নগর প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি) চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের উদ্যোগে আজ শনিবার(১৬ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় বি.আই.পি’র সুবর্ণজয়ন্তী এবং বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস ২০২৪ উপলক্ষে জাতীয় সেমিনার নগরীর আইইবি সেমিনার রুমে অনুষ্ঠিত হয়। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল: “সমগ্র দেশের পরিকল্পনা করি, বৈষম্যহীন সুষম বাংলাদেশ গড়ি”।এতে সভাপতিত্ব করেন বি.আই.পি, চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স-এর সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান এবং সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহাম্মদ মেহেদী আহসান।
সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশের সুষম উন্নয়ন ও নগর পরিকল্পনার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু ঈসা আনসারী নগর পরিকল্পনায় জনগণের সম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, যে উন্নয়ন প্রকল্পে জনমত ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও সমাধানের কথা উল্লেখ করেন এবং মেয়রের সহযোগিতা চান। তিনি মাস্টারপ্ল্যানটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন নগর সরকারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, “চট্টগ্রাম বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে।” তিনি উল্লেখ করেন যে, অতীতে নগর পরিকল্পনায় পরিকল্পনাবিদদের যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ৪১টি ওয়ার্ডে অন্তত ১৬ জন পরিকল্পনাবিদের নিয়োগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, “সকল সংস্থা ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি পরিচ্ছন্ন, সবুজ এবং টেকসই নগরী গড়ে তুলতে পারি।”
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স-এর সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান অতীতের নগর উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সমালোচনা করেন এবং বলেন, “চট্টগ্রাম শহরে পরিকল্পনার চেয়ে অর্থের অপচয় বেশি হয়েছে। এর একটি উদাহরণ হলো কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প। তবে অন্তরবর্তীকালীন সরকার অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বন্ধ করে একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।”
সেমিনারে বক্তারা সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগরীকে টেকসই, বাসযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নগর পরিকল্পনাবিদদের ভূমিকা জোরদার করার আহ্বান জানান। এছাড়াও, সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন এবং উন্নয়ন প্রকল্পে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোকপাত করা হয়।
উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন চুয়েট নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান দেবাশীষ রায় রাজা, নগর বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, বিশেষজ্ঞ সুভাষ বড়ুয়া, চউকের উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আবু ঈসা আনসারী এবং চুয়েটের শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।




