দি ক্রাইম ডেস্ক:  সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত ১০৯৮, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ পরিচালিত জরুরিসেবা সহায়তা ৯৯৯ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালিত ১০৯-এর তথ্য মতে, গত বছর উল্লেখযোগ্য হারে শিশু হারিয়ে যাওয়া বিষয়ে ফোন কল আসে। দিন দিন বাড়ছে কলের সংখ্যা। হারিয়ে যাওয়া শিশুদের মধ্যে মেয়ের সংখ্যা বেশি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলেন, মেয়েশিশুদের মধ্যে অনেক শিশুই যৌনপল্লিতে বিক্রি হয়, দেশের বাইরে পাচার হয়, এমনকি নিজেরা প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে পর্যন্ত করে। আর বিজ্ঞজন মনে করেন, হারিয়ে যাওয়া শিশুর সংখ্যা অনেক বেশি, তাই সরকারের শিশু পুনর্বাসন ও আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ও মান বাড়িয়ে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে।

১০৯৮-এর তথ্যমতে , ২০২৪ সালে মোট ৪ হাজার ১৩৭টি শিশু হারানো বিষয় কল আসে। ২০২৩ সালে ২ হাজার ৭০টি,২০২২ সালে ১৬৫৫টি, ২০২১ সালে ১ হাজার ৫০৪ ও ২০২০ সালে ১ হাজার ২৭৪টি ফোন কল আসে। ১০৯৮ হেল্প লাইনের ব্যবস্থাপক চৌধুরী মো. মোহায়মেন গণমাধ্যমকে বলেন, শিশু হারানোর ফোন কলের সঙ্গে শিশু অপহরণ ও পাচার হওয়া শিশুদের তথ্য আছে। ৯৯৯-এর তথ্যমতে, গত বছর ৫ হাজার ৫১১টি হারিয়ে যাওয়া বিষয় ফোন কল আসে।

ঢাকা তেজগাঁও থানার তদন্ত ইন্সপেক্টর মো. নাজমুল জান্নাত শাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ছেলেশিশুদের ক্ষেত্রে বাড়ি থেকে রাগ করে চলে যাওয়া, মাদ্রসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং পরিবারের শাস্তি দেওয়া, বাবা-মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে, ঝগড়া, অভাব—এমন কারণে হারিয়ে যাওয়ার জিডিগুলো হয়। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে পাচার হওয়া, গৃহশ্রমিক নির্যাতন, অপহরণ ও প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এমন ঘটনাকে অপহরণ বলে অভিযোগ করে পরিবার—এমন মন্তব্য করেন চৌধুরী মো. মোহায়মেন। তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে ৫ হাজার ৮৫০টি অপহরণ বিষয় ফোন কল আসে। এদের বেশির ভাগই প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালিত ১০৯-এর ইনচার্জ রাইসুল ইসলাম বলেন, সাধারণত ঢাকা শহরে অপহরণের অভিযোগে ফোনকল বেশি আসে। ৯৯৯-এর জরুরি সহায়তার পুলিশ পরিদর্শক মিডিয়া অ্যান্ড কোয়ার্ডিনেশন আনোয়ার সাত্তার বলেন, লঞ্চঘাট, রেললাইন থেকে শিশু হারিয়ে যাওয়ার বিষয় তারা ফোন কল পান। বিশেষ করে ঈদের সময় অভিভাবকের অসচেতনতায় হারায় শিশুরা। এখন অনেক মাদ্রাসার শাস্তির ভয়েও পালায় শিশুরা।

সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র গাবতলী হাবে ৩৫ জন শিশুর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা থকলেও প্রতিদিন এখানে আসা-যাওয়ার মাধ্যমে ৪৪-৪৫ জন শিশুসেবা গ্রহণ করে। এখানে একটি মেয়ে আসে যার মা-বাবা তাকে ত্যাগ করেছে। এক আত্মীয় তাকে দিয়ে ভিক্ষা করায়। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুইটি পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে ১৪৯ জন পথশিশু বাস করে।

কাওরান বাজার কেন্দ্রের ইনচার্জ আফরোজা আক্তার বলেন, ‘এই কেন্দ্রের ছেলেশিশুরা নেশাগ্রস্ত থাকে। অনেক সময় অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তাদের আমরা পরিবারে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করি। কিন্তু দারিদ্র্য, বাবা-মায়ের দ্বিতীয় বিয়ের কারণে অনেককেই বাবা-মা ফিরিয়ে নিতে চায় না।’

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্সের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক বলেন, ‘শিশুর প্রধান দায়িত্ব সরকারের। হারিয়ে যাওয়া শিশুর সংখ্যা এই হেল্প লাইনগুলোর দেওয়া তথ্যের চেয়ে অনেক বেশি। সরকারকে এই শিশু পুনর্বাসন ও আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা যেমন বাড়াতে হবে, তেমনি এগুলোর সেবার মানও বাড়াতে হবে।’

দি ক্রাইম ডেস্ক:  সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত ১০৯৮, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ পরিচালিত জরুরিসেবা সহায়তা ৯৯৯ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালিত ১০৯-এর তথ্য মতে, গত বছর উল্লেখযোগ্য হারে শিশু হারিয়ে যাওয়া বিষয়ে ফোন কল আসে। দিন দিন বাড়ছে কলের সংখ্যা। হারিয়ে যাওয়া শিশুদের মধ্যে মেয়ের সংখ্যা বেশি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলেন, মেয়েশিশুদের মধ্যে অনেক শিশুই যৌনপল্লিতে বিক্রি হয়, দেশের বাইরে পাচার হয়, এমনকি নিজেরা প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে পর্যন্ত করে। আর বিজ্ঞজন মনে করেন, হারিয়ে যাওয়া শিশুর সংখ্যা অনেক বেশি, তাই সরকারের শিশু পুনর্বাসন ও আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ও মান বাড়িয়ে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে।

১০৯৮-এর তথ্যমতে , ২০২৪ সালে মোট ৪ হাজার ১৩৭টি শিশু হারানো বিষয় কল আসে। ২০২৩ সালে ২ হাজার ৭০টি,২০২২ সালে ১৬৫৫টি, ২০২১ সালে ১ হাজার ৫০৪ ও ২০২০ সালে ১ হাজার ২৭৪টি ফোন কল আসে। ১০৯৮ হেল্প লাইনের ব্যবস্থাপক চৌধুরী মো. মোহায়মেন গণমাধ্যমকে বলেন, শিশু হারানোর ফোন কলের সঙ্গে শিশু অপহরণ ও পাচার হওয়া শিশুদের তথ্য আছে। ৯৯৯-এর তথ্যমতে, গত বছর ৫ হাজার ৫১১টি হারিয়ে যাওয়া বিষয় ফোন কল আসে।

ঢাকা তেজগাঁও থানার তদন্ত ইন্সপেক্টর মো. নাজমুল জান্নাত শাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ছেলেশিশুদের ক্ষেত্রে বাড়ি থেকে রাগ করে চলে যাওয়া, মাদ্রসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং পরিবারের শাস্তি দেওয়া, বাবা-মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে, ঝগড়া, অভাব—এমন কারণে হারিয়ে যাওয়ার জিডিগুলো হয়। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে পাচার হওয়া, গৃহশ্রমিক নির্যাতন, অপহরণ ও প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এমন ঘটনাকে অপহরণ বলে অভিযোগ করে পরিবার—এমন মন্তব্য করেন চৌধুরী মো. মোহায়মেন। তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে ৫ হাজার ৮৫০টি অপহরণ বিষয় ফোন কল আসে। এদের বেশির ভাগই প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালিত ১০৯-এর ইনচার্জ রাইসুল ইসলাম বলেন, সাধারণত ঢাকা শহরে অপহরণের অভিযোগে ফোনকল বেশি আসে। ৯৯৯-এর জরুরি সহায়তার পুলিশ পরিদর্শক মিডিয়া অ্যান্ড কোয়ার্ডিনেশন আনোয়ার সাত্তার বলেন, লঞ্চঘাট, রেললাইন থেকে শিশু হারিয়ে যাওয়ার বিষয় তারা ফোন কল পান। বিশেষ করে ঈদের সময় অভিভাবকের অসচেতনতায় হারায় শিশুরা। এখন অনেক মাদ্রাসার শাস্তির ভয়েও পালায় শিশুরা।

সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র গাবতলী হাবে ৩৫ জন শিশুর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা থকলেও প্রতিদিন এখানে আসা-যাওয়ার মাধ্যমে ৪৪-৪৫ জন শিশুসেবা গ্রহণ করে। এখানে একটি মেয়ে আসে যার মা-বাবা তাকে ত্যাগ করেছে। এক আত্মীয় তাকে দিয়ে ভিক্ষা করায়। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুইটি পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে ১৪৯ জন পথশিশু বাস করে।

কাওরান বাজার কেন্দ্রের ইনচার্জ আফরোজা আক্তার বলেন, ‘এই কেন্দ্রের ছেলেশিশুরা নেশাগ্রস্ত থাকে। অনেক সময় অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তাদের আমরা পরিবারে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করি। কিন্তু দারিদ্র্য, বাবা-মায়ের দ্বিতীয় বিয়ের কারণে অনেককেই বাবা-মা ফিরিয়ে নিতে চায় না।’

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্সের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক বলেন, ‘শিশুর প্রধান দায়িত্ব সরকারের। হারিয়ে যাওয়া শিশুর সংখ্যা এই হেল্প লাইনগুলোর দেওয়া তথ্যের চেয়ে অনেক বেশি। সরকারকে এই শিশু পুনর্বাসন ও আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা যেমন বাড়াতে হবে, তেমনি এগুলোর সেবার মানও বাড়াতে হবে।’