দি ক্রাইম ডেস্ক: আমদানি এবং রপ্তানি পণ্যের কন্টেইনারের ভাড়া বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন উদ্যোক্তারা। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং এশিয়ার দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানি এবং আমদানির ক্ষেত্রে কন্টেইনার ভাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছয়-সাত গুণ বেড়েছে। আমদানিকৃত পণ্যের কন্টেইনারের ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্যোক্তাদের উৎপাদন খরচ ব্যাপক বেড়েছে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমদানিকৃত নিত্যপণ্যের দামও বেড়েছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, দেশীয় কলকারখানার উদ্যোক্তারা এখন নানামুখী চাপে আছে। এর সঙ্গে বাড়তি যোগ হয়েছে অতিরিক্ত কন্টেইনার ভাড়া।

বাংলাদেশে কাজ করে এমন শিপিং লাইনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস ভয়াবহ আকারে দেখা দিলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দেয়। ভাইরাসের প্রকোপ কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে পণ্য শিপমেন্টের চাপ পড়ায় কন্টেইনার ভাড়া বেড়েছে। জানা গেছে, ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দর পর্যন্ত একটি ৪০ ফুট কন্টেইনারের ভাড়া ছিল ২ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার (২ লাখ ১১ হাজার টাকা)। এখন একই কন্টেইনারের পরিবহন ভাড়া ১৬ হাজার মার্কিন ডলার (১৪ লাখ ৮ হাজার টাকা)। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির ক্ষেত্রে একটি ৪০ ফুট কন্টেইনারের ভাড়া ৬ হাজার মার্কিন ডলার (৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা)। কানাডা থেকে আমদানি এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে শিপিং লাইনগুলো একই ভাড়া আদায় করছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, ইউরোপের দেশগুলোতে ৪০ ফুট কন্টেইনার রপ্তানির ভাড়া বর্তমানে ১৩ হাজার মার্কিন ডলার (১১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা)। ২০২০ সালে এ ভাড়া ছিল আড়াই হাজার মার্কিন ডলার (২ লাখ ২০ হাজার টাকা)। আমদানির ক্ষেত্রেও এ রুটে ভাড়া ব্যাপক বেড়েছে। বর্তমানে ইউরোপের দেশগুলো থেকে ৪০ ফুট কন্টেইনার আমদানিতে ভাড়া গুনতে হচ্ছে ৭ হাজার মার্কিন ডলার (৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা)। ২০২০ সালে এ ভাড়া ছিল দেড় হাজার মার্কিন ডলার (১ লাখ ৩২ হাজার টাকা)।

তবে এশিয়ার দেশগুলোতে পরিস্থিতি একটু ভিন্ন। বাংলাদেশ অধিকাংশ কাঁচামাল আমদানি করে চীন থেকে। সময় এবং চাহিদাভেদে এই রুটে আমদানি খরচ ওঠা-নামা করে। চীন থেকে বর্তমানে ৪০ ফুট কন্টেইনারের পরিবহন ব্যয় ৫ হাজার মার্কিন ডলার (৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা)। চাহিদা তুঙ্গে থাকলে এটির ভাড়া ৭ হাজার মার্কিন ডলারে (৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা) পৌঁছে। তবে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির ক্ষেত্রে এ রুটে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। চীন, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ায় পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ৪০ ফুট কন্টেইনারের পরিবহন ভাড়া মাত্র ৩০০ মার্কিন ডলার (২৬ হাজার ৪০০ টাকা)।

কন্টেইনার ভাড়া বেড়ে যাওয়ার কারণে উদ্যোক্তারা বিপদে পড়েছেন। তাদের উৎপাদিত পণ্যের খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন অনেকে। যদিও বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ ইকবাল আলী শিমুল ইত্তেফাককে জানিয়েছেন যে, রপ্তানি পণ্যের কন্টেইনারের মধ্যে ৯৫ ভাগের ভাড়া বহন করে ক্রেতারা। তবে এ মতের সঙ্গে একমত নন উদ্যোক্তারা। বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে প্রতি বছর ৫ হাজার কন্টেইনার পণ্য রপ্তানি করেন হান্নান গ্রুপের চেয়ারম্যান এ বি এম সামছুদ্দিন। তিনি জানান, কন্টেইনার ভাড়া বাড়লে সেখানে রপ্তানিকারকদের দায় নেই—এমন কথা ঠিক না। রপ্তানিকারকদের প্রচুর কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। কন্টেইনার ভাড়া বাড়ার কারণে প্রতি পাউন্ড কাঁচামালে ২০ সেন্ট করে অতিরিক্ত যুক্ত হয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক এই সহসভাপতি বলেন, ক্রেতারা পণ্যের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে ল্যান্ডিং খরচ (কারখানা থেকে নিজস্ব ওয়্যারহাউজ পর্যন্ত) যোগ করে। এই ল্যান্ডিং খরচের মধ্যে কন্টেইনারের ভাড়া যুক্ত করা হয়। কিন্তু ভাড়া বাড়লেও ক্রেতারা আমাদের পণ্যের দাম বাড়ায় না। এতে কারখানা মালিকদের ওপর চাপ বাড়ছে।

কন্টেইনারের ভাড়া বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতা ইকবাল আলী শিমুল জানান, এ সংকট সারা বিশ্বব্যাপী। করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ার পর পৃথিবীব্যাপী পণ্য পরিবহন বেড়ে গেছে। বিভিন্ন বড় বড় বন্দরে কন্টেইনার জট দেখা দেয়। এমনো দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরগুলোতে ভিড়তে একটি জাহাজকে ছয় থেকে সাত দিন অপেক্ষা করতে হয়। এতে করে কন্টেইনার জট লেগে যায়। এদিকে ‘রিভিউ অব মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট-২০২১’ অনুযায়ী কন্টেইনারের ভাড়া আগামী ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাড়তে থাকবে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ২০২৩ সালে আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১১ শতাংশ অর্থ গুনতে হবে। সুত্র: ইত্তেফাক।

দি ক্রাইম ডেস্ক: আমদানি এবং রপ্তানি পণ্যের কন্টেইনারের ভাড়া বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন উদ্যোক্তারা। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং এশিয়ার দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানি এবং আমদানির ক্ষেত্রে কন্টেইনার ভাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছয়-সাত গুণ বেড়েছে। আমদানিকৃত পণ্যের কন্টেইনারের ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্যোক্তাদের উৎপাদন খরচ ব্যাপক বেড়েছে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমদানিকৃত নিত্যপণ্যের দামও বেড়েছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, দেশীয় কলকারখানার উদ্যোক্তারা এখন নানামুখী চাপে আছে। এর সঙ্গে বাড়তি যোগ হয়েছে অতিরিক্ত কন্টেইনার ভাড়া।

বাংলাদেশে কাজ করে এমন শিপিং লাইনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস ভয়াবহ আকারে দেখা দিলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দেয়। ভাইরাসের প্রকোপ কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে পণ্য শিপমেন্টের চাপ পড়ায় কন্টেইনার ভাড়া বেড়েছে। জানা গেছে, ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দর পর্যন্ত একটি ৪০ ফুট কন্টেইনারের ভাড়া ছিল ২ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার (২ লাখ ১১ হাজার টাকা)। এখন একই কন্টেইনারের পরিবহন ভাড়া ১৬ হাজার মার্কিন ডলার (১৪ লাখ ৮ হাজার টাকা)। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির ক্ষেত্রে একটি ৪০ ফুট কন্টেইনারের ভাড়া ৬ হাজার মার্কিন ডলার (৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা)। কানাডা থেকে আমদানি এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে শিপিং লাইনগুলো একই ভাড়া আদায় করছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, ইউরোপের দেশগুলোতে ৪০ ফুট কন্টেইনার রপ্তানির ভাড়া বর্তমানে ১৩ হাজার মার্কিন ডলার (১১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা)। ২০২০ সালে এ ভাড়া ছিল আড়াই হাজার মার্কিন ডলার (২ লাখ ২০ হাজার টাকা)। আমদানির ক্ষেত্রেও এ রুটে ভাড়া ব্যাপক বেড়েছে। বর্তমানে ইউরোপের দেশগুলো থেকে ৪০ ফুট কন্টেইনার আমদানিতে ভাড়া গুনতে হচ্ছে ৭ হাজার মার্কিন ডলার (৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা)। ২০২০ সালে এ ভাড়া ছিল দেড় হাজার মার্কিন ডলার (১ লাখ ৩২ হাজার টাকা)।

তবে এশিয়ার দেশগুলোতে পরিস্থিতি একটু ভিন্ন। বাংলাদেশ অধিকাংশ কাঁচামাল আমদানি করে চীন থেকে। সময় এবং চাহিদাভেদে এই রুটে আমদানি খরচ ওঠা-নামা করে। চীন থেকে বর্তমানে ৪০ ফুট কন্টেইনারের পরিবহন ব্যয় ৫ হাজার মার্কিন ডলার (৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা)। চাহিদা তুঙ্গে থাকলে এটির ভাড়া ৭ হাজার মার্কিন ডলারে (৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা) পৌঁছে। তবে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির ক্ষেত্রে এ রুটে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। চীন, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ায় পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ৪০ ফুট কন্টেইনারের পরিবহন ভাড়া মাত্র ৩০০ মার্কিন ডলার (২৬ হাজার ৪০০ টাকা)।

কন্টেইনার ভাড়া বেড়ে যাওয়ার কারণে উদ্যোক্তারা বিপদে পড়েছেন। তাদের উৎপাদিত পণ্যের খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন অনেকে। যদিও বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ ইকবাল আলী শিমুল ইত্তেফাককে জানিয়েছেন যে, রপ্তানি পণ্যের কন্টেইনারের মধ্যে ৯৫ ভাগের ভাড়া বহন করে ক্রেতারা। তবে এ মতের সঙ্গে একমত নন উদ্যোক্তারা। বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে প্রতি বছর ৫ হাজার কন্টেইনার পণ্য রপ্তানি করেন হান্নান গ্রুপের চেয়ারম্যান এ বি এম সামছুদ্দিন। তিনি জানান, কন্টেইনার ভাড়া বাড়লে সেখানে রপ্তানিকারকদের দায় নেই—এমন কথা ঠিক না। রপ্তানিকারকদের প্রচুর কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। কন্টেইনার ভাড়া বাড়ার কারণে প্রতি পাউন্ড কাঁচামালে ২০ সেন্ট করে অতিরিক্ত যুক্ত হয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক এই সহসভাপতি বলেন, ক্রেতারা পণ্যের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে ল্যান্ডিং খরচ (কারখানা থেকে নিজস্ব ওয়্যারহাউজ পর্যন্ত) যোগ করে। এই ল্যান্ডিং খরচের মধ্যে কন্টেইনারের ভাড়া যুক্ত করা হয়। কিন্তু ভাড়া বাড়লেও ক্রেতারা আমাদের পণ্যের দাম বাড়ায় না। এতে কারখানা মালিকদের ওপর চাপ বাড়ছে।

কন্টেইনারের ভাড়া বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতা ইকবাল আলী শিমুল জানান, এ সংকট সারা বিশ্বব্যাপী। করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ার পর পৃথিবীব্যাপী পণ্য পরিবহন বেড়ে গেছে। বিভিন্ন বড় বড় বন্দরে কন্টেইনার জট দেখা দেয়। এমনো দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরগুলোতে ভিড়তে একটি জাহাজকে ছয় থেকে সাত দিন অপেক্ষা করতে হয়। এতে করে কন্টেইনার জট লেগে যায়। এদিকে ‘রিভিউ অব মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট-২০২১’ অনুযায়ী কন্টেইনারের ভাড়া আগামী ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাড়তে থাকবে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ২০২৩ সালে আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১১ শতাংশ অর্থ গুনতে হবে। সুত্র: ইত্তেফাক।