়ে গেলাম। এর ফলে পার্বত্য জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশাও পূরণ হবে’।আজ বুধবার (১২ জানুয়ারি) সকাল দশটায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাহাড়ের সর্ববৃহৎ রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি নানিয়ারচর সেতুসহ ঢাকা, সিলেট ও কক্সবাজারের মোট চারটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম যেখানে প্রায় দুই দশক একটা অশান্ত পরিবেশ ছিল। আমরা সরকার গঠন করার পরেই ১৯৯৭ সালে আমরা শান্তিচুক্তি করি। কাজেই সেই শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে আমাদের যে প্রতিশ্রুতি সেটাও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি’।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জেলা সদরের সঙ্গে প্রত্যেকটা উপজেলা এবং উপজেলার সাথে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত যাতে সংযোগ থাকে সেই পরিকল্পনা নিয়ে সমগ্র বাংলাদেশে সড়ক নেটওয়াকের জন্য আমরা ব্যবস্থা করেছি’।
নানিয়ারচর সেতুর নির্মাণ কাজের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত জেলা। বর্ষাকালে যখন কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর বৃদ্ধি পায় তখন অতিমাত্রায় ঢেউ দেখা যায়। তখন এই অঞ্চলের লোকের চলাচল খুব কষ্টকর হয়ে যায়। রাঙ্গামাটি জেলা সদর ও বিভাগীয় শহরে যোগাযোগের জন্য বাঁধাগ্রস্ত যাতে না হয়, স্থানীয় মানুষের চলাচল যাতে সহজ হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যের যেন প্রসার ঘটে, উৎপাদিত পন্য যাতে বাজারজাত করতে পারে, সেসব বিষয়কে বিবেচনা করেই আমরা সড়ক নির্মাণ করে যাচ্ছি এবং সেতু নির্মাণ করা হয়েছে’। এই সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ায় স্থানীয় মানুষেরা আরও বেশি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে লংগদু উপজেলা নিয়ে মারিশ্যা পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করবে’।
৫০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ২ মিটার প্রস্থের এই সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণসহ ব্যয় হয়েছে ২২৭.৬১ কোটি টাকা। সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়া এই সেতু এখন পাহাড়ের সবচেয়ে দীর্ঘ ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। সেতুর নির্মাণ কাজ ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয় ৩০ জুন ২০২১। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে সেনাবাহিনীর ২০ ও ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (ইসিবি)। রাঙামাটি-নানিয়ারচর-লংগদু, খাগড়াছড়ি-দিঘিনালা-বাঘাইছড়ি-সাজেকের বাসিন্দারা সেতুটির সরাসরি সুফল ভোগ করবে।
বিশেষ ভৌগলিক অবস্থার কারণে পাহাড়ের সব উপজেলা এখনও সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। এর সাথে গেলো শতাব্দির মাঝামাঝি ১৯৬০ সালে ‘কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প’ নির্মাণে বাঁধ তৈরি হয়। এতে সৃষ্ট কৃত্রিম হ্রদের কারণে দূরবর্তী বেশ ক’টি উপজেলা ‘জলবন্দি’ হয়ে জেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থায় একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে নৌযান। ফলে নৌযান নির্ভর পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের সময়মতো ‘পরিবহন ও বাজারজাত’ করা যেমন কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল তেমনি যাতায়াতেও ছিল নানান সীমাবদ্ধতা।
সেতুটি নির্মাণের ফলে পিছিয়ে পড়া পাহাড়ে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় যেমনি গতিশীলতা আসবে তেমনি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সাথে অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন হবে কৃষকসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। আর সাজেকের সাথে রাঙ্গামাটি শহরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ তৈরি হওয়ায় সমৃদ্ধ হবে পর্যটন সংশ্লিষ্ট খাতও। রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িসহ ছয়টি পাহাড়ি উপজেলার অন্তত পাঁচ লাখ মানুষের ভাগ্য বদলাবে সেতুটি; এমন প্রত্যাশা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের।
নানিয়ারচর সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে সেনাবাহিনী সেতুর উত্তর প্রান্তে মঞ্চ তৈরি করে। এখান থেকেই গণভবনের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন সংশ্লিষ্টরা। এজন্য আনুষাঙ্গিক ব্যাপক প্রস্তুতির সাথে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোড়দার করা হয়েছিল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, কক্সবাজারের সংসদ সাইমুম সরোয়ার কমল, মহিলা এমপি শাহিনা আক্তার, সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক কর্নেল মুহাম্মদ সাইফুর রহমান (এসইউপি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি), পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং নেতৃবৃন্দ।

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রাঙামাটির নানিয়ারচর সেতু নির্মাণের মধ্যদিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে পথ আরও একধাপ আমরা এগিয়ে গেলাম। এর ফলে পার্বত্য জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশাও পূরণ হবে’।আজ বুধবার (১২ জানুয়ারি) সকাল দশটায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাহাড়ের সর্ববৃহৎ রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি নানিয়ারচর সেতুসহ ঢাকা, সিলেট ও কক্সবাজারের মোট চারটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম যেখানে প্রায় দুই দশক একটা অশান্ত পরিবেশ ছিল। আমরা সরকার গঠন করার পরেই ১৯৯৭ সালে আমরা শান্তিচুক্তি করি। কাজেই সেই শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে আমাদের যে প্রতিশ্রুতি সেটাও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি’।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জেলা সদরের সঙ্গে প্রত্যেকটা উপজেলা এবং উপজেলার সাথে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত যাতে সংযোগ থাকে সেই পরিকল্পনা নিয়ে সমগ্র বাংলাদেশে সড়ক নেটওয়াকের জন্য আমরা ব্যবস্থা করেছি’।
নানিয়ারচর সেতুর নির্মাণ কাজের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত জেলা। বর্ষাকালে যখন কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর বৃদ্ধি পায় তখন অতিমাত্রায় ঢেউ দেখা যায়। তখন এই অঞ্চলের লোকের চলাচল খুব কষ্টকর হয়ে যায়। রাঙ্গামাটি জেলা সদর ও বিভাগীয় শহরে যোগাযোগের জন্য বাঁধাগ্রস্ত যাতে না হয়, স্থানীয় মানুষের চলাচল যাতে সহজ হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যের যেন প্রসার ঘটে, উৎপাদিত পন্য যাতে বাজারজাত করতে পারে, সেসব বিষয়কে বিবেচনা করেই আমরা সড়ক নির্মাণ করে যাচ্ছি এবং সেতু নির্মাণ করা হয়েছে’। এই সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ায় স্থানীয় মানুষেরা আরও বেশি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে লংগদু উপজেলা নিয়ে মারিশ্যা পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করবে’।
৫০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ২ মিটার প্রস্থের এই সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণসহ ব্যয় হয়েছে ২২৭.৬১ কোটি টাকা। সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়া এই সেতু এখন পাহাড়ের সবচেয়ে দীর্ঘ ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। সেতুর নির্মাণ কাজ ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয় ৩০ জুন ২০২১। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে সেনাবাহিনীর ২০ ও ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (ইসিবি)। রাঙামাটি-নানিয়ারচর-লংগদু, খাগড়াছড়ি-দিঘিনালা-বাঘাইছড়ি-সাজেকের বাসিন্দারা সেতুটির সরাসরি সুফল ভোগ করবে।
বিশেষ ভৌগলিক অবস্থার কারণে পাহাড়ের সব উপজেলা এখনও সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। এর সাথে গেলো শতাব্দির মাঝামাঝি ১৯৬০ সালে ‘কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প’ নির্মাণে বাঁধ তৈরি হয়। এতে সৃষ্ট কৃত্রিম হ্রদের কারণে দূরবর্তী বেশ ক’টি উপজেলা ‘জলবন্দি’ হয়ে জেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থায় একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে নৌযান। ফলে নৌযান নির্ভর পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের সময়মতো ‘পরিবহন ও বাজারজাত’ করা যেমন কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল তেমনি যাতায়াতেও ছিল নানান সীমাবদ্ধতা।
সেতুটি নির্মাণের ফলে পিছিয়ে পড়া পাহাড়ে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় যেমনি গতিশীলতা আসবে তেমনি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সাথে অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন হবে কৃষকসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। আর সাজেকের সাথে রাঙ্গামাটি শহরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ তৈরি হওয়ায় সমৃদ্ধ হবে পর্যটন সংশ্লিষ্ট খাতও। রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িসহ ছয়টি পাহাড়ি উপজেলার অন্তত পাঁচ লাখ মানুষের ভাগ্য বদলাবে সেতুটি; এমন প্রত্যাশা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের।
নানিয়ারচর সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে সেনাবাহিনী সেতুর উত্তর প্রান্তে মঞ্চ তৈরি করে। এখান থেকেই গণভবনের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন সংশ্লিষ্টরা। এজন্য আনুষাঙ্গিক ব্যাপক প্রস্তুতির সাথে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোড়দার করা হয়েছিল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, কক্সবাজারের সংসদ সাইমুম সরোয়ার কমল, মহিলা এমপি শাহিনা আক্তার, সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক কর্নেল মুহাম্মদ সাইফুর রহমান (এসইউপি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি), পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং নেতৃবৃন্দ।