ক্রাইম প্রতিবেদক: যশোরে চাঞ্চল্যকর রাজীব হত্যা মামলার দুই খুনীকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই পুলিশ। আজ বুধবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে বেজপাড়া পিয়ারী মোহন রোডস্থ জনৈক সদরুল বিডিআর এর ভাড়া বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আটককৃত খুনীরা হলেন- সাইফুল হক লিটন(৩৬) ও মোঃ হুমায়ুন কবির খান প্রকাশ বাবু(৩৫)।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ মে যশোর কোতয়ালী মডেল থানাধীন পুরাতন কসবা নিরিবিলি পাড়াস্থ জনৈক মোঃ বজলুর রহমান এর বাউন্ডারী দেয়া ঘেরা জায়গায় ভবন নির্মানের জন্য খোড়ার সময় পরিত্যাক্ত পুরাতন টয়লেটের রিং স্লাবের কুয়ার ভিতর একটি নীল রঙ্গের প্লাস্টিকের ড্রামের মধ্যে মানুষের হাড়গোড় ও মাথার খুলি পাওয়া যায়।
পিবিআইয়ের ছায়া তদন্তকালীন সময়ে মোঃ ফারুক হোসেন পিবিআই যশোর অফিসে এসে পুলিশ সুপারকে তার ছেলেকে সনাক্তকরণের জন্য অনুরোধ করে এবং এই সংক্রান্তে পিবিআই যশোর কার্যালয়ে একটি জিডি করা হয়। যার জিডি নং-১৪৬। এই জিডির সূত্র ধরে এসআই মোঃ জিয়াউর রহমান মোঃ ফারুক হোসেন এবং তার স্ত্রী মাবিয়া বেগমকে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ গ্রহণ করে কঙ্কালের সাথে তাদের পরিচয় সনাক্তের নিমিত্তে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক বিভাগে প্রেরণ করা হয়।
ডিএনএ পরীক্ষায় ড্রামের মধ্যে পাওয়া মানবদেহের কঙ্কালের সাথে মোঃ ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী মাবিয়ার ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। অর্থাৎ ড্রামের ভিতরে পাওয়া কঙ্কাল বাদীর ছেলের তা ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়। ড্রামের মধ্যে পাওয়া কঙ্কালের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর এটি হত্যাকান্ড বলে প্রতীয়মান হয়। তখন পিবিআই ভিকটিম রাজীবের পিতা মোঃ ফারুক হোসেনকে সংবাদ দিলে তিনি যশোরে এসে যশোর কোতয়ালী থানায় তার ছেলের হত্যাকান্ড সংক্রান্তে অভিযোগ দায়ের করলে কোতয়ালী মডেল থানার মামলা নং-৩৪, তারিখ-১৭/০১/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
এসআই মোঃ জিয়াউর রহমান বলেন, মামলাটি পিবিআই স্ব-উদ্দ্যোগে গ্রহণ করে মামলার তদন্তভার আমাকে দেয়া হয়। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার এর সঠিক দিক নির্দেশনায় পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন এর নেতৃত্তে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শামীম মুসা, সঙ্গীয় এসআই স্নেহাশিস দাশ, এসআই মোঃ জিয়াউর রহমান, এসআই ডিএম নূর জামালসহ গত ১৭ জানুয়ারি ঘটনার সাথে জড়িত আসামী মোঃ সালাম(৫৫) এবং গত ১৯ জানুয়ারি আসামী জয়নাল হাওলাদার (৩০) ও মোঃ ইব্রাহিম মোল্লা (৩৪) দেরকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করি।
মামলাটি তদন্তকালে এজাহারনামীয় আসামী অন্য একটি মামলায় জেল হাজতে থাকা শেখ সজিবুর রহমান(৩৪), পিতা-শেখ আজিজুল হক, স্থায়ী গ্রাম-পুরাতন কসবা আবু তালেব সড়ক, থানা-কোতয়ালী জেলা-যশোরকে অত্র মামলায় শোন এ্যারেস্ট দেখিয়ে দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে এনে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
আসামী সজিবুর রহমান জানায়, নিহত রাজীব তার অনুগত ছিল। একপর্যায়ে নিহত রাজীব সজীবুর রহমানের বিশ্বাস ভঙ্গের কয়েকটি কাজ করে, ফলে তাদের মধ্যে মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়। নিহত রাজীব আসামী সজিবুর রহমানের অবাধ্য হওয়ায় সে তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে রাজীবকে হত্যা করে মৃতদেহ ড্রামে ভরে গুম করে।
পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ জিয়াউর রহমান সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সসহ পুলিশি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে গত ২৪ জানুয়ারি রাতে আসামি সাইফুল হক লিটন(৩৬), পিতা-মৃত মনিরুল হক, সাং-বেজপাড়া পিয়ারী মোহন রোড, থানা-কোতয়ালী জেলা-যশোরকে বেজপাড়া পিয়ারী মোহন রোডস্থ জনৈক সদরুল বিডিআর এর ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করেন এবং পিবিআই যশোর কার্যালয়ের অপর একটি অভিযানিক টিম আজ বুধবার ২৫ জানুয়ারি রাতে আসামি মোঃ হুমায়ুন কবির খান প্রকাশ বাবু(৩৫)কে ঢাকা মহানগর হতে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা উক্ত হত্যাকান্ডের সহিত জড়িত মর্মে স্বীকার করে। আসামী সাইফুল হক লিটন(৩৬) ও মোঃ হুমায়ুন কবির খান প্রকাশ বাবু(৩৫)কে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
Post Views: 299




