মোঃ মশিউর রহমান, রংপুর: রংপুর গঙ্গাচড়া উপজেলার লাঙ্গলের হাট ভাঙনির পারে এই ঘটনা টি ঘটে, এদিকে এই জমির উপরে মামলা হয় ২০০৩ সালে।দীর্ঘ ১৬ বছর মামলা চলার পর রংপুর জজকোর্টের রায় পায় মোঃ মোকছেদুল হক(৬৫) পিতা মৃত মোজাম্মেল হক। সেই রায়ে গ্রামবাংলার পুরাতন ঐতিহ্য ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ-প্রশাসনসহ দুই একর চুয়াল্লিশ শতাংশ জমি দখল ও সীমানা নির্ধারন করে দেওয়া হয়। তখন থেকেই মোকছেদুল ও তার অংশিদারসহ চাষাবাদ করে আসলেও তা সহজলভ্য ভাবে নয়।
বিগত দিন থেকেই একের পর এক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে প্রতিপক্ষ মোয়াজ্জেমরা, এমনকি বিভিন্ন সময় ভাড়াটিয়া গুন্ডা-পান্ডা নিয়ে হামলা করেও সুবিধা তৈরী করতে পারেনি প্রতিপক্ষ মোয়াজ্জেম, ঠিক তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ জানুয়ারী আনুমানিক সকাল ৯ টার দিকে মোয়াজ্জেম এর দল তাদের ভাড়াটিয়া গুন্ডাপান্ডা দা, ছুরি, কুড়াল নিয়ে মোকছেদুলের আবাদি জমিতে নেমে সকল ফসল নষ্ট করে জমি চাষের প্রস্তুতি ও নেয়।
এমতবস্তায় মোকছেদুল ও তার অংশিদারেরা বাঁধা দিতে গেলে তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে, ভয়ে তারা ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি অবগত করে, প্রশাসন আসতে দেরি হওয়ায় প্রায় সাড়ে চার দোন জমির আলুর ফসল সম্পূর্ণটাই নষ্ট করে ফেলে, এবং ২৪ শতাংশ জমিতে চাষ করা গমের ফসল ও নষ্ট করে ফেলেন তারা। পরে তাৎক্ষনিক মোকছেদুল হক বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে, প্রশাসন ঘটনাস্থলে আসে ১২:৩০ মিনিটে, এসে তাদেরকে জমি থেকে তুলে দিয়ে চলে যায়, যাওয়ার পরপরেই প্রতিপক্ষ আবারও জমিতে নেমে পরে, তারপর এলাকাবাসী ও ইউপি সদস্য বিষয়টি আবারও থানায় অবগত করলে তারা জমি থেকে উঠে যায়। পরে মোকছেদুল হক বাদী হয়ে রংপুরের পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গঙ্গাচড়া উপজেলার লাঙ্গলের হাট,ঘাঘটটারী, ভাঙনীরপার (বড়বিল) গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন, হারুন মিয়া, মাজু মিয়া, সাজু মিয়া, স্বপন মিয়া, আমিন মিয়া, নুর মোহাম্মদ ও রহমত আলীসহ আরো কয়েকজন গায়ের জোরে দীর্ঘদিন ধরে মোকছেদুল হকের পৈতৃক জমি ভোগদখল করার পায়তারা চালিয়ে আসছিলো। এলাকায় নানা বিচার বসলেও সমাধান না পেয়ে আভিযোগকারী তাদের বিরুদ্ধে গত ২০০৩ সালের আগস্টের ১০ তারিখে সহকারী জজ আদালত, গংগাচড়া রংপুরে একটি মামলা দায়ের করেন। যার বাটোয়ারা মোকদ্দমা নং- ২০/০৩। সমস্ত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে মহামান্য আদালত বাদীর পক্ষে রায় প্রদান করেন।
বিবাদীগণ উক্ত রায়ের বিপরীতে আপীল করেন। মহামান্য আদালত আপীল না মঞ্জুর করে এবং বাদীর পক্ষে রায় বহাল রাখেন। পরবর্তীতে মামলার বাদী পুনরায় জমির দখল উদ্ধারকল্পে পুনরায় একই আদালতে মামলা দায়ের করলে গত ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল অনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে বাদীকে জমি বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশনা দেন। এরপর হতে নানা বাধা-বিপত্তির পেরিয়েও পৈতৃক জমি আগলে রাখেন মোকছেদুল হক। এরপর জমিতে নানা ফসলের চাষ করছেন তিনি। কিন্তু গত (১৯ জানুয়ারি) সকালে উল্লেখিত বিবাদীরাসহ আরো কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র হাতে জমি পুনরায় দখলের উদ্দেশ্যে আলুক্ষেত নষ্ট করে দেন। সেইসাথে তার পরিবারের সদস্যদের মারামারি করেন। পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলা, মিথ্যা মামলা করাসহ নানা হুমকি দিতে থাকেন প্রকাশ্যেই। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা যায়।
এবিষয়ে জনপ্রতিনিধি ইউপি সদস্য সবুজের সঙ্গে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি দু’পক্ষেরই কাগজপত্র দেখেছি। মোকছেদুল হকের কাগজপত্র ঠিক রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে জমির প্রতিপক্ষ মোয়াজ্জেম অন্যায়ভাবে জমি দখল করতে বিশৃঙ্খলা করছে। আদালতের নির্দেশ অমান্যকারীদের কঠোর শাস্তির দাবী করেন তিনি।
অভিযুক্ত মোয়াজ্জেম এর অনুপস্থিতিতে তার বড়ভাই মশিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জায়গার মালিক বলে দাবি করেন। তার কাছে কাগজপত্র আছে দাবি করে তিনি বলেন, আমি জায়গা দখল করিছি পূর্বের মালিক বলে, কিন্তু কোর্ট বা আদালত আমাদের জমি দখল বা ভোগ করার আদেশ দেয়নি
এবিষয়ে গংগাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, ঘটনা আমরা অবগত রয়েছি ও অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু একটু সময় বিলম্ব হলেও আমাদের টিম ঘটনাস্থলে যান এবং উভয়পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Post Views: 223



