লিটন কুতুবী,কুতুবদিয়া: ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ শেখ হাসিনার উদ্যেগ, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা, বিদ্যুৎ ছাড়া কোন পরিবার থাকবে না। তারই ধারাবাহিতায় বিদ্যুৎ সংযোগ খুঁটি স্হাপন দেখে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা কুতুবদিয়া দ্বীপের প্রায় দুই লক্ষাধিক জনবসতি দীর্ঘ যুগ যুগ ধরে বিদ্যুৎ সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মনে খুশির আমেজ ফুটে উঠেছে । তারই প্রত্যাশা পূরণে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে জাতীয় গ্রীডের মাধ্যমে দ্বীপে বিদ্যুৎ সংযোগ স্হাপনের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে।
গত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে কুতুবদিয়া চ্যানেলের তলদেশের সাব- মেরিন সাইবার অপটিক ক্যাবলের মাধ্যমে কুতুবদিয়া দ্বীপকে বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা হয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বপ্রাপ্ত জালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে প্রাক্কলিত কাজ গত বছর ১৬ অক্টোবর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান সাবিনা বানু, কক্সবাজার জেলা আ’লীগের সভাপতি কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, স্থানীয় সংসদ সদস্য ( কুতুবদিয়া- মহেশখালী) আলহাজ আশেক উল্লাহ রফিকসহ একাধিক উর্ধ্বতন বিউবোর কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগের খুঁটি স্হাপন উদ্বোধন করেন।
তখনই সাংসদ বলেছিল, সারাদেশের ন্যায় কুতুবদিয়া দ্বীপে জাতীয় গ্রীডের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় আনতে প্রাক্কলিত জমি অধিগ্রহণ, সাব স্টেশন স্থাপন, ল্যান্ডিং স্টেশন,সাইবার অপটিকসহ সরঞ্জামাধী ক্রয় ও স্থাপনা ব্যয় ৮০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
বর্তমানে বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনের ৩০ ভাগ কাজ দৃশ্যমান সম্পন্ন হয়েছে বলে কুতুবদিয়া আবাসিক প্রকৌশলী (আর,ই) মোহাম্মদ আবুল হাসনাত নিশ্চিত করেন। জাতীয় গ্রীডের অধীনে বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন স্হাপন করা হচ্ছে ১৪৭ কিলোমিটার,তবে পূর্বে ১০ কিলোমিটারসহ মোট ১৫৭ কলোমিটার বিদ্যুৎ লাইনের খুঁটি স্থাপনের প্রাক্কলন হাতে নিয়েছে বিদ্যুৎ অফিস। চলমান কাজের অগ্রগতি ৪৭ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়।
এদিকে,কুতুবদিয়া দ্বীপে সর্ব প্রথম বিগত শতাব্দির ৮০ দশকের দিকে উপজেলা সদরে ১০ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন স্থাপন করে ডিজেল চালিত জেনারেটর মেশিন দিয়ে সন্ধ্যা ৬টা হতে রাত ১১ টা পর্যন্ত দৈনিক পাঁচ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করতো। যান্ত্রিকত্রুুটি থাকলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকতো। এমনও সময় গেছে দুই বছর বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ ছিল।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবদুল কাদের গনির সাথে কথা হলে তিনি জানান, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ গ্রীড উপ- কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ মগনামা হয়ে সাব মেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে ৩৩ কেবি ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কুতুবদিয়া উপকেন্দ্রে সংযোগ হবে। উক্ত কেন্দ্র হতে গ্রাহকের নিকট পৌছে যাবে। চলমান নির্মাণকাজ শেষ হলে উপজেলায় ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে বিদ্যুতের আলো।
কক্সবাজার জেলা আ’লীগের সভাপতি ও কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ মহতী উদ্যেগে কুতুবদিয়া দ্বীপে বিদ্যুতায়ন করা হচ্ছে।
জাতীয় গ্রীডের আওতায় দ্বীপে বিদ্যুৎ সংযোগ হলে গড়ে উঠবে লবণ পরিশোধন শিল্প, মৎস্য চিংড়ি ও শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, গভীর সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মাণ শিল্প, ডগ ইয়ার্ড, বরফ কলসহ আরও বিভিন্ন ধরণের ছোট মাজারী ধরণের শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও পর্যটন শিল্প বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে এমনটাই আশা করেন তিনি।
কুতুবদিয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল হাসনাত বলেন,আমরা প্রস্তুুত আছি,জমি অধিগ্রহণ ও ভূমি উন্নয়ন কাজের ফাইল কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ( ডিসি অফিসে) কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ বিলম্বের কারণে সাইবার অপটিক সাব মেরিন ক্যাবল স্হাপন সম্ভব হচ্ছে না। তবে বর্ষা মৌসুমের পূর্বে ল্যান্ডিং স্টেশন কাজ শুরু করলে কুতুবদিয়াবাসী তাড়াতাড়ি বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করতে পারবে।



